সিলেটের সরকারি এমসি কলেজে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপারকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যাবস্থা নিতেও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২ জুন) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আরও পড়ুন : এমসি কলেজে ধর্ষণ : শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তার শাস্তি হচ্ছে
গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর এমসি কলেজে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
গণধর্ষণের ঘটনা অনুসন্ধানে যৌথ কমিটি গঠন করেন হাইকোর্ট। চার সদস্যের কমিটিতে ছিলেন, সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ মো. বজলুর রহমান, অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মমিনুন নেসা, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাশেম ও সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন সুলতানা। পরে অনুসন্ধান কমিটি হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
প্রতিবেদনে বলা হয়, সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় হোস্টেল সুপার ও প্রহরীদের দায়িত্বে অবহেলা ছিল। তাই প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে এমসি কলেজের অধ্যক্ষও কোনোভাবেই ওই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না। গণধর্ষণের পেছনে মূলত হোস্টেলের বর্তমান তত্ত্বাবধায়কেরা, হোস্টেলের মূল গেটের ডে গার্ড, ৫ নম্বর ব্লকের ডে গার্ড ও নাইট গার্ড (নৈশপ্রহরী) এবং ৭ নম্বর ব্লকের ডে গার্ড ও নাইট গার্ডের দায়িত্বে অবহেলা ছিল।
গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে এমসি কলেজে বেড়াতে আসেন এক নারী। এ সময় ক্যাম্পাস থেকে কয়েকজন ছাত্র তাকে স্বামীসহ কলেজ ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে যান। পরে তারা স্বামীকে বেঁধে মারধর করে গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী সেদিন (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেন। মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি করা হয় ছয়জনকে। সেই সঙ্গে অজ্ঞাতনামা আরও দুই-তিনজনকে আসামি করা হয়।
আসামিরা হলেন এম সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেক আহমদ, অর্জুন লস্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান। তারা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
আসামিদের মধ্যে তারেক ও রবিউল বহিরাগত। বাকিরা এমসি কলেজের ছাত্র। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব আসামিকে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।