আর অটোপাস নয়, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই হবে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা - দৈনিকশিক্ষা

আর অটোপাস নয়, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই হবে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

করোনা মহামারির কারণে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। আগের দুই পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হয়েছে। যদিও পাবলিক পরীক্ষায় ‘আটোপাসের’ পথে আর হাটছে না সরকার। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি ও সমমান, জেএসসি-জেডিসি ও প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার্থীদের ‘মূল্যায়নের মাধ্যমে’ ‘অটোপাস’ পাস দেয়া হলেও তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা অটোপাসের দাবি জানাচ্ছেন। তবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের আর অটোপাস দেয়া হবে না। এর বদলে প্রকাশ করা হয়েছে খুবই সংক্ষিপ্ত সিলেবাস। অটোপাসের বিকল্প এ সহজ সিলেবাসে প্রায় সবাই পাস করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

আগামী জুনে এসএসসি ও জুলাই-আগস্টে এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। ফলে মার্চ মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার হিসাব ধরে এসএসসিতে ৬০ কর্মদিবস এবং এইচএসসিতে সর্বোচ্চ ৮০ কর্মদিবস ক্লাস করানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। এসএসসি ও এইচএসসির সিলেবাস আরও সংক্ষিপ্ত করে গত ৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়।

জানা গেছে, এসএসসি ও এইচএসসির প্রতিটি বিষয়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ অধ্যায় নির্বাচন করে সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে। এবার সিলেবাস এমনভাবে সাজানো হয়েছে যে একজন শিক্ষার্থী ন্যূনতম পড়ালেখা করলেই তার পক্ষে পাস করা সম্ভব।

এসএসসি পরীক্ষায় বাংলা প্রথম পত্রে মোট সাতটি প্রশ্নের উত্তর করতে হয়। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে মোট ৯টি পদ্য, উপন্যাস ও নাটক দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় পত্রে দেয়া হয়েছে ছয়টি অধ্যায়। ইংরেজি প্রথম পত্রে আটটি অধ্যায় ও দ্বিতীয় পত্রের সিলেবাসও খুবই সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। ইংরেজি বিষয়ে প্রশ্নের কাঠামোতে কিছু পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে ইংরেজির গ্রামার অংশের ন্যারেশন, বাক্য গঠনসহ বেশ কিছু অংশ বাদ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ইংরেজিতে রচনাও লিখতে হবে না। ছোট হওয়া সিলেবাসে সব বিষয়েই প্রশ্নের বিভাজন ও নম্বর কাঠামো ঠিক থাকবে। যে সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে, সেখান থেকেই প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হবে।

এসএসসির অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে হিসাববিজ্ঞান, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং এবং ব্যবসায় উদ্যোগে ছয়টি করে অধ্যায়; পদার্থবিজ্ঞানে পাঁচটি; জীববিজ্ঞান ও রসায়নে চারটি করে অধ্যায়; পৌরনীতিতে পাঁচটি; ইতিহাসে সাতটি; ভূগোলে ছয়টি; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে তিনটি; কৃষিশিক্ষায় তিনটি; উচ্চতর গণিতে চারটি; ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষায় পাঁচটি; গণিতে পাঁচটি এবং বিজ্ঞানে ছয়টি অধ্যায় রাখা হয়েছে। এইচএসসি ও সমমানের সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেও প্রায় একই রকম অধ্যায় রাখা হয়েছে।  

এনসিটিবির এক সদস্য দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এসএসসি ও এইচএসসির অত্যাবশ্যকীয় শিখন ফল যেগুলো দরকার, সেগুলো রাখা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের পাস করা সহজ হলেও কিছু ক্ষতি তো হবেই। পরবর্তী ক্লাসে এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। তবে যারা এসএসসি পরীক্ষা দেবে, তারা কিন্তু নবম শ্রেণির পুরোটাই পড়েছে। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত হলেও বড় সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিটিবির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেছেন, নামকাওয়াস্তে সিলেবাসটি প্রণয়ন করা হয়েছে। কারণ পরীক্ষাদুটোতে কোনো অটোপাস দেয়া হবে না। ছেলেমেয়েদেরকে পরীক্ষায় বসতেই হবে। পরীক্ষাও হবে নামকাওয়াস্তে। এজন্য প্রতিটি বিষয়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ অধ্যায় নির্বাচন করে সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে।   

সিলেবাস নিয়ে এনসিটির অপর একজন সদস্য দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, যেটুকু না পড়লে না হয় শুধু সেটুকু অধ্যায় দিয়েই নতুন করে বিষয়ভিত্তিক সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে। ছোট হওয়া সিলেবাসে সব বিষয়েই প্রশ্নের বিভাজন ও নম্বর কাঠামো ঠিকই থাকবে। অর্থাৎ যে সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে সেখান থেকেই প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হবে। তবে ইংরেজি বিষয়ে প্রশ্নের কাঠামোতে কিছু পরিবর্তন হয়েছে। এরমধ্যে ইংরেজির গ্রামার অংশের ন্যারেশন, বাক্যগঠনসহ বেশ কিছু অংশ বাদ। পাশাপাশি ইংরেজিতে রচনাও লিখতে হবে না। 

এদিকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, এ বছর এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত  সিলেবাসে অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার্থীদের জন্য তিন থেকে  চার মাসে প্রস্তুতি নেয়া যাবে এমন একটি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে। যার ভিত্তিতে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে শিক্ষার্থীরা তিন-চারমাস পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ পাবেন। 

মন্ত্রী আরও বলেন, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেয়ার জন্য সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল। কিন্তু সে সময় সংক্রমণের হার বেশি থাকায় সরকার তাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অটোপাসেরর চিন্তা করেছে। কিন্তু ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী তাদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। তারা তেমন প্রস্তুতি নিতে পারেনি। সুতরাং তাদের অটোপাস দেয়া সম্ভব নয়।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব (লিংক যাবে) করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040440559387207