বহুল আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারায় দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, পি কে হালদার ও তার সহযোগীরা মোটা অংকের টাকা নিয়ে পালিয়েছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বা দুদক কিছুই করতে পারলো না। বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত বিভাগের দায়িত্বশীল নির্বাহী পরিচালক ও উপপরিচালকরা পিপলস লিজিংসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে মধু খেয়েছে। পিপলস লিজিং-এ এতো কিছু ঘটে গেলো, অথচ তারা কিছুই করেনি। এসময় আদালত বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমকে চোর ও ডাকাত বলে সম্মোধন করেন। দুদক প্রসঙ্গে আদালত বলেন, পি কে হালদারের বিষয়ে আমরা আদেশ দিলাম সেই কবে। আর জানুয়ারিতে এসে দুদক বললো, পি কে হালদার পালিয়ে গেছে।
এদিকে নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসেস (পিএলএফএস) লিমিটেড যাতে চালু থাকে সেজন্য কি পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সে বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভণর ও সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যানের বক্তব্য শুনবেন হাইকোর্ট। আগামী বৃহষ্পতিবার ভার্চূয়ালি যুক্ত হয়ে তাদের বক্তব্য শুনবেন আদালত।
পিএলএফএস লিমিটেড অবসায়ন সংক্রান্ত মামলায় শুনানিকালে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্টের কম্পানি বেঞ্চ মঙ্গলবার এ মন্তব্য করেন। পিপলস লিজিং থেকে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে ঋণখেলাপিদের বক্তব্য শোনার সময় এ মন্তব্য করেন আদালত। এসময় আদালত বাংলাদেশ ব্যাংক, ঋণগ্রহীতা ও তাদের আইনজীবীদের বক্তব্য শোনেন। আদালতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ব্যারিস্টার তানজিব উল আলম, ঋণগ্রহীতাদের পক্ষে অ্যাডভোকেট গাজী মোস্তাক আহমেদ, পিপলস লিজিং এর সাময়িক অবসায়কের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার মেজবাহুর রহমান।
হাইকোর্ট গত ২১ জানুয়ারি এক আদেশে পিপলস লিজিং থেকে ৫ লাখ টাকার ওপরে ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে যারা খেলাপী হয়েছেন এমন ২৮০ জনকে তলব করেন হাইকোর্ট। এদের মধ্যে ১৪৩ জনকে মঙ্গলবার হাজির হতে বলা হয়। এই আদেশে নির্ধারিত দিনে ৫১ জন হাজির হন। আর ৩২ জন সময় চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। ১৪৩ জনের মধ্যে বাকী যারা হাজির হননি তাদের দুই সপ্তাহের আদালতে সশরীরে হাজির হতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে বলে আদালত বলেছেন। এছাড়া ১৩৭ জনের হাজিরের জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য রয়েছে।
পিপলস লিজিং এর সাময়িক অবসায়ক (প্রবেশনাল লিক্যুডেটর) মো. আসাদুজ্জামান খানের করা এক আবেদনে পিপলস লিজিং-এর প্রায় ৫শ জনের বেশি ঋণগ্রহীতার একটি তালিকা দাখিল করা হয়। এই তালিকা দাখিলের পর ৫ লাখ টাকা এবং তার ওপরে নেওয়া ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে যারা খেলাপী হয়েছে এমন ২৮০ জনকে শোকজ করেন ও তাদের হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন।