বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব আইসিটির ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ৮৭ জন শিক্ষার্থী। তারা অভিযোগ করেন, ভর্তির পরে তিন বছর পার হলেও এ পর্যন্ত ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের মাত্র এক সেমিস্টার সম্পন্ন হয়েছে। এর বাইরে মূল ক্যাম্পাস থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরের শিবচর ক্যাম্পাসে থাকাকালে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তারা।
জানা যায়, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে তত্কালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন এবং সে সময় ভর্তি কমিটির দায়িত্বে থাকা শিক্ষকেরা শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব আইসিটিতে সিএসই, ইইই ও ইটিই বিভাগের অধীনে স্নাতক পর্যায়ে ১৩০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করেন। ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের বলা হয়েছিল, মূল ক্যাম্পাসের অদূরে মাদারীপুরের শিবচরে তাদের ক্লাস করতে হবে। সেখানে শ্রেণিকক্ষ, ল্যাব, আবাসনসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এমনকি স্নাতক শেষে তাদের মূল ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের মতো একই সনদপত্র দেওয়া হবে।
কিন্তু ভর্তি শেষে মাদারীপুরের শিবচরে গিয়ে শিক্ষার্থীরা দেখেন উলটো চিত্র। সেখানে ছিল না পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, ল্যাব এমনকি আবসনের ব্যবস্থা। আর মূল ক্যাম্পাস থেকে শিবচরের দূরত্ব ৯০ কিলোমিটারের অধিক এবং নিয়ম না মেনেই ঐ ইনস্টিটিউটে তাদের ভর্তি করা হয়েছে। গোপালগঞ্জ থেকে শিক্ষকেরা গিয়ে সপ্তাহে এক দিন ক্লাস নিতেন এবং পুরো সেমিস্টারের ল্যাব শেষ করতেন দুই দিনে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন অনিয়ম দেখে ঐ ইনস্টিটিউটের ৩৬ জন শিক্ষার্থী দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে অন্যত্র চলে যান। আর ইটিই বিভাগের সাত জন শিক্ষার্থীকে মূল ক্যাম্পাসের ইটিই বিভাগের সঙ্গে একীভূত করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহানের সময়। অবশিষ্ট ৮৭ জন শিক্ষার্থীকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরে আসতে বলা হয়।
মূল ক্যাম্পাসে ফিরেও ৮৭ জন শিক্ষার্থীর বিড়ম্বনা কমেনি। তাদের নিজেদের টাকায় বোর্ড-মার্কারসহ যাবতীয় শিক্ষা সরঞ্জাম কিনে ক্লাস করতে হয়েছে। সে সময় শিক্ষকদের বিরূপ আচরণেরও শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন এসব শিক্ষার্থী। এছাড়া ভর্তির পরে তিন বছর পার হলেও এ পর্যন্ত ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের মাত্র এক সেমিস্টার সম্পন্ন হয়েছে।
এ বিষয়ে তত্কালীন ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বি কে বালা অন্যত্র চলে যাওয়ায় এবং সিএসই বিভাগের শিক্ষক মো. আক্কাছ আলী দুই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত হয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে সিএসই বিভাগের অপর শিক্ষক মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি কাউকে কখনো কোনো বিষয়ে আশ্বস্ত করিনি। আমি ঐ সমস্ত শিক্ষার্থীকে চিনিও না।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কিউ এম মাহবুব বলেন, ‘ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের বিষয়ে অবগত রয়েছি। একাডেমিক ও রিজেন্ট বোর্ডের মিটিং শেষে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) দিকনির্দেশনা নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।