এমপিওর আবেদন করা স্কুল-কলেজের সব তথ্য যাচাই হচ্ছে - দৈনিকশিক্ষা

এমপিওর আবেদন করা স্কুল-কলেজের সব তথ্য যাচাই হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আবেদনে দেওয়া তথ্য ও কাগজপত্রে অস্পষ্টতা দেখতে পাচ্ছেন বাছাই কমিটির সদস্যরা ৷ আর গত এমপিওভুক্তিতে ভাড়াবাড়ির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষার্থী এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের নামের প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দুঃস্মৃতি তাড়া করে ফিরছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে। সার্বিক বিবেচনায় এমপিওভুক্তির আবেদন করা স্কুল-কলেজগুলোর সব তথ্য যাচাই-বাছাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। ইতোমধ্যে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সূত্র বলছে, ভাড়া বাড়িতে চলা ও জমি সংক্রান্ত ঝামেলায় থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি এড়াতে সব জেলা প্রশাসকের কাছে স্কুল কলেজগুলোর জমি সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে। আর প্রতিষ্ঠান একাডেমিক স্বীকৃতি শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা যাচাইয়ে শিক্ষা বোর্ডগুলোর কাছে তথ্য চেয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। আর ডিগ্রি কলেজগুলোর অধিভুক্তির তথ্য চেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। 

সর্বশেষ ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে ২ হাজার ৭০০টির বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করে সরকার। তখন নিজস্ব জমি না থাকা ও ভাড়া বাড়ির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছিল। এমপিওভুক্তির প্রাথমিক তালিকায় স্থান পেয়েছিল স্বাধীনতাবিরোধীদের নামে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। এছাড়া স্বীকৃতি ও স্বীকৃতির মেয়াদ সংক্রান্ত কাগজপত্রে ঝামেলা থাকা অনেক প্রতিষ্ঠান এ তালিকায় ছিল। এসব বিষয় নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল দেশের শিক্ষা বিষয়ক ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিক শিক্ষা ডটকম। তা নিয়ে সারাদেশে সমালোচনা শুরু হলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংবাদ সম্মেলন করে এর ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য চূড়ান্তভাবে এমপিওভুক্তির তালিকায় বেশকিছু প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে দুঃস্মৃতি এড়াতেই এবার আগেভাগেই তথ্য যাচাইয়ে মন্ত্রণালয়ের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা এসেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এমপিওর যাচাই কমিটিতে থাকা এক কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, গতবার জটিলতা থাকায় বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির প্রাথমিক তালিকায় স্থান পেয়েছিল। এরপর আপনারাই (দৈনিক শিক্ষাডটকম) এ বিষয়ে অনেক লেখালেখি করেছিলেন। সে ধরনের জটিলতা এড়াতে তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। আমরা চাই এবারের এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া নিয়ে যাতে কোনো রকম কোনো প্রশ্ন না ওঠে। তাই তথ্য যাচাই করে দেখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের আগে তথ্য পাঠানোর সময় যাতে কোনো নির্ভুল তথ্য দেয়া যায় তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। সার্বিকভাবে তথ্য সঠিকভাবে যাচাইয়ে মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, আবেদন যাচাই করতে গিয়ে আমরা দেখছি অনেক প্রতিষ্ঠান দেওয়া তথ্য ও সংশ্লিষ্ট প্রমাণক কাগজপত্র অস্পষ্ট। ঘুষ লেনদেন করে বোর্ড থেকে তথ্য বানানো হয়েছে। তাই তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। ভাড়া বাড়িতে থাকা প্রতিষ্ঠান যাতে এমপিওভুক্ত না হয়ে যায় তা এড়িয়ে যেতে সব জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি পাঠিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর জমি সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে। স্কুল, স্কুল এন্ড কলেজ, কলেজ এবং ডিগ্রি কলেজগুলো নিজস্ব জমিতে প্রতিষ্ঠাকে না নিজস্ব জমিতে পাঠদান করছে কিনা, নিজস্ব জমির পরিমাণ কত তা জানতে চাওয়া হয়েছে। গত ১৫ ডিসেম্বর আমরা ৬৪ জেলার ডিসিদের কাছে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। এছাড়া ডিসিদের টেলিফোন করেও এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। তারা ইতোমধ্যে তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছেন।

তিনি দৈনিক আমাদের বার্তাকে আরও জানান, এছাড়া প্রতিষ্ঠান একাডেমিক স্বীকৃতি ও স্বীকৃতি নবায়ন সঠিক আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে নয়টি সাধারণ ধর্ম শিক্ষা বোর্ডের কাছে তথ্য চেয়েছি। ১৫ ডিসেম্বর বোর্ডগুলোর কাছে এসব তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আর ডিগ্রি কলেজ গুলোর অধিভুক্তি এবং অধিভুক্তি নবায়ন কবে পর্যন্ত আছে তা জানতে চেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা চাচ্ছি সম্পূর্ণ নিষ্কণ্টকভাবে এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে। মাঠ পর্যায় থেকে তথ্য এসে পৌঁছালে তা সারসংক্ষেপ আকারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া আমরা শেষ করতে পারবো।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার এমপিও পেতে সারাদেশের আট হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। এর মধ্যে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অন্তত সাড়ে ছয় হাজার। বাকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো স্তর পরিবর্তনের আবেদন করেছে। এখন চলছে আবেদন যাচাই-বাছাই। 

এ মুহূর্তে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা সারাদেশে সাড়ে আট হাজারের বেশি। এসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ৮৭ হাজার শিক্ষক ও কর্মচারী নতুন এমপিওভুক্তির আশায় বুক বেঁধেছেন। এমপিওভুক্ত হওয়া বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে মাসে সরকারি বেতন স্কেলের মূল অংশ ও এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া আর ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পেয়ে থাকেন। এর বাইরে দুই ঈদে শিক্ষকরা মূল বেতনের ২৫ শতাংশ আর কর্মচারীরা ৫০ শতাংশ উৎসব ভাতা পান। আবেদন নেওয়ার জন্য এরই মধ্যে তিন ক্যাটাগরিতে আবেদন বাছাই শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি। নতুন এমপিও নীতিমালা অনুসারে আবেদন যাচাই-বাছাই চলছে।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0068881511688232