মাদরাসায় ছেলেশিশুদের ওপর যৌন হয়রানির ঘটনা বেশি ঘটে। যার মধ্যে বেশির ভাগই কওমি ধারার মাদরাসা। সেখানকার বেশির ভাগ শিক্ষার্থী দরিদ্র হওয়ায় দুর্বৃত্তরা সুযোগ নেয়। এমন মন্তব্য করেছেন মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা কাডার কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন।
তিনি বলেন, দেশে কী পরিমাণ মাদরাসা থাকবে, তার একটা জরুরি নিয়ম করা উচিত। সরকারি মাদরাসাগুলো সরকার একটা ব্যবস্থার মধ্যে আনতে চাইলেও তা পরাহত অবস্থায় আছে। কওমি মাদরাসা ইস্যু কেন যেন ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। যে কেউ চাইলেই কওমি মাদরাসা করতে পারবে না, এমন একটা কঠোর নিয়ম থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় বক্তারা তিনি এসব কথা বলেন।
‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশু যৌন নির্যাতন বন্ধে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনায় মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের কো-অর্ডিনেটর অর্পিতা দাশ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, এ বছর জানুয়ারি থেকে মার্চে ২০ জন শিশু যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে। এ সময় খোলা থাকা কিছু মাদরাসা, কলেজ ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসব ঘটেছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, স্কুলে, মাদরাসায় শিশু ধর্ষণের যে ঘটনা ঘটে, বাস্তবে সে সংখ্যা আরও বেশি। তিনি বলেন,(শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে) কওমি মাদরাসা নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সেটাই উদ্বেগের।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ আউয়াল হাওলাদার বলেন, নির্যাতন রোধে পরিবার থেকে নৈতিক শিক্ষা চালু করতে হবে, যা পরে রাষ্ট্রে ছড়িয়ে যাবে। মাঠপর্যায়ে এসব ঘটনা ঘটে। তাঁদের সঙ্গে কেন্দ্রের যোগাযোগ নেই। মাঠ প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে সচেতনতামূলক বক্তব্য ও চিন্তাচেতনা পৌঁছে দিতে হবে।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রকাশনা নিয়ন্ত্রক রিয়াদ চৌধুরী বলেন, মাদরাসা সম্পর্কে একটা ধারণা স্পষ্ট করা দরকার। দুটো ধারা আছে—আলিয়া ও কওমি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে (ধর্ষণের ঘটনা) কওমি মাদরাসায় ঘটছে। তিনি বলেন, শিশুদের প্রতি যৌন নির্যাতন বন্ধে প্রতিষ্ঠান, অভিভাবক, সিভিল সোসাইটির সমন্বিত উদ্যোগ দরকার। এ ক্ষেত্রে পর্নোগ্রাফি পুরোপুরি বন্ধ করে নৈতিক অবনমন কমাতে হবে। পাশাপাশি কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ চলবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জিরো টলারেন্স নীতি মেনে চলতে হবে।