ঈদের আগেই বেতন চান নতুন শিক্ষকরা - দৈনিকশিক্ষা

এমপিওভুক্তির জটিলতা নিরসনে সভা আজঈদের আগেই বেতন চান নতুন শিক্ষকরা

রুম্মান তূর্য |

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ কাজলা মহসিনিয়া আলিম মাদরাসায় এনটিআরসিএর (বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ) মাধ্যমে নিয়োগ সুপারিশ পেয়েছিলেন আবুল বাশার। কিন্তু যোগদানের চারমাস পরও এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) ভুক্ত হতে পারেননি তিনি। কারণ তার প্রতিষ্ঠানে মহিলা কোটা পূরণ হয়নি। চার মাস আগেই রাজধানীর পোস্ট অফিস হাইস্কুলে নিয়োগ সুপারিশে পেয়ে শিক্ষক পদে যোগদান করেছিলেন ভুপ্রেন্দনাথ রায়। আদালতের নির্দেশনায় সুপারিশ পেলেও এমপিও নীতিমালায়  ৩৫ বছরের বেশি বয়সিদের এমপিওভুক্তির সুযোগ না থাকায় ঝুলে আছে তার ভাগ্যও।

শুধু আবুল বাশার বা ভুপেন্দ্র নন। নতুন সুপারিশ পেয়ে যোগদান করা অনেক শিক্ষকের এমপিওভুক্তির ভাগ্য অনিশ্চয়তার দোলাচলে ঝুলছে। ভুল পদে সুপারিশ, মহিলা কোটা পূরণ না থাকা, আদালতের নির্দেশনায় নির্ধারিত বয়সের পরে নিয়োগ সুপারিশ, নীতিমালায় ভুলভাবে পদের নাম উল্লেখ থাকার কারণে এসব শিক্ষকের এমপিওভুক্তিতে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। 

যদিও প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষা নিয়ে এসব প্রার্থীকে নিবন্ধন সনদ দিয়েছে এনটিআরসিএ। পরে গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে আবেদন করে নিয়োগ পেয়েছেন তারা। প্রতিষ্ঠান থেকে সংগ্রহ করা শূন্যপদের তথ্য শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যাচাই করে সুপারিশ করা হয়েছিলো তাদের। 

জটিলতায় পড়া শিক্ষকরা বলছেন, এনটিআরসিএ আমাদের সুপারিশ করেছে। কিন্তু, সুপারিশ পাওয়া পদে চার মাস বেতনবিহীন চাকরি করে যাচ্ছি। সামনে ঈদ। ঈদের আগে এমপিওভুক্ত হতে পারলেও বেঁচে যেতাম। 

ভুল পদে সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীরা বলছেন, অনেকের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধান ননএমপিও পদকে এমপিও দেখিয়েছেন। অনেকের ক্ষেত্রে শাখার পদকে দেখিয়েছেন এমপিও পদ। এসব পদে আমাদের সুপারিশ করলেও চারমাসেও এমপিওভুক্ত হতে পারিনি।  

পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব শিক্ষকরা বলছেন, আদালতের নির্দেশনায় নিয়োগ সুপারিশ করেছে এনটিআরসিএ। কিন্তু এমপিওভুক্ত হতে পারছি না। 

যদিও পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব শিক্ষকদের মধ্যে মাদরাসায় যোগদান করা কেউ কেউ ঘুষ দিয়ে এমপিওভুক্ত হয়েছে বলে অভিযোগ আছে।  

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, সারাদেশের এমপিওভুক্ত পদে ৩০ হাজার ৯০৪ জন প্রার্থীকে সুপারিশ করে এনটিআরসিএ। কিন্তু কতজন শিক্ষক যোগদান করেছেন সে তথ্য তাদের কাছে নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নতুন শিক্ষকদের যোগদানের পর গত জানুয়ারি ও মার্চ মাসে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের মোট ৬ হাজার ৭০০ জন শিক্ষকককে এমপিওভুক্ত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। কিন্তু, মাদরাসায় নিয়োগ পাওয়া এমপিওভুক্তদের সংখ্যা বলতে পারছেন না মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। আর কারিগরিতে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের এমপিওর আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়নি বলে দাবি উঠেছে। 
 
নতুন শিক্ষকরা কবে এমপিওভুক্ত হতে পারবেন সে বিষয়ে সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, আগেও এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগ সুপারিশ পেয়ে শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিলো। আমরা সভা করে সেগুলো নিরসন করেছিলাম। এবারও কারো কারো জটিলতা দেখা যাচ্ছে। আমরা এ বিষয়গুলো নিরসনের চেষ্টা করছি।

মন্ত্রী আরও বলেন, অনেকেই আদালতের নির্দেশনায় সুপারিশ পেয়ে যোগদান করলেও এমপিও জটিলতায় পড়ছেন। কারণ আদালতের নির্দেশনায় তারা যে বয়সে সুপারিশে পেয়েছেন আর নীতিমালায় যে বয়সের বিষয়টি উল্লেখ আছে, তা মিলছে না। যেহেতু আদালতের নির্দেশনা আছে, সে অনুযায়ী তাদের কিভাবে এমপিওর মধ্যে নিয়ে আসা যায়, তা আমরা দেখবো। খুব শিগগিরই এসব বিষয় নিয়ে এনটিআরসিএর সঙ্গে সভা আছে। 

নতুন শিক্ষকদের জটিলতা নিরসনে কি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে এনটিআরসিএ কর্মকর্তারা বলছেন, রোববার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সভায় শিক্ষকদের এসব জটিলতা নিয়ে তথ্য উপস্থাপন করা হবে। 

এ বিষয়ে এনটিআরসিএর সচিব ওবায়দুর রহমান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, এমপিওভুক্তি আমাদের কাজ না। তবুও যাদের আমরা সুপারিশ করেছি তারা যে জটিলতাগুলোতে পড়েছেন সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সার্বিক বিষয় নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হবে। আজ রোববার সভায় আমরা প্রার্থীদের জটিলতার কথাও তুলে ধরবো। সেখানে আশা করি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল   SUBSCRIBE   করতে ক্লিক করুন।

পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036189556121826