ভারতে বসবাসকারী শিক্ষক বিশ্বনাথ দত্তের স্বাক্ষর জাল করে বেতন উত্তোলন কা-ের রেশ না কাটতেই এবার শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে পাবনার বেড়া উপজেলার মাশুন্দিয়া-ভবানীপুর কেজেবি ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুস ছালাম বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। নীতিমালা বহির্ভূতভাবে কাগজপত্র জালিয়াতি করে ব্যাকডেটে শিক্ষক নিয়োগের প্রমাণ মিলেছে তার বিরুদ্ধে।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, কেজেবি ডিগ্রি কলেজে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে তিন শিক্ষক কর্মরত ছিলেন। তাদের মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিকের সহকারী অধ্যাপক আবদুস সাত্তার প্রথম, ডিগ্রি স্তরের প্রভাষক নাছরিন নাহার দ্বিতীয় এবং ডিগ্রি স্তরের প্রভাষক মীর শামসুদ্দোহা তরুণ তৃতীয় শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৯ সালের ৯ আগস্ট আবদুস সাত্তার অবসরে যান। তখন নাছরিন নাহারকে রেজল্যুশনের মাধ্যমে প্রথম শিক্ষক হিসেবে সমন্বয় করা হয়। আর মীর শামসুদ্দোহাকে তৃতীয় শিক্ষক হিসেবেই রাখা হয়।
মীর শামসুদ্দোহা তরুণ অভিযোগ করে বলেন, ‘নাছরিন নাহার প্রথম স্থানে চলে যাওয়ায় দ্বিতীয় শিক্ষক হিসেবে আমাকে সমন্বয় করার জন্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে অনুরোধ করি। কিন্তু অধ্যক্ষ এর বিনিময়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। তা দিতে অপারগতা জানালে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নানাভাবে চাপ দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে টাকা না দিলে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন, নয়তো বিভিন্নভাবে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। পরে ২০২০ সালের শুরুতে আমি চাকরি ছাড়তে বাধ্য হই।’
অরও পড়ুন: শিক্ষক থাকেন ভারতে চাকরি করেন পাবনায়
শামসুদ্দোহা অব্যাহতি নিলে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি কলেজ থেকে ব্যবস্থাপনা বিষয়সহ মোট ৫টি বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের চাহিদা পাঠানো হয় এনটিআরসিএ’র কাছে। কিন্তু পরবর্তীকালে ব্যবস্থাপনা বিষয়ের একজন শিক্ষকের সন্ধান পাওয়ার পর ওই চাহিদা অনলাইন থেকে বাতিল করে ব্যাকডেটে (পূর্বের তারিখে) শামসুন নাহার নামে একজনকে ৮ লাখ টাকার বিনিময়ে ডিগ্রি স্তরের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ সময় তৎকালীন অধ্যক্ষ আবদুল গণির সিল-স্বাক্ষর জাল করা হয়।
এ বিষয়ে তৎকালীন অধ্যক্ষ আবদুল গণি বলেন, ‘কেউ চাকরি থেকে অব্যাহতি নিলেও তার স্থানে অন্য কাউকে নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ কলেজ কর্তৃপক্ষের নেই। বর্তমানে নিয়োগ হচ্ছে সরকারিভাবে।’
অভিযোগের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুস ছালাম বলেন, ‘কলেজে আমি একক কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। যা কিছু হয়েছে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তে হয়েছে। এর বেশি আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়।’
এর আগে স্বাক্ষর জাল করে ভারতে অবস্থানকারী এক শিক্ষকের বেতন উত্তোলন বিষয়ে গত ৮ আগস্ট দেশ রূপান্তরে সংবাদ প্রকাশ হলে আলোচনায় আসেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুস ছালাম বিশ্বাস।