চলতি মৌসুমে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় আমন ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটছে। তবে ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে কাজ করছে শঙ্কা।
এনিয়ে কৃষকরা বলেন, এক কানি জমি চাষাবাদের জন্য খরচ হয় আট হাজার টাকা। বীজ রোপণের জন্য ব্যয় হয় আট থেকে নয় হাজার টাকা। ধান কাটা ও মাড়াই করে ঘরে তুলতে আরো ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা । বর্তমানে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৯ শত থেকে এক হাজার টাকা দরে। ফলে কৃষকের বিনিয়োগ করা অর্থ ধানবেচা টাকায় উঠে আসবে কিনা, এ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে,উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ফসলের মাঠে ধান কাটার ধুম পড়েছে। দিগন্তজোড়া মাঠে সোনালী ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, উপজেলায় ২৮ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৪৫ শতাংশ ক্ষেতের ধান কেটেছে কৃষক। এখনও ৫৫ শতাংশ ক্ষেতে ফসল রয়েছে।
বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নে কৃষক মো. গোলাম মোস্তফা বলেন,নিয়মিত পরিচর্যা ও সময় মতো সার ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে আমনের ফলন ভাল হয়েছে। তবে ধানকাটায় ব্যয় বেড়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ছোটবাইদিয়া ইউনিয়নের আমন চাষী মো. বজলু প্যাদা বলেন, এবার ধান ভাল হয়েছে। তবে শ্রমিক সঙ্কট থাকায় জমি থেকে ধান কাটতে সময় বেশি লাগছে।
মৌডুবী ইউনিয়নের আমন চাষী মো. আনছার মাঝি বলেন, ধান চাষ করে এখন লাভ হচ্ছে না। বাম্পার ফলনের পরও এরকম টানাটানির মধ্যে থাকতে হচ্ছে। ধার দেনা বা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ধান উৎপাদন করি, তা দিয়ে ঋণের টাকাও শোধ করতে পারছি না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, এ বছর আমনের ফলন ভাল হয়ে। তবে শ্রমিক সঙ্কটের খবর পাওয়া যাচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যে উপজেলার ৪টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়েছি।
এর আগেও ৪টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়েছি, যাতে করে কৃষকরা তাদের ফসল অল্প সময়ে কম খরচে কাটতে পারে। আমরা প্রতি বছর সরকারিভাবে ধান ক্রয় করি। এ বছরও করব। কৃষকরা এখানে ধান বিক্রি করলে তারা লাভবান হবে।