করোনা পরিস্থিতিতে দেড় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। অনলাইনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষার আগে সব ফি জমা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে ইবি। শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন, এই সময়ে আবাসন-পরিবহনসহ সব সেবা বন্ধ থাকার পরও কেন ফি দিতে হবে?
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে ফি মওকুফের দাবি জানিয়ে আসছে। গত ৯ জানুয়ারি এই দাবিতে ক্যাম্পাসে ছাত্র সমাবেশ করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন। সমাবেশ থেকে উপাচার্য বরাবর দাবিসংবলিত স্মারকলিপিও দেন তাঁরা। পরে একই দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরলিপি প্রশাসনকে দেয় সংগঠনটি। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বিষয়টি ইতিবাচকভাবে নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলন স্থগিত করেন নেতাকর্মীরা।
এরপর গত ২৮ জুন একই দাবি নিয়ে প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেয় ছাত্র মৈত্রী। এ সময় শিক্ষার্থীদের এই দাবিকে যৌক্তিক আখ্যা দিয়ে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। স্মারকলিপি গ্রহণকালে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘পরিবহন ও আবাসিক হল শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করেনি। তাই এসব ফি মওকুফের দাবি যৌক্তিক। পুরো ফি মওকুফ করতে না পারলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সামর্থ্য অনুযায়ী বিবেচনা করা হবে।’
এদিকে গত একাডেমিক কমিটির সভায় সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় না খোলায় অনলাইনে চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গত মঙ্গলবার এসংক্রান্ত নীতিমালা প্রকাশ করা হয়। সেখানে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার আগে সব ফি সম্পূর্ণ প্রদানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্নভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।
অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার পরীক্ষার আগেই হল, পরিবহনসহ সব ফি মওকুফের দাবিতে বিবৃতি দিয়েছে ছাত্র মৈত্রী।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা প্রভোস্ট কাউন্সিলের মিটিংয়ে আবাসন ফি অর্ধেক মওকুফের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর যদি হল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বাবদ কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়, তাহলে পুরো ফি মওকুফের জন্যও আমরা প্রস্তুত। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন না চাইলে কিছুই সম্ভব নয়।’
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমি নিয়োগ পাওয়ার পর ফি মওকুফের বিষয়টি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। আমি বিষয়টি সম্পর্কে এখনো জানি না।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘এটা অফিসের বিষয়। অফিসে গিয়ে তথ্য নিয়ে যাবেন। আমি মোবাইলে কোনো কথা বলতে পারব না। অফিসে এলে আমি সংশ্লিষ্টদের ডেকে পুরোপুরি জেনে তথ্য দেব। ডকুমেন্ট না দেখে কিছু বলতে পারব না।’