স্কুল মাঠে মনের আনন্দে খেলছে একদল ছাত্রী। আরেক দল শিক্ষার্থী স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস করছে। অনেক দিন পর স্কুল খোলায় শিক্ষর্থীরা আনন্দিত। এ দৃশ্য মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর সিদ্বেশরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের। অনেক দিন পর স্কুলে ফিরতে পেরে তার খুবই ভালো লাগছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে দ্বিতীয় ধাপে এক মাস এক দিন সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের পর মঙ্গলবার দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সশরীর ক্লাস শুরু হয়েছে। প্রথম দফায় খুলেছে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। আগামী ২ মার্চে খুলবে প্রাথমিক বিদ্যালয়।
প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকরা জানান, স্বাস্থবিধি মেনে প্রতিষ্ঠানের ক্লাস চলছে। এসএসসি পরীক্ষার্থী ও নতুন করে দশম শ্রেণিতে ওঠা শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ছয় দিন ক্লাস নেয়া হবে। আর অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সপ্তাহে দুদিন এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সপ্তাহে এক দিন করে সশরীর ক্লাস হবে।
প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা শেখ রাইসুল আলম ময়না জানান, ক্লাসে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে সব ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুসারে সব প্রস্তুতি নিয়ে ক্লাস শুরু হয়েছে। অভিভাবকদের স্কুলের সামনে ভির না করার অনুরোধ জানান তিনি।
করোনার কারণে ঘরবন্দী জীবন শেষে নিজনিজ বিদ্যালয়ে ফিয়ে অন্য শিক্ষার্থীরাও খুশি। রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল ঘুরে দেখা গেছে, বিদ্যালয়গুলোতে খুব একটা ভিড় নেই। সব শ্রেণিতে প্রতিদিন সশরীর ক্লাস হচ্ছে না।
এখন শুধু এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী ও নতুন করে দশম শ্রেণিতে ওঠা শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ছয় দিন ক্লাস হবে। অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সপ্তাহে দুদিন এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সপ্তাহে এক দিন করে সশরীর ক্লাস হবে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে যে শিক্ষার্থীরা করোনার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে, তারাই কেবল শ্রেণিকক্ষে যেতে পারছে। এ ছাড়া ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া যে শিক্ষার্থীদের বয়স এখনো ১২ বছরের কিছু কম, তারা আপাতত অনলাইনে ক্লাস করবে।
রাজধানীর স্কুল কলেজগুলোর শিক্ষকরা জানান, তারা সশরীরে ক্লাসের পাশাপাশি অনলাইনেও ক্লাস নিচ্ছেন। যেদিন স্কুলের যেক্লাসের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস নেই সেদিন সে ক্লাসের শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস নেয়া হচ্ছে।
দেশে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত (১২ বছরের বেশি বয়সী) মোট শিক্ষার্থী প্রায় ১ কোটি ২৮ লাখ। গত সপ্তাহের শেষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছিলেন, শিক্ষার্থীর মধ্যে এক কোটি ২৬ লাখ ৫৭ হাজার শিক্ষার্থী প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে ৩৪ লাখ ৫০ হাজার শিক্ষার্থী। কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাসে পাঠদান পরিচালনা করতে হবে। এ বিষয়ে কোনো ধরনের ছাড় দেয়া হবে না।
করোনার সংক্রমণের কারণে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ মার্চ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছিল সরকার। দীর্ঘ ১৮ মাস পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছিল। কিন্তু নতুন করে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ২১ জানুয়ারি থেকে আবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিলো, গতকাল সোমবার যা শেষ হয়েছে।