নীলফামারীর জলঢাকায় ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধে অনলাইন খরচের নামে রশিদে উল্লেখের চেয়েও বেশি টাকা নেয়া হচ্ছে। কখনও এ টাকা নেয়া হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণে। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার গোলমুন্ডা ইউনিয়নের উপসহকারী ভূমি অফিসার শ্রী গনেশ চন্দ্র ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন।
গত কয়েকদিনের অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর গোলমুন্ডা ইউনিয়নের নুরবক্স নামের এক ব্যক্তি জমির ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে আসেন। রশিদে মোট ৪৬০ টাকা উল্লেখ থাকলেও কর পরিশোধের শুরুতেই ৮০০ টাকা দরদাম করে নেন গোলমুন্ডা ইউনিয়নের উপসহকারী ভূমি অফিসার শ্রী গনেশ চন্দ্র। নুরবক্স বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ৩৪০ টাকা টাকা দিয়েই রশিদ নেন।
একই মৌজার দুইটি দাগে কর পরিশোধ করেন হলদিবাড়ী এলাকার মোকলেছুর রহমান। দুই রশিদে মোট ১ হাজার ১১১ টাকা উল্লেখ থাকলেও তার কাছ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা নেন উপসহকারী ভূমি অফিসার। তার কাছে অতিরিক্ত নেয়া হয় ৩৮৯ টাকা। একই মৌজার কর পরিশোধের রশিদে ৮০ টাকা উল্লেখ থাকলেও হলদিবাড়ী এলাকার শাহাজাহান আলীর কাছ থেকে নেয়া হয় অতিরিক্তি ২২০ টাকা।
জমির ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের জন্য এভাবে প্রতিদিন প্রায় অর্ধশত জমির মালিক গোলমুন্ডা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে আসেন। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকেই নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। এ টাকা না দিলে কর পরিশোধে বিভিন্ন পুরাতন কাগজপত্র চান ওই ভূমি অফিসার। এতে ভোগান্তির শিকার হন জমির মালিকরা। এছাড়াও সাধারণ মানুষদের সেবা দেয়ার জন্য সরকারি ল্যাপটপ বাড়িতে রেখে অফিসে শুধু কাগজে কলমে কাজ করেন ওই ভূমি অফিসার।
ভুক্তভোগী নুরবক্স, মোকলেছুর রহমান ও শাহাজাহান আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, অনলাইন খরচের কথা বলে রশিদে উল্লেখ থাকা টাকার বাইরে তাদের কাছে অতিরিক্ত টাকা নেন গোলমুন্ডা ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী অফিসার। এছাড়া দুই এক দিন আগেই টাকা বুঝে নিয়ে তারপর রশিদ দেন তিনি। তাদের জিম্মি করেই নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। আর প্রয়োজনের তাগিদে তা দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়ে গনেশ চন্দ্রের সঙ্গে দৈনিক শিক্ষাডটকমের পক্ষ থেকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়ে কোন সদুত্তর না দিয়ে প্রতিবেদকের সঙ্গে সামনাসামনি দেখা করবেন বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব হাসান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধে রশিদে উল্লেখিত টাকার বাইরে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার কোন নিয়ম নেই। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, রশিদের বাইরে অতিরিক্ত নিলেই তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।