মাহফিল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় ইস্যুতে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার দায়ে ওয়াসেক বিল্লাহ নোমানী নামে এক বক্তাকে আটক করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তিনি খাইরুল উম্মাহ নামে একটি সমাজসেবী সংগঠনের ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কওমি মাদরাসার শিক্ষক বলে জানা গেছে।
রবিবার (১১ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টায় তাকে আটকের খবর নিশ্চিত করেন জেলা পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান। এর আগে, বিকেল ৫টার দিকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ময়মনসিংহ নগরীর সানকিপাড়ার এস এ সরকার রোডের বাসা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
আটকের ব্যাপারে পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান বলেন, বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় ইস্যুকে পুঁজি করে ওয়াসেক বিল্লাহর উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান করার কয়েকটি ভিডিও আমাদের নজরে এসেছে। ওইসব বক্তব্য ধর্মীয় বিভেদ তৈরি করাসহ মানুষকে ভিন্নপথে ধাবিত করার একটি অপপ্রয়াস। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে আটক করা হয়েছে।
নোমানীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে এসবি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘নতুন কিছুর ঝাল বেশিই থাকে। তিনি একজন নব্য মুসলিম। তিনি এখন পুলিশ হেফাজতে।’
জানা গেছে, ওয়াসেক বিল্লাহ নোমানী ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি ২০১২ সালে হিন্দু ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম হন। তিনি ময়মনসিংহ নগরীর সানকিপাড়ার ফজলুল হক মারকাযুল উলুম মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় নোমানীর বাড়ি।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, ওয়াসেক বিল্লাহ নোমানী উগ্র কণ্ঠে বলছেন, ‘খেলাফত তথা ইসলামী শাসনব্যবস্থা কায়েম হলে সব সাংবাদিককে ধরে ধরে জবাই করা হবে। দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠায় অনেক রক্ত দেওয়া হয়ে গেছে। এখন আর রক্ত দেব না।’ এখন থেকে রক্ত নেওয়া হবে বলে লাফিয়ে ওঠেন।
৩ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে নোমানী বলেন, ‘আল্লাহ যদি আমাদের তৌফিক দেয়, আর যদি ইনশাআল্লাহ খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে পারি; যদি আল্লাহ তৌফিক দেয় আর যদি ইনশাল্লাহ খেলাফত কায়েম করতে পারি, আল্লাহর কসম, আল্লাহর কসম, সংবাদ দেখার টাইম পাবি না। সংবাদ লেখার টাইম পাবি না। একটা একটা ধরব আর জবাই করব ইনশাআল্লাহ।’
তিনি বলেন, ‘যত দিন বাঁচব, বাঘের মতো বাঁচব। আর যদি মরতে হয় ইনশাআল্লাহ দুই-চার দশটাকে জাহান্নামে পাঠিয়ে এরপর মরব। সবাই রাজি আছি তো ইনশাআল্লাহ।’
মাহফিলটি কবে কোথায় হয়েছিল, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া না গেলেও পুলিশ তার নাম-পরিচয় ঠিকানা বের করে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। তবে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের দাবি, নোমানী হেফাজতে ইসলামের কোনো কমিটিতেই নেই।