নতুন সুপারিশ পাওয়া পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের আলোকে জারি করা তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে বয়স শিথিল করে শিক্ষক হওয়ার সুযোগ পেলেও সমন্বয়হীনতার গ্যাঁড়াকলে তাদের এমপিওভুক্তি আটকে গেছে। নিয়োগ সুপারিশ পেলেও যোগদান করার পর তাদের এমপিওর আবেদন অগ্রায়ন করা হচ্ছে না। রায়ের কপি না পাওয়ার অযুহাতে বিভিন্ন স্কুল ও মাদরাসায় নতুন নিয়োগ পাওয়া পয়োত্রিশোর্ধ্ব নতুন শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির আবেদন রিজেক্ট করে দেয়া হচ্ছে। চলতি মার্চ মাসেও এমপিওভুক্তির আবেদন করা মাদরাসা শিক্ষকদের আবেদন রিজেক্ট করে দেয়া হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে এমপিওভুক্তির দাবিতে রাজপথে নামছেন পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব নতুন শিক্ষকরা।
আগামীকাল মঙ্গলবার রাজধানীর নিউ বেইলি রোডে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে এমপিওভুক্তির দাবি জানাবেন পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব নতুন শিক্ষকরা। সোমবার তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রার্থীরা বলছেন, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জুন জারি করা এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক পদে নিয়োগের সর্বোচ্চ বয়স নির্ধারণ করা হয়। এরপর থেকে ৩৫ বছরের বেশি বয়সী প্রার্থীরা শিক্ষক পদে সুপারিশ পাননি। পরে প্রার্থীরা আইনি লড়াইয়ে নামেন। হাইকোর্ট এসব প্রার্থীকে বয়সশিথিলের পক্ষে রায় দিলে আপিল করে এনটিআরসিএ। সর্বশেষ আপিল বিভাগের একটি রায়ে বয়স নির্ধারণ করে ওই এমপিও নীতিমালা জারির আগে নিবন্ধন সনদ অর্জন করা প্রার্থীদের শিক্ষক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সশিথিল রাখার নির্দেশনা আসে। সে অনুযায়ী ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ মার্চ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জুনের আগে যারা নিবন্ধন সনদ অর্জন করেছেন তাদের বয়সশিথিল করে আবেদন নেয়া হয়। এসব প্রার্থীকে শিক্ষক পদে সুপারিশ করে এনটিআরসিএ। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ের কপি না পাওয়ার অযুহাত দেখিয়ে অনেক প্রার্থীরই এমপিওভুক্তি বাতিল করে দেয়া হচ্ছে।
তারা বলেন, পরপর দুই মাস মাদরাসা শিক্ষকদের ফাইল রিজেক্ট করে দেয়া হয়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষকদেরও ফাইল রিজেক্ট হয়েছে। জাতীয় মেধাতালিকা অনুসারে নিয়োগ সুপারিশ করায় অনেক শিক্ষক নিজ জেলার বাইরে নিয়োগ সুপারিশ পেয়েছেন। আদালতের সিদ্ধান্ত অনুসারে ৩৫ বছরের বেশি বয়সী প্রার্থীরা শিক্ষক হতে আবেদনের সুযোগ পেলেও এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না।
প্রার্থীরা আরও বলেন, দূর দূরান্তের প্রার্থীরা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ক্লাস নিলেও এমপিওভুক্ত হতে না পেরে আর্থিক জটিলতায় পড়েছেন। তাদের জন্য অন্য এলাকায় থেকে শ্রেণিকার্যক্রম চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই তারা জটিলতা নিরসনে দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব নতুন শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির জটিলতা নিরসনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের লিখিত নির্দেশনা প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান এনামুল কাদের খান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছেন, পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব শিক্ষকদের এমপিও জটিলতা নিরসনে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরগুলোর সঙ্গে কথা বলেছেন।