ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হাসান মারুফের সরকারি নম্বর ক্লোন করে (সফটওয়্যারের মাধ্যমে যেকোনো ব্যক্তির মোবাইল ফোন নম্বর অবিকল নকল করে অন্য নম্বরে ফোন করা যায়) বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছে টাকা দাবি করেছে একটি প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় শনিবার গৌরীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
জানা গেছে, ইউএনওর ফোন নম্বর ক্লোন করে প্রতারক চক্রটি শনিবার উপজেলার বিভিন্ন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে। এ সময় প্রতারক চক্র ইউএনও পরিচয়ে ল্যাপটপ দেওয়ার কথা বলে অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকদের কাছে ৯ হাজার টাকা দাবি করে এবং টাকা পাঠানোর জন্য মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের (০১৬৩৭৬৮৮০৮৫) নাম্বার দেয়। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ দেখা দিলে শিক্ষকরা ঘটনাটি ইউএনওকে জানান এবং প্রতারক চক্রের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনাও ভেস্তে যায়।
কিল্লা বোকাইনগর ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সায়েদুল হক বলেন, ‘শনিবার দুপুরে ইউএনওর নম্বর থেকে ফোন করে বলা হয় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ৫৬ হাজার টাকা মূল্যের ল্যাপটপ দেওয়া হবে। আপনি নিতে চাইলে দ্রুত ৯ হাজার টাকা পাঠিয়ে কাল অফিস থেকে ল্যাপটপ নিয়ে যাবেন। পরে ঘটনা ঊর্ধ্বতনদের অবহিত করলে প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ পায়।’
গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামুল হক সরকার বলেন, ‘ইউএনও স্যারের নম্বর থেকে ফোন করে আমার কাছে স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নাম্বার চাওয়া হয়। কিন্তু মোবাইলে ইউএনওর কণ্ঠস্বর অন্যরকম শোনালে তার শরীর খারাপ কি না আমি জানতে চাই। তখন তিনি বলেন—একটু ঠান্ডা-সর্দি লেগেছে তাই এই রকম। পরে ঘটনাটি আমি মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করি।’ ইসলামাবাদ সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ রুকুনুদ্দিনও প্রায় একই কথা জানালেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান মারুফ বলেন, শনিবার আমার সরকারি নম্বর ক্লোন করে একটি প্রতারক চক্র ৫৬ হাজার টাকা মূল্যের ল্যাপটপ দেওয়ার কথা বলে বিকাশে টাকা দাবি করে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
গৌরীপুর থানার ওসি খান আব্দুল হালিম সিদ্দিক জানান, এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। পুলিশ ঘটনা তদন্ত করছে ও অপরাধীদের ধরতে চেষ্টা চালাচ্ছে।