ইমেরিটাস অধ্যাপক অরুণ বসাক জমি দখলের শিকার - দৈনিকশিক্ষা

ইমেরিটাস অধ্যাপক অরুণ বসাক জমি দখলের শিকার

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) অবহেলায় একটি ওয়াকফ্ এস্টেটের মোতোয়ালি তার প্রতিবেশীর জমি ১৮ বছর ধরে দখল করে রেখেছেন।

সেই প্রতিবেশী আর কেউ নন, প্রখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী অধ্যাপক অরুণ কুমার বসাক। যিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এবং পদার্থবিজ্ঞানে দেশের একমাত্র ইমেরিটাস অধ্যাপক।

এখনো ৮২ বছর বয়সী এই শিক্ষাবিদের দিনের বেশিরভাগ সময় কাটে গবেষণাগারে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে তার প্রকাশনার সংখ্যা প্রায় ২০০। সবশেষ প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে ইউরোপিয়ান ফিজিক্স লেটারে, এ মাসের প্রথম সপ্তাহে।

রাজশাহীর সাগরপাড়া এলাকায় অরুণ কুমার বসাকের বসতবাড়ির জমির ঠিক দক্ষিণ পাশেই ওয়াকফ্ এস্টেটের অবস্থান। এর মোতোয়ালি ইমাম ইয়াহিয়া ফেরদৌস।

ন্যায় বিচারের দাবিতে অধ্যাপক অরুণের আবেদনগুলোতে আরডিএ তেমন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ইয়াহিয়া ফেরদৌস ১৮ বছর ধরে এই শিক্ষাবিদকে হয়রানি করতে থাকেন।

গত মে মাসে ফেরদৌস একটি আইনি লড়াইয়ে হেরে যান এবং দখলকৃত জমিতে নির্মিত একটি অবকাঠামো অপসারণে বাধ্য হন।

তবে, এখনও জমির দখল ছাড়েননি ফেরদৌস। গ্রিল দিয়ে জমিটি ঘিরে রেখেছেন বলে জানান অধ্যাপক অরুণ।

অধ্যাপক অরুণ বসাক বলেন, 'আমি পড়াশোনা আর গবেষণা নিয়ে ব্যস্ত থাকি। সম্পত্তির দেখাশোনা করতে পারিনি। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে আমার প্রতিবেশী (ফেরদৌস)। এখন আমি নিজের বাড়িতেই অনিরাপদ বোধ করি।'

অধ্যাপক অরুণের বসতবাড়ির জমিটি ছিল তার স্ত্রী দেবিকা বসাকের। ২০২০ সালের নভেম্বরে দেবিকা বসাকের মৃত্যুর পর নিঃসন্তান অধ্যাপক অরুণ জমিটির মালিকানা পান।

২০০৩ সালে নিজের জমিতে একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণের সময় দেবিকার জমির সীমানা প্রাচীর ভেঙে ২ ফুট ভেতরে গিয়ে ভবনের অংশ নির্মাণ করেন ফেরদৌস।

এরপর নির্মাণ বিধি ভঙ্গের অভিযোগে আরডিএর কাছে অভিযোগ করেন দেবিকা।

ফেরদৌসের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে আরডিএ সময় নেয় ৭ মাস।

ততদিনে জমির একটি অংশ দখল করে ফেরদৌস ভবন নির্মাণ শেষ করে ফেলেছেন।

অবৈধ স্থাপনা অপসারণের জন্য ফেরদৌসকে চূড়ান্ত নোটিশ দিতে আরডিএ ৫ বছর সময় নেয় এবং ২০০৮ সালের মে মাসে সেই নোটিশ দেয়।

ফেরদৌস সেই সিদ্ধান্তকে রাজশাহীর আদালতে চ্যালেঞ্জ করেন। একই সঙ্গে দেবিকার বিরুদ্ধে ওয়াকফ্ এস্টেটের জমি দখলের অভিযোগ আনেন।

আদালত এই অভিযোগ খারিজ করে দেন।

২০১৪ সালে ফেরদৌস আপিল করলে জেলা আদালত বাদিকেই ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ২০১৭ সালে ফেরদৌস মামলাটি হাইকোর্টে নিয়ে যান।

২০২০ সালের জানুয়ারিতে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন এবং আরডিএর সিদ্ধান্তকে বৈধতা দেন। একই রায়ে হাইকোর্ট ফেরদৌসকে দেবিকার কাছে ক্ষমা চাইতে এবং অধ্যাপক অরুণ ও তার পরিবারকে হয়রানি না করার প্রতিশ্রুতি দিতে বলেন।

হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী, ২০২০ সালের অক্টোবরে ফেরদৌস তার অবৈধ অবকাঠামো সরিয়ে নিলেও এখনও জমির ওই অংশ দখল করে আছেন। তিনি জায়গাটির চারপাশে ধাতব গ্রিল ও গাছ লাগিয়ে রেখেছেন।

এটা নিয়ে অধ্যাপক অরুণ আরডিএর কাছে অভিযোগ জানালেও কোনো প্রতিকার পাননি।

অধ্যাপক অরুণ বলেন, 'সমাধান খুঁজতে দুয়ারে দুয়ারে গিয়েছি, কিন্তু লাভ হয়নি। কেউই আমাকে সাহায্য করেননি।'

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে ফেরদৌস এই প্রতিবেদককে গ্রিলের প্রবেশপথের তালা খুলে বিতর্কিত ওই জমিতে নিয়ে যান। অধ্যাপক অরুণকে 'খুশি' করার জন্য তিনি সেখানে লাগানো গাছগুলো কেটে ফেলবেন বলে জানিয়েছেন।

মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, 'আদালত আমাকে বলেছেন অধ্যাপক অরুণকে সন্তুষ্ট রাখতে।'

তবে তিনি জানান, আরডিএ কর্মকর্তাদের পরামর্শ মতোই তিনি মামলাটি করেছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে আরডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল তারিক বলেন, 'আমি এখন ব্যস্ত আছি।'

এ বিষয়ে কথা বলতে আগামী মাসে কল করতে বলেন তিনি।

সূত্র : দ্য ডেইলি স্টার

এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.01347279548645