পরীক্ষা ছাড়াই ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। শনিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এ ফল ঘোষণা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে অনলাইনে ফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।
এইচএসসি ও সমমানে ১ লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন পরীক্ষার্থীকে জিপিএ ফাইভ দেয়া হয়েছে। সে হিসেবে মোট পরীক্ষার্থীর ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন। ৯টি সাধারণ বোর্ড থেকে এইচএসসিতে জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬১৪ জন শিক্ষার্থী। আর আলিমে জিপিএ ফাইভ পেয়েছে ৪ হাজার ৪৮ জন শিক্ষার্থী। এইচএসসি বিএমে জিপিএ ফাইভ পেয়েছে ৪ হাজার ১৪৫ জন শিক্ষার্থী।
নম্বর ম্যাপিং পদ্ধতিতে জেএসসি ও এসএসসির ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। ফল তৈরি বা নম্বর ম্যাপিংয়ের বিস্তারিত পদ্ধতি জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: এইচএসসির ফল চ্যালেঞ্জের সুযোগ পাবেন পরীক্ষার্থীরা
মন্ত্রণালয় জানায়, সাধারণভাবে জেএসসি ও সমমান পরীক্ষার ২৫ শতাংশ এবং এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ৭৫ শতাংশ বিষয়ভিত্তিক নম্বর বিবেচনা করে এইচএসসির ফল নির্ধারণ করা হয়েছে।
জেএসসি বা জেডিসি পরীক্ষার আবশ্যিক বাংলা, ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ের নম্বরের ২৫ শতাংশ ও এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার আবশ্যিক বাংলা ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ে নম্বরের ৭৫ শতাংশ বিবেচনা করে এইচএসসিতে আবশ্যিক বাংলা ইংরেজি ও আইসিটি ভিশন নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞান গ্রুপের ক্ষেত্রে জেএসসি বা সমমান পরীক্ষার গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের প্রাপ্ত গড় নম্বরের ২৫ শতাংশ ও এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও উচ্চতর গণিত বা জীববিজ্ঞান বিষয়ের ৭৫ শতাংশ নম্বর বিবেচনা করে যথাক্রমে এইচএসসির পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও উচ্চতর গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের নির্ধারণ করা হয়েছে।
ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের ক্ষেত্রে জেএসসি অথবা সমমান পরীক্ষার গণিত ও বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয় প্রাপ্ত নম্বরের ২৫ শতাংশ ও এসএসসি অথবা সমমান পরীক্ষার গ্রুপ ভিত্তিক তিনটি সমগোত্রীয় বিষয়ে ৭৫ শতাংশ নম্বর বিবেচনা করে যথাক্রমে এইচএসসির ব্যবসা শিক্ষা গ্রুপের তিনটি সমগোত্রীয় বিষয়ের ফল নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফল নিয়ে তিক্ততা সৃষ্টি না করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
মানবিক ও অন্যান্য গ্রুপের ক্ষেত্রে জেএসসি সমমান পরীক্ষার গণিত ও বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে প্রাপ্ত গড় নম্বরের ২৫ শতাংশ ও এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার গ্রুপ ভিত্তিক পরপর তিনটি বিষয়ের ৭৫ শতাংশ নম্বর বিবেচনা করে যথাক্রমে এইচএসসি মানবিক ও অন্যান্য গ্রুপের তিনটি বিষয়ের নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
গ্রুপ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে জেএসসি বা সমমান পরীক্ষার গণিত ও বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয় প্রাপ্ত নম্বরের ২৫ শতাংশ ও এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার গ্রুপ ভিত্তিক পরপর তিনটি বিষয়ের ৭৫ শতাংশ নম্বর বিবেচনা করে যথাক্রমে এইচএসসি মানবিক ও অন্যান্য গ্রুপের তিনটি বিষয়ের নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় আরও জানান, জিপিএ উন্নয়নের ক্ষেত্রেও এসব পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে। আংশিক বিষয়ের পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে অকৃতকার্য নম্বর প্রদানের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতিতে ফল নির্ধারণ করা হয়েছে।
১১টি শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণ করা শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। সে হিসেবে মোট ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন শিক্ষার্থীর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন।
মহামারি পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়াই জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হল। সে হিসেবে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে।
এবার ফল অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে অথবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো ফল পাঠানো হচ্ছে না। কাজেই কোনো অবস্থাতেই ফলাফল প্রকাশের দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জমায়েত হওয়া থেকে শিক্ষার্থীদের বিরত থাকতে বলা হয়েছে। জানা গেছে, রেজাল্টের ওয়েবসাইটে www.educationboardresults.gov.bd থেকে ফল দেখা যাবে। এছাড়া https://eboardresults.com/v2/home থেকে পরীক্ষার্থীদের ফল জানা যাবে।
২০২০ খ্রিষ্টাব্দে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন শিক্ষার্থীর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল সে বছরের ১ এপ্রিল। কিন্তু করোনাভাইসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করলে ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়।
এরপর গত ৭ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি পঞ্চম ও অষ্টমের সমাপনীর মতো এইচএসসি পরীক্ষাও বাতিলের সিদ্ধান্তের কথা জানান। মন্ত্রী জানান, জেএসসি এবং এসএসসির ফলাফলের গড় করে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসির ফল নির্ধারণ করা হবে। জেএসসি-জেডিসির ফলাফলকে ২৫ এবং এসএসসির ফলকে ৭৫ শতাংশ বিবেচনায় নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ঘোষিত হবে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।
আরও পড়ুন:
বরিশাল বোর্ডে জিপিএ ফাইভ দেয়া হলো ৫ হাজার ৫৬৮ শিক্ষার্থীকে
রাজশাহী বোর্ডে জিপিএ ফাইভ পেল ২৬ হাজার ৫৬৮ শিক্ষার্থী
জিপিএ ফাইভ দেয়া হলো চট্টগ্রাম বোর্ডের ১২ হাজার ১৪৩ শিক্ষার্থীকে
কুমিল্লা বোর্ডে জিপিএ ফাইভ ৯ হাজার ৩৬৪ শিক্ষার্থী
ঢাকা বোর্ডে জিপিএ ফাইভ পেল ৫৭ হাজার ৯২৬ শিক্ষার্থী
জিপিএ ফাইভ দেয়া হলো দিনাজপুর বোর্ডের ১৪ হাজার ৮৭১ শিক্ষার্থীকে