চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) ১নং ওয়ার্ডস্থ দক্ষিণ পাহাড়তলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছয় সহকারী শিক্ষকের শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সোমবার দুপুরে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম।
জানা গেছে, গত প্রায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে টেস্টের জন্য দেয়া নমুনায় এ ছয় শিক্ষককের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। করোনা আক্রান্ত শিক্ষকরা হচ্ছেন ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক কাজী নাসরিন আকতার, সুপ্তি সরোয়ার, নুর সাহেদ রহিম, শারমিন আহমেদ, মাহজুবা ও মোহাম্মদ মামুন। বর্তমানে এরা প্রত্যেকে আইসোলেশন থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ আরও দুই শিক্ষক মুসুদা আক্তার ও শারমিন আকতারের দেয়া নমুনা টেস্টে নেগেটিভ এসেছে বলে জানা গেছে। জানা গেছে, সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ মামুন, মাহজুবা ও শারমিন আহমেদ একটি এনজিওর পক্ষ থেকে ওই স্কুলে পাঠদান করেন।
করোনা আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে থাকা সহকারী শিক্ষক কাজী নাসরিন আকতার মুঠোফোনে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, করোনার উপসর্গ নিয়ে চলতি মাসের ১০ জানুয়ারি একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নমুনা দেন সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ মামুন। পরের দিন ১১ জানুয়ারি বিদ্যালয়ে এসে জানতে পারি তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। তাই ওই দিন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহজুবা, শারমিন আহমেদ ও সুপ্তি সরোয়ারের নমুনায় দেন এবং তার পরদিন তাদেরও পজেটিভ আসে। এর পরদিন আমি (কাজী নাসরিন আকতার) ও সহকর্মী নুর সাহেদ রহিমের দেয়া নমুনায়ও করোনা পজেটিভ আসলে আমরা সবাই কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আমার আইসোলেশনে যাই।
এদিকে, নাম প্রকাশ না শর্তে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, বিদ্যালয়ের মোট নয়জন শিক্ষকের মধ্যে ছয়জন শিক্ষকই করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। করোনার ঝুঁকি নিয়ে সন্তানকে প্রতিদিন স্কুলে পাঠাচ্ছি। তবে শিক্ষক করোনা আক্রান্ত হওয়ার কারণে তাদের শ্রেণি কার্যক্রম ঠিকভাবে হচ্ছে না। তাই বিষয়টির নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বেশ সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে মনে করছি।
অন্যদিকে, হাটহাজারী উপজেলার আরও দুইটি বিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষকের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে বালুচরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষক এবং দক্ষিণ পাহাড়তলী অলি আহমদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক রয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল হামিদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দক্ষিণ পাহাড়তলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষকের মধ্যে সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ মামুন, মাহজুবা ও শারমিন আহমেদ টিচ ফর বাংলাদেশ নামে একটি এনজিও থেকে ওই বিদ্যালয়ে পাঠদান করেন। এছাড়া অন্য দুই বিদ্যালয়ের করোনা আক্রান্ত শিক্ষকদের মধ্যে একজন সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অন্য দুইজন টিচ ফর বাংলাদেশ নামে একটি এনজিও থেকে পাঠদান করতে আসা শিক্ষক। বর্তমানে সবার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল এবং সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে নিজ নিজ বসায় আইসোলেশনে রয়েছেন।