নওগাঁর রানীনগর উপজেলার ৩১নং লক্ষ্মীকোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে মাত্র একজন শিক্ষক দিয়ে। যেদিন শিক্ষা অফিসে শিক্ষকদের মিটিং থাকে, সেদিন বাধ্য হয়েই কখনও স্কুলের নৈশপ্রহরী আবার কখনও প্রতিবেশীদের ডেকে পাঠদান করানো হয়। দীর্ঘদিন ধরে এমন পরিস্থিতি চলার ফলে ভেঙে পড়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম।
উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার আলো বিস্তারের লক্ষ্যে এলাকার শিক্ষানুরাগী ও সচেতন মহল ১৯১০ সালে উপজেলার লক্ষ্মীকোলা গ্রামে বিদ্যালয়টি স্থাপন করে। একপর্যায়ে সেটি সরকারীকরণ করা হয়।
২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি লক্ষ্মীকোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন আব্দুল হালিম। এরপর থেকেই তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ওই সময় বিদ্যালয়ে মাত্র তিনজন শিক্ষক ছিলেন। ২০২০ সালের অক্টোবরে পবিত্র মণ্ডল নামে একজন সহকারী শিক্ষক চাকরি ছেড়ে একটি ব্যাংকে যোগদান করেন। এরপর থেকে দু'জন শিক্ষক দিয়ে চলছিল স্কুলের কার্যক্রম। এরই মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে অন্য সহকারী শিক্ষক ফারজানা আক্তার দেড় বছরের জন্য ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড) ট্রেনিংয়ে চলে যান। এরপর থেকে শিক্ষক আব্দুল হালিম দাপ্তরিক কাজসহ শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে আসছেন একাই।
শিক্ষক হালিম বলেন, 'বর্তমানে বিদ্যালয়ে ৬১ শিক্ষার্থী রয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে ওয়ার্কসিট তৈরি করে শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া, আবার সেগুলো নিয়ে আসা, খাতা মূল্যায়ন এবং অফিসের নানাবিধ কাজ করে হাঁপিয়ে উঠেছি। একটি প্রতিষ্ঠানে যে পরিমাণে কাজকর্ম থাকে, তাতে কোনোভাবেই একজনের পক্ষে এসব কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। বিদ্যালয়ে শিক্ষক চেয়ে শিক্ষা অফিস বরাবর আবেদন করেছি। জানি না কবে নাগাদ শিক্ষক পাব।'
স্থানীয়রা বলছেন, এমনিতেই করোনার কারণে দীর্ঘদিন স্টু্কল বন্ধ থাকায় শিক্ষাব্যবস্থা ভেড়ে পড়েছে, এর মধ্যে আবার শিক্ষক সংকট। এভাবে আর কিছুদিন চলতে থাকলে এই বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষার্থী থাকবে না। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষাব্যবস্থাকে সচল করতে সংশ্নিষ্টদের প্রতি দাবি জানিয়েছেন তিনি।
রানীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাসার সামছুজ্জামান বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকটের কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আসা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যেই এ সংকটের অবসান হবে।