নওগাঁর মান্দায় বুড়িদহ উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়া পদে নিয়োগের প্রলোভনে নয় লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক তৃপ্তি মণ্ডল ও স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সুজয় প্রামাণিকের বিরুদ্ধে। তবে ঘুষ নেওয়ার পরেও এ পদে প্রার্থীকে নিয়োগ দেননি তারা।
মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেছেন ঘুষ দিয়ে স্কুলের আয়া হতে চাওয়া প্রার্থীরা পরিবার। তবে, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক তৃপ্তি মণ্ডল ও সভাপতি সুজয় প্রামাণিক।
মঙ্গলবার দুপুরে মান্দা উপজেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের শামুকখোল (বুড়িদহ) গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে ফারুক হোসেন এসব অভিযোগ তুলেছেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন থেকে লিভার রোগে আক্রান্ত। বেশি কিছুদিন আগে বুড়িদহ উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। তখন গভর্নিং বডির সভাপতি সুজয় প্রামাণিক ম্যাসেঞ্জারে আমাকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি পাঠায় এবং পরবর্তীতে দেখা হলে আমার স্ত্রীকে চাকরির দেবে বলে প্রলোভন দেখায়। এরপর আমাকে প্রধান শিক্ষকের কাছে নিয়ে গিয়ে চাকরি দেবে বলে মৌখিক চুক্তি করেন। এ জন্য তারা নয় লাখ টাকা দাবি করেন। তাদের আশ্বাস পাওয়ার পর আমার স্ত্রী শরিফুল নাহারের ভাইয়ের কাছে থেকে জমি বিক্রির নামে ছয় লাখ টাকা নিয়ে আসি। এরপর চুক্তিবদ্ধ টাকা সংগ্রহ করতে না পেরে এক ব্যক্তির কাছ থেকে চওড়া সুদে আরও তিন লাখ টাকা সংগ্রহ করি।
তিনি দাবি করেন, সংগ্রহ করা নয় লাখ টাকার মধ্যে সভাপতিকে চার লাখ এবং প্রধান শিক্ষককে পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে চাকরি চূড়ান্তভাবে পাকাপোক্ত করা হয়। টাকা গ্রহণের বেশ কিছু দিন পার হয়ে গেলে তারা দুইজনে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। তখন আমি তাদের সাথে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তারা আমাকে এড়িয়ে যান। এর বেশ কিছুদিন পরে তারা জানান চাকরি দলীয় নেতাকর্মীরা দেবে আমাদের কিছুই করার নেই বলে টাকা ফেরত না দিয়ে নানাভাবে তালবাহানা শুরু করে।
তিনি আরও বলেন, আমি এখন নিরুপায় হয়ে বিভিন্ন মহলে দ্বারস্থ হলেও এর কোন প্রতিকার মিলছে না। বিষয়টি নিয়ে আমি উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করি। আমি অসুস্থ ব্যক্তি হওয়ায় আমার পরিবারে জন্য চাকরিটি খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। চাকরিটি হলে আমার অবর্তমানে আমার স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তানকে নিয়ে জীবনযাপন করতে পারবে। চাকরি না হলে আমার অবর্তমানে স্ত্রী-সন্তানের জীবনে অন্ধকার নেমে আসবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গভর্নিং বডির সভাপতি সুজয় প্রমানিক দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, আমরা তো এখনো নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুই করিনি। তাহলে টাকা নিলাম কিভাবে। পূর্ব শত্রুতার কারণে এবং আমরা যাতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে না পারি সে জন্য আমাদের বিরুদ্ধে এসব মিথ্যে অভিযোগ তুলেছে।
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক তৃপ্তি মণ্ডল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, যেখানে আমরা নিয়োগ দিতে পারলাম না সেখানে কিভাবে আমি টাকা নিলাম। আমার বিরুদ্ধের অভিযোগটি সম্পন্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। চাকরি দেওয়ার নামে তার সাথে কোন ধরনের কথা বা লেনদেন হয়নি। পূর্ব শত্রুতার জেরে সে এমন অভিযোগ তুলেছে।