ইসরায়েল-হামাস যু*দ্ধ ও পশ্চিমের গণমাধ্যম - দৈনিকশিক্ষা

ইসরায়েল-হামাস যু*দ্ধ ও পশ্চিমের গণমাধ্যম

মো. মোস্তফা মিয়া |

যুদ্ধের মাধ্যমে মানুষের মন জয় করা অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ কোনো কালেই সম্ভব ছিলো না এবং সম্ভবও হবে না। মন জয়ের চেষ্টা কেবল ব্যক্তি ও পরিবারের মধ্যেই  সীমাবদ্ধ নয়, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রেও মন দখলের লড়াই চলমান। কোনো জাতির মুক্তির জন্য যেমন তার মনকে স্বাধীন থাকতে হয়, তদ্রূপ মজলুমের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্যও আগ্রাসীর মন দখলের চেষ্টা ও তৎপরতাকে রুখে দিতে হয়। মুক্তির বিপ্লব এবং স্বাধিকারের প্রতিরোধ যুদ্ধে মন দখল করতে চেষ্টা করে দখলদার, আগ্রাসী, উপনিবেশবাদী শক্তি। এ কারণে মন দখলের লড়াইয়ে কিছুতেই হেরে যাওয়া যাবে না। ফিলিস্তিনের মানুষের প্রায় ৮০ বছরের মুক্তির সংগ্রামকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে জায়নবাদী ইসরাইল রাষ্ট্র এবং তার এজেন্টরাও মন দখলের গভীর তৎপরতা চালায়। ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করেই ইহুদিরা থেমে থাকেনি; তারা গণমাধ্যম, শিক্ষাসমাজ, রাজনীতি, চলচ্চিত্র, সামাজিকমাধ্যম, কূটনীতি, আইন-বিধি ও তদবিরের মাধ্যমে মানুষের মনের দখল নিতেও গভীর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু এক্ষেত্রে তাদরে চেষ্টা বার বার বিফল হলেও তাদের আগ্রাসী মানসিকতার ইতিবাচক পরিবর্তন হচ্ছে না।

এডওয়ার্ড স্যামুয়েল হারম্যান আর নোয়াম চমস্কি ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে গণমানস নিয়ন্ত্রণ তথা মন দখলের উদ্দেশে (অপ)প্রচার কীভাবে কাজ করে, তা নিয়ে একটি মাস্টারপিস গ্রন্থ রচনা করেছেন। এ গ্রন্থের নাম ‘Manufacturing Consent: The Political Economy of Mass Media’. এ বইয়ে লেখকদ্বয় তাদের বহুল আলোচিত ‘Propaganda Model’-এর প্রস্তাব করেন।  এরই সূত্র ধরে চলমান যুদ্ধ সংক্রান্ত সংবাদ ও গণমাধ্যমের মানবিক দায়বদ্ধতার বিষয়ে আলোচনা করবো। যা শতভাগ সত্য ঘটনাগুলোকে মিথ্যা প্রমাণের জন্য সংবাদমাধ্যমের সাহায্যে পাঠক ও দর্শকদের মগজধোলাই করতে ব্যবহার হচ্ছে। ফিলিস্তিনের ওপর অবৈধ ইসরাইলের গণহত্যাকে ঢেকে রাখতে পশ্চিমা গণমাধ্যম তাদের বার্তা নীতিতে এ কাঠামোই ব্যবহার করছে।

এডওয়ার্ড ও চমস্কি এ গ্রন্থের দ্বিতীয় অধ্যায়ে বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীনদের গৃহীত (বা অঘোষিত) নীতি বা স্বার্থের অনুকূলে কোনো ঘটনাসংশ্লিষ্টরা ‘নিরীহ আক্রান্ত বা মজলুম’ হিসাবে গণমাধ্যমে পরিষেবা পায় অথবা পায় না। এ বিষয়টিকে লেখকদ্বয় বলছেন, সংবাদমাধ্যমে আসার ‘যোগ্য আক্রান্ত/মজলুম’ এবং ‘অযোগ্য আক্রান্ত/মজলুম’। আমি আরো সহজ করে এর তরজমা করতে চাই এভাবে-ক. ‘সহায়তা ও সমবেদনা পাওয়ার যোগ্য মজলুম’ এবং খ. ‘সহযোগিতা ও সমবেদনা পাওয়ার অযোগ্য মজলুম’।

রাশিয়ার আগ্রাসনের পর ইউক্রেনের রুশবিরোধী সবাই যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপীয়দের দয়া-দাক্ষিণ্য ও সামরিক-আর্থিক সমর্থন পেয়েছে, পাচ্ছে। কিন্তু ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র সৌদি আরব আর আরব আমিরাত হামলা চালালেও তারা মার্কিন বা পশ্চিমা গণমাধ্যমে অনুকম্পা পাওয়ার ‘যোগ্যতা’ অর্জন করেনি। কারণ, ইয়েমেনের মজলুমরা সৌদি আরবের কথামতো চলেনি। তারা ‘আল মওতু ইসরাইল’ বলে স্লোগান দেয় এবং তাদের প্রতি ইরানের সরকার সহানুভূতিশীল।

গণমাধ্যম থেকে এ বয়ান যায় একাডেমিয়ায়, সেখান থেকে সমাজের আরো গভীরে, এমনকি ‘খ্রিষ্টান জায়নবাদী’ নামের ইভ্যানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরা ধর্মের বিরুদ্ধে গিয়ে ‘অ্যান্টিক্রাইস্টের’ সহযোগী এ ইহুদিবাদীদেরই সমর্থন করছে। এ প্যারাডক্স থেকে বোঝা যায়, জায়নবাদীরা পশ্চিমের জনমন দখল করে নিজেদের পক্ষের বয়ান উৎপাদন ও পুনরুৎপাদন করে চলেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন কংগ্রেস, সিনেট ও হোয়াইট হাউজে ইসরাইল এখনো সেই ‘হিটলারের গ্যাস চেম্বারে মৃত্যুর বয়ান উৎপাদন ও পুনরুৎপাদন করে চলেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন কংগ্রেস, সিনেট ও হোয়াইট হাউজে ইসরাইল এখনো সেই ‘হিটলারের গ্যাস চেম্বারে মৃত্যুর প্রহর গুণতে থাকা আক্রান্ত ইহুদি’! 

এ উদাহরণটি কেবল সাম্প্রতিক সময়কে কেন্দ্র করে নয়, ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল গঠনের পর থেকে প্রতিটি সময়েই ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে সংঘাত-উত্তেজনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে সমগ্র ফিলিস্তিন (প্রায় ২৭ হাজার বর্গকিলোমিটার) অঞ্চলে ‘ইসরায়েল’ বলে কিছু ছিলো না। আজ ২০২৩-এ কীভাবে উড়ে এসে জুড়ে বসা ইসরায়েল ২২ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের হয়ে যায়? অন্যদিকে যার জমি সেই ভূমিপুত্র ফিলিস্তিনিরা; পশ্চিমতীর, রামাল্লাহ, নাবলুস, হেবরন, নাজারাথ, আল কুদস বা গাজাবাসী কেনো মাত্র ৪ হাজার বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ধুঁকে মরছে?

পত্রপত্রিকা, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ, রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক দলের মনোনয়ন থেকে শুরু করে মন্ত্রিত্ব বা প্রেসিডেন্ট কে হবেন তা ঠিক করে দিতে ইহুদিবাদী তদবির-সংস্থাগুলো (যেমন AIPAC) নিবিড়ভাবে কাজ করে। ইসরায়েলের মনমতো আমেরিকার চলাকে উন্মোচন করে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের নন্দিত অধ্যাপক জন মিয়ার্শিমার ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য অধ্যাপক স্টিফেন ওয়াল্ট ‘The Israel Lobby & US Policy’ শীর্ষক একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। এ গ্রন্থ দেখিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একেবারে বিনাস্বার্থে কম করে হলেও ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার ইসরায়েলকে দেয় ইহুদি-লবির প্ররোচনায়, ইসরাইল আক্রান্ত-অসহায় এ বয়ানের ভিত্তিতে। এ সময় ৫ শতাধিক ফিলিস্তিনি গ্রামে জাতিনির্মূলের উদ্দেশে গণহত্যা চালায় ‘হলোকস্ট ব্যবসায়ী’ ইহুদিরা। মানে বুঝেছেন? তারা অতীতে হলোকস্টের শিকার হয়ে ইউরোপ-আমেরিকার সহায়তা নিয়ে নিজেরাই আরও বড় ও ধারাবাহিক হলোকস্ট ঘটাচ্ছে! আর তা নিয়ে পশ্চিমের মিডিয়ায় প্রশ্নই নেই! এ বিষয়ে নূরউদ্দিন মাসালহা বেশকিছু গ্রন্থ রচনা করে দেখান, ইসরায়েল মূলত একটি উপনিবেশবাদী অবৈধ রাষ্ট্র, যা ভূমিপুত্রদের জীবন ও সম্পদ লুটে গড়ে উঠেছে। সাঈদের ‘ফিলিস্তিন প্রশ্ন’ তো পশ্চিমা শিক্ষাসমাজে আজও পাঠ্য হয়ে ইসরাইলের দখলদারত্বের পরিচায়ক হয়ে উঠেছে। নেলসন ম্যান্ডেলা ফিলিস্তিনিদের মুক্তিসংগ্রামকে কৃষ্ণাঙ্গদের মুক্তির লড়াই হিসেবেই দেখেছেন। 

এ মজলুম বা নিপীড়িত ফিলিস্তিনিরা পশ্চিমা মিডিয়ায় কখনোই ভূমিপুত্র বা আদিবাসীরূপে আসে না। এ আধুনিক যুগেও প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে মজলুম শরণার্থীদের খাদ্য-পানি না দিয়ে, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে, স্থল, নৌ ও আকাশপথ অবরুদ্ধ করে নিরস্ত্র শিশু, বয়োবৃদ্ধ, নারী, পুরুষ নির্বিশেষে গণহত্যা চালাচ্ছে একটি কথিত ‘রাইট টু ডিফেন্ড ব্যবসায়ী আক্রান্ত রাষ্ট্র’। এ কারণে ফিলিস্তিনের পক্ষে গণবয়ান নির্মাণের কোনো এজেন্ডা পশ্চিমা মিডিয়া নেয় না।

তাদের নেয়ার সক্ষমতায় লাগাম টেনে দেয় প্রভাবশালী ইহুদি বলয়। গাজা, পশ্চিমতীর, পূর্ব জেরুসালেম, রামাল্লা, নাবলুসে প্রতিদিন ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে অবৈধ ইসরায়েল। ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি-জমি-ফসল দখল ও লুট করছে; কিন্তু পশ্চিমা গণমাধ্যমে এ সংবাদকে ফ্রেমিং করে, প্রাইমিং করে সামনে এনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করার কোনো চেষ্টা দেখা যায় না।

প্রায় প্রতিদিন মানুষ মারছে ইসরাইল কার্পেট বোমা ছুড়ে। বাশাম ইউসুফ এক সাক্ষাৎকারে পিয়ার্স মরগানকে জানিয়েছেন, হামাস আক্রমণ করছে বলেই ইসরাইল হত্যা করছে তা নয়; যখন হামাস আক্রমণ করেনি, তখনো ইসরাইল ভূমি দখল করেছে এবং এর প্রতিবাদ করলে নির্বিচারে গুলি করে সাধারণ নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা করেছে। অসহায় মানুষকে হত্যা করছে, কিন্তু কোনোদিন এ হত্যার শিকার মানুষ পশ্চিমা গণমাধ্যমের ‘প্রধান মজলুম’ হয়ে ওঠেনি, যেভাবে ইউক্রেনীয়রা হয়েছে অথবা ৭ অক্টোবরের পর ইসরায়েলের দখলদাররা আক্রান্ত হওয়ার পর হয়েছে।

কিন্তু গাজায় অমানবিক অত্যাচারের শিকার ফিলিস্তিনিরা যখন গৃহে নির্মিত অস্ত্র দিয়ে পালটা জবাব দিল; ফ্রানৎস ফানোঁর মতে, দুনিয়ার নিকৃষ্ট ঔপনিবেশিক শোষকদের বিরুদ্ধে বিপ্লব করল; তখন দখলদার ইহুদিরা সংবাদমাধ্যমের ‘যোগ্য আক্রান্ত’ হয়ে উঠল। কিন্তু ফিলিস্তিনি মজলুমের প্রতিরোধ লড়াইটি ইতিবাচকভাবে চিত্রিত হলো না। এটিই মজলুমকে খলনায়ক বানানোর তাত্ত্বিক কাঠামো, যা ইহুদিবাদী গণমাধ্যম অনুসরণ করে যাচ্ছে।

পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমে হামাস বা ফিলিস্তিনিদের ব্যাপকভাবে দানবায়ন (Dehumanize) করা হলো, বা এখনো হচ্ছে। যে শব্দগুলো হিটলার ইহুদি নিধনের আগে ব্যবহার করেছিলো বা রুয়ান্ডার গণহত্যায় ব্যবহৃত হয়েছিলো, সেগুলো দখলদাররা ব্যবহার করছিলো ফিলিস্তিনিদের ক্ষেত্রে। যেমন, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট ফিলিস্তিনিদের Human animals বলে মানুষ থেকে খারিজ করে তাদের হত্যা করাকে জায়েজ করে তোলে। অ্যান্টি-সেমিটিজম সংবেদনশীল পশ্চিমা মিডিয়া এ জাতি নিধনকারী শব্দের ব্যাপারে একবারও আপত্তি জানায়নি। অর্থাৎ তাদের এজেন্ডায় ফিলিস্তিনিরা মোটেই আলোচনা, প্রচারণা বা বয়ানের ‘যোগ্য মজলুম’ নয় এবং ‘যোগ্য মজলুম’ হিসাবে তালিকাবদ্ধ ইসরাইলিদের কোনোভাবেই তারা জালিম হিসাবে তুলে ধরে গণমানসে ইসরাইলবিরোধী মানসিকতার জন্ম দেবে না।

ইহুদি অধ্যাপক নরম্যান ফিংকেলস্টেইনের মতে, ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলিদের আগ্রাসনের বলি হয়ে দাস-দাসী হয়ে গেছে এবং জালেমদের বিরুদ্ধে মজলুম দাসের বিদ্রোহ করার কেবল নৈতিক অধিকার রয়েছে তা নয়, বরং আন্তর্জাতিক সব আইন দ্বারা স্বীকৃত দাসবিপ্লব। তারপরও ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের অমানবিক বেলফোর ঘোষণার ফলে ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে গণহত্যার মাধ্যমে অবৈধভাবে গঠিত জালেম রাষ্ট্রকাঠামোর চলমান নিপীড়ন ও মানবতাবিরোধী অপরাধকে প্রশ্নবিদ্ধ না করে, যুদ্ধ থামাতে না বলে ‘Do you condemn Hamas?’ দিয়ে শুরু করা পশ্চিমা মিডিয়ার উদ্দেশে অডিয়েন্সের মন দখল করা।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আগে স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবায় রাখতে পারবা না।’ বাঙালিরা মরতে শিখে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলেন। অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খানের ভাষায়-‘মৃত্যুর প্রতি মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা’ ফিলিস্তিনিরাও নিশ্চয়ই জালিম ইসরাইলের অবরুদ্ধ কারাগার থেকে একদিন মুক্ত হয়ে পশ্চিমতীর থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত মুক্ত পাখির মতো উড়বে। মরতে শেখা জাতির মুক্তিযুদ্ধ পুরো বিশ্বের জন্য প্রায়োগিক শিক্ষা, প্রজ্ঞাপূর্ণ দীক্ষা ও জীবন্ত দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়ায়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগী দেশগুলো অমানবিক নগ্ন আচরণের কারণে বার বার ফিলিস্তিনের শতভাগ ন্যায্য অধিকার ফিরে পাওয়ার ক্ষেত্রে হোঁচট খেয়েছে এবং খাচ্ছে। কিন্তু সত্য বিষয়কে দশকের পর দশক পরাশক্তির মাধ্যমে কখনো বঞ্চিত করে রাখা যাবে না। যেকোনো মূল্যে সত্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটবে। তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার অন্ধ সহযোগী রাষ্ট্র সমূহের সাধারণ জনগণ এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালের শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলের গণহত্যার বিচারের দাবিতে অনবরত আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে এবং তাদের এ সংগ্রামের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন দেশ ইতিমধ্যে ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছে।

প্রকৃতপক্ষে মধ্যপ্রাচ্যের এই সমস্যা পশ্চিমা সভ্যতারই সৃষ্টি। যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার রাজনীতি, অস্ত্র ব্যবসায় এবং মধ্যপ্রাচ্যের তেল সম্পদের লালসাই ইসরাইলকে অন্ধভাবে সহযোগিতা দেয়ার কারণ। অন্য পশ্চিমা দেশগুলো আমেরিকার লেজুড়বৃত্তি করে চলছে। পশ্চিমের সভ্যতার আর একটি ভয়ানক বিষবাষ্প হলো বর্ণবাদ। এই বর্ণবাদ ও স্বার্থের লালসার কারণেই কাজেই গাজা বিপর্যয় স্পষ্টতই প্রমাণ করে যে, পশ্চিমের সভ্যতা বর্তমানে বর্ণবাদী ভণ্ডদের আখড়া। তারা তাদের চরম অমানবিক রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে ইহুদি জাতিকে বলিরপাঠা হিসেবে ব্যবহার করছে। আর ইহুদি জাতি তথা ইসরায়েল সরকারের সকল অমানবিক কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দেয়ার জন্য তাদের গণমাধ্যমকে নগ্নভাবে ব্যবহার করছে। তারপরও বিশ্বজনমত সচেতন থাকার ফলে তাদের সকল অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এখনো সময় আছে আরব বিশ্ব যদি পশ্চিম বিশ্বের গণমাধ্যমের অমানবিক কর্মকাণ্ডের বিপক্ষে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে মূখ্য ভূমিকা পালন করতে না পারেন,  তাহলে তাদেরকে নিকট ভবিষ্যতে চরম মূল্য দিতে হবে। এতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। ইসরাইল গাজায় অমানবিক গণহত্যার অপরাধে যে অপরাধি এই বিষয়টি প্রমাণ করার জন্য  আরব বিশ্বের মূখ্য ভূমিকা পালন করা আবশ্যক।

লেখক: মো. মোস্তফা মিয়া, অধ্যক্ষ ও কলামিস্ট

 

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0081501007080078