বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুসারে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের সরাসরি নিয়োগের পূর্বে শূন্য পদের বিপরীতে এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে বদলি নীতিমালা প্রণয়ন না করার ঘটনাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবেনা মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সাথে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুসারে শিক্ষক-কর্মচারীদের সরাসরি নিয়োগের পূর্বে শূন্য পদের বিপরীতে এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে বদলি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না তার জবাবও রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের সচিব, এনটিআরসিএ চেয়ারম্যানসহ মোট ছয়জনকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
এমপিওভুক্ত কয়েকজন শিক্ষকের দায়ের করা একটি রিট পিটিশনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বুধবার (২ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো: রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ বিবাদীদের প্রতি এ রুল জারি করেন।
রিটকারীদের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল অরবিন্দু কুমার রায়।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা’র ১২ অনুচ্ছেদ অনুসারে সরকার এমপিওভুক্ত শিক্ষক,কর্মচারীদের প্রয়োজনবোধে নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে বদলির করতে পারবে মর্মে উল্লেখ করা রয়েছে।
স্কুল ও কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবলকাঠামো ও এম.পি.ও নীতিমালায় ভিন্ন ভিন্নভাবে এক ও অভিন্ন অনুচ্ছেদে এমপিওভুক্ত শিক্ষক,কর্মচারীদের প্রয়োজনবোধে নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে বদলির করতে পারবে বলে বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু বিগত ১৯৯৫, ২০১০, ২০১৮, ও ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা প্রণয়ন করলেও পৃথক বদলি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়নি। তাই কয়েকজন শিক্ষক রিট পিটিশন দাখিল করলে আদালত এই রুল জারি করেন।
এদিকে দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে জানা যায়, পূর্বের অভিজ্ঞতায় দেখে গেছে সরকার এইসব রুলের জবাব দিতে সময় নেয়। তারপর জবাব দেবে। জবাবে যদি আদালত সন্তুষ্ট হয় রিটের কার্যকরিতা সেখানেই শেষ। সেক্ষেত্রে লাখ লাখ টাকা খরচ করে রিট করার ফল শূন্য হয়। তবুও সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে মানুষ রিট করে থাকে।
এই বদলির বিষয়ে এর আগেও কয়েকবার রিট করা হয়েছে। একইভাবে রুলও হয়েছে।
শুধু গত কয়েকবছরে এনটিআরসিএর মাধ্যমে সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্তদের জন্য একটি নীতিমাল তৈরির কাজ শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যারা কমিটির মাধ্যমে এবং নিবন্ধন ছাড়া শিক্ষক পদে কর্মরত তাদের জন্য নয়। নীতিমালা এই খবরটি ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে সর্বপ্রথম দৈনিক শিক্ষায় প্রকাশিত হয়। এরপরপরই কয়েকজন চিহ্নিত শিক্ষক বিষয়টি নিয়ে ‘ক্রেডিট’ নেয়ার প্রতিযোগীতায় নামে। তারা ফেসবুকে মাঠ গরম করছেন। রুল, আদেশ ও রায় আলাদা বিষয়, আলাদা গুরুত্ব। কিন্তু কতিপয় রিটখোর শিক্ষক ও আইনজীবী রিট করার পর জারি করা রুলকে রায় হিসেবে প্রচার করে সাধারণ শিক্ষকদের বিভ্রান্ত করে আসছেন। একটি রিটে সবমিলিয়ে হাজার দশেক টাকা খরচ হলেও লাখ লাখ টাকা তোলা হয়। এমন কয়েকডজন উদাহরণ ও তথ্যপ্রমাণ দৈনিক শিক্ষার হাতে রয়েছে।
এমপিও শিক্ষকদের প্রাণের ও যৌক্তিক দাবি বদলি নীতিমালার জন্য প্রয়োজন শিক্ষামন্ত্রী-উপমন্ত্রী ও সচিবদের সঙ্গে গ্রহণযোগ্য শিক্ষক নেতাদের একাধিক বৈঠক ও জোর দাবি উত্থাপন। কিন্তু গত আড়াই বছরে কোনো বেসরকারি শিক্ষক নেতাই শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করেননি। শুধু সংবাদপত্রে বিবৃতি ও ফেসবুলে লেখালিখি করেছেন। আর কয়েকজন স্বঘোষিত শিক্ষক নেতা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ও পিয়নদের সঙ্গে দেখা করে ফেসবুকে সেলফি প্রচার করে বেড়াচ্ছেন। সাধারণ শিক্ষকরা স্বঘোষিত এসব নেতাদের সেলফিবাজী ও ফেসবুক যুদ্ধের কাণ্ড দেখে যারপরনাই বিরক্ত।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।