কমবে আমেরিকান স্কলারশিপ - দৈনিকশিক্ষা

কমবে আমেরিকান স্কলারশিপ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট আমেরিকায় এফ-১ ভিসা নিয়ে পড়তে আসেন। মাস্টার্স ও পিএইচডি এই দুই পর্যায়ের ডিগ্রি প্রোগ্রামকে একসঙ্গে গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম বলা হয় এবং শিক্ষার্থীরা সাধারণত রিসার্চ অ্যাসিসট্যান্টশিপ (আরএ) ও টিচিং অ্যাসিসট্যান্টশিপের (টিএ) মাধ্যমে ভাতা পেয়ে থাকেন। অ্যাসিসট্যান্টশিপের বাইরে মেধা বা গবেষণার কৃতিত্বের পুরস্কার হিসেবে বিশেষ বৃত্তি বা ফেলোশিপের মাধ্যমেও অনেকে আর্থিকভাবে উপকৃত হয়ে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক-অধ্যাপকেরা বিভিন্ন ফান্ডিং এজেন্সির কাছ থেকে যে গবেষণা তহবিল পেয়ে থাকেন, তার উল্লেখযোগ্য অংশ ব্যয় হয় তাদের ল্যাবের রিসার্চ অ্যাসিসট্যান্ট স্টুডেন্ট এবং পোস্ট ডকের বেতনের পেছনে। এ কারণে বলা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের উৎস, যেমন ফেডারেল রিসার্চ ফান্ডের জোগান কমে গেলে তার প্রভাব ল্যাবের মধ্যে কর্মরত গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্টের রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্টশিপ এবং পোস্ট-ডক নিয়োগের ওপরও পড়তে বাধ্য। মঙ্গলবার (৫ মে) প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও জানা যায়, করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই আমেরিকায় অর্থনৈতিক মন্দার আঁচ করছিলেন। সেই মোতাবেক ব্যয়সংকোচনের কৌশলও গ্রহণ করেছে অনেক পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয়। র‌্যাঙ্কিংয়ে ওপরের দিকের ইউনিভার্সিটিগুলোর ভর্তির আবেদনের ডেডলাইন আগেই শেষ হয়ে যায়। এ কারণে এসব ইউনিভার্সিটি একটু আগেভাগেই তাদের স্কলারশিপের তথ্যগুলো জানিয়ে দেয়। ফান্ডিংসহ অফার লেটার যাঁরা গ্রহণ করে ফেলেছেন, তাঁদের ফান্ডিংয়ে কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা না। কিন্তু ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে অফার লেটার পাঠানো হলেও স্টুডেন্টদের পক্ষ থেকে এখনো গ্রহণ করা হয়নি, এমন পরিস্থিতিতে প্রদত্ত অফার ফিরিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে। আরেকটি উদ্বেগ হলো, মন্দার আশঙ্কায় প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই নতুন শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ আছে।

নতুন শিক্ষকদের সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কিছু স্টার্ট-আপ ফান্ড দেওয়া হয়, যেখান থেকে তাঁরা স্কলারশিপ দিয়ে গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট গ্রহণ করতে পারেন, যেটার পরিমাণ উল্লিখিত কারণে আপাতত কমে গেছে। বিভিন্ন রিসার্চ ল্যাবে এফ-১ ভিসার গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট ছাড়াও জে-১ বা এইচ১বি ভিসায় বিদেশি পোস্ট-ডকও কাজ করে থাকেন। পোস্ট-ডকদের বেতন তুলনামূলকভাবে বেশি; অনেক সময় স্টুডেন্টদের দুই বা তিন গুণ পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ কারণে অনেক প্রফেসরই বাজেট সংকোচনের কৌশল হিসেবে পোস্ট-ডকদের মেয়াদ নবায়ন না করে তা স্টুডেন্টদের পেছনে ব্যয় করেন। মনে রাখতে হবে, প্রফেসরের উদ্দেশ্য থাকে একজন গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্টকে ল্যাবে এনে যত দ্রুত সম্ভব গবেষণা-উপাত্ত উৎপাদন করানো। কেননা, এই উপাত্তনির্ভর গবেষণা প্রস্তাব দিয়েই তাঁরা নতুন ফান্ড আনেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের টেনুরশিপ নিশ্চিত বা ক্যারিয়ারের কলেবর বৃদ্ধি করেন। সুতরাং, করোনা-জর্জরিত মন্দায় সীমিত ফান্ডিংয়ের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহারের উদ্দেশ্যে স্কলারশিপ নির্ধারণের সময় তাঁরাই অগ্রাধিকার পাবেন, যাঁদের ইতিমধ্যে গবেষণায় কিছুটা দখল আছে এবং কিছু মৌলিক গবেষণা প্রকাশ করেছেন।

নতুন ফান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে বায়োমেডিকেল সায়েন্স, বিশেষত ড্রাগ ডেভেলপমেন্ট, ইনফেকশাস ডিজিজ প্রভৃতি পরিমণ্ডলের গবেষণা প্রাধান্য পাবে। তাই বাংলাদেশ থেকে ফার্মেসি, বায়োকেমিস্ট্রি, মাইক্রোবায়োলজি প্রভৃতি বিষয়ের গ্র্যাজুয়েটদের ফান্ডিংসহ ভর্তির সুযোগ বাড়বে। তবে লকডাউনের কারণে বিভিন্ন দেশে মার্কিন দূতাবাস বন্ধ থাকায় সময়মতো ভিসা সংগ্রহ করা এবং ফল (শরৎ) সেমিস্টারে ক্লাস ধরতে পারার বিষয়টা অনেকের জন্যই অনিশ্চিত হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২০ সালের ফল সেমিস্টারে অস্বাভাবিক কম বিদেশি স্টুডেন্ট আমেরিকায় পড়তে আসবেন, এবং ঠিক পরের বছর ফল ২০২১-এ এর পরিমাণ স্বাভাবিকের থেকে অনেক বেশি হবে। আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একাডেমিক ও গবেষণার পরিধি অনেক ব্যাপক, যার ফলে দু-এক মাসের লকডাউনের ধাক্কাও তারা হয়তো বছরখানেকের মধ্যে সামলে উঠে আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারবে। আমেরিকান স্কলারশিপের প্রত্যাশী প্রত্যেক স্টুডেন্টকে সে জন্য অবশ্যই পরবর্তী অ্যাপ্লিকেশন সিজনের জন্য জিআরই ও আয়েল্টস বা টোফেলসহ আনুষঙ্গিক ডকুমেন্টস যেমন ট্রান্সক্রিপ্ট, রেকমেন্ডেশন লেটার ও স্টেটমেন্ট অব পারপাস নিয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে। আর হ্যাঁ, রিসার্চে পারদর্শিতার গুরুত্ব আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন একটু বেশি জোর দিয়েই যাচাই করা হবে।

ড. মামুন রশিদ: সহকারী অধ্যাপক, অ্যাপালাচিয়ান কলেজ অব ফার্মেসি, ভার্জিনিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, প্রধান নির্বাহী, গ্রেক বাংলাদেশ।

পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0064840316772461