এমপিওর দাবিতে আজ রোববার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল নয়টায় থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। এর আগে ২৬ ডিসেম্বর থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন মানুষ গড়ার এ কারিগররা। দাবি না মানায় অনশন শুরু করবেন তারা। শনিবার গভীর রাতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দেখা যায় অনশনের প্রস্ততি নিতে। অনশন লেখা টি-শার্ট তৈরি করেছেন শিক্ষকরা। সেগুলো গায়ে জড়াবেন সকাল নয়টায়। দুই শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী শীত উপেক্ষা করে ফুটপাথে শুয়ে রয়েছেন। তাদের মনে দৃঢ়তা, এমপিও ছাড়া ঘরে ফিরবেন না।
দৈনিকশিক্ষার এক প্রশ্নের জবাবে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ বিনয়ভূষণ রায় বলেন, আজকে আমরা অর্ধমৃত । আজকে আমাদের কোনো সম্মান নেই। স্ত্রীর কাছে সম্মান নেই। শশুরবড়ির কাছেও সম্মান নেই। তাই দাবি আদায়ে আমাদের অনশন করা ছাড়া আর কোনে পথ নেই। আমাদের বাঁচা মরা সমান। অনশন চালিয়ে যাচ্ছি। চলতেই থাকবে। এমপিও ছাড়া বাড়ী ফিরবো না।
তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রী শনিবার দুপুরে আন্দোলন ছেড়ে শিক্ষকদের বাড়ী ফিরে যেতে বলেছেন। মন্ত্রীর এমন বক্তব্য প্রত্যাখান করে তিনি বলেন, এমনটা মন্ত্রী বলতে পারেন না। মন্ত্রীর এমন বক্তব্য অমানবিক। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন জমা দিয়েছি। আশাকরি আবেদনটা তাঁর হাতে পৌঁছালেই কিছু একটা হবে।
বিনয় ভুষন বলেন, পহেলা জানুয়ারির বই উৎসবেও অংশ নেবেন না শিক্ষকরা। জেএসসির ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানও বয়কট করেছি।
ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহামুদুন্নবী ডলার বলেন, এমপিওভুক্তির দাবি আদায়ের জন্য পাঁচদিন ধরে আন্দোলন করছি। আজ থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি। নতুন শিক্ষাবর্ষের বই উৎসবে আমরা অংশ নেবো না। তবে শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করা হবে বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) থেকে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ডাক সারা দেশ থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা এসে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
এদিকে শনিবার রাতেও প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে দাবি-দাওয়া বাস্তবায়নে বিক্ষোভ-স্লোগান দিতে দেখা যায় নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের।
ঝালকাঠীর নলছিটি উপজেলার মাওলানা গোলাম মোস্তফা মহিলা কলেজের প্রভাষক সরদার শাহ আলম বলেন, আমরা নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত ও শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাস্তবায়নের জন্য নীতিমালা তৈরির অনুরোধ করেছি। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১০ বছরেও তা করেনি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা অনশনে যাচ্ছি। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঢাকা ছাড়বো না।
এদিকে রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শিক্ষকদের আমরণ অনশন কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ সামিনা লুৎফা, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিমুদ্দিন খান, শিক্ষা ও শিশু রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক রাখাল রাহা এবং জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এস.এম.এইচ সাইফুল ইসলাম (শাহাদত)।