কমিটিবিহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়েছেন কয়েক হাজার প্রার্থী। কিন্তু নতুন প্রতিষ্ঠানে যোগদান করার পর এমপিওভুক্তি নিয়ে জটিলতায় পরেছেন ইনডেক্সধারী এসব শিক্ষকরা। যোগদান করতে গিয়ে জানতে পারছেন, আগের প্রতিষ্ঠান থেকে ছাড়পত্র নিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানে যোগদান করলেও আগের প্রতিষ্ঠানে কমিটি না থাকায় এমপিও রিলিজের রেজুলেশনে কে প্রতিস্বাক্ষর করবেন তা বুঝতে পারছেন না। এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই। তাই নতুন প্রতিষ্ঠানে যোগদান করলেও কমিটিবিহীন প্রতিষ্ঠানের এসব ইনডেক্সধারী শিক্ষক রেজুলেশনে প্রতিস্বাক্ষর ছাড়া এমপিওর আবেদন করতে পারবেন না। তাদের এমপিওভুক্তি তাই আটকে আছে। এমন পরিস্থিতিতে কমিটিবিহীন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের এমপিও রিলিজের রেজুলেশনে কে স্বাক্ষর করবেন-সে প্রশ্ন সামনে এসেছে। নতুন সুপারিশ পাওয়া শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমের মাধ্যমে শিক্ষা প্রশাসনের কাছে এ জটিলতা সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে সোমবার দৈনিক শিক্ষাডটকমের পক্ষ থেকে অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারাও এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি। তারা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
নতুন সুপারিশ পাওয়া ইনডেক্সধারী শিক্ষক মুহাম্মদ নুরুল আমিন ও মো. মাসুদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, তারা পটুয়াখালীর সুগান্ধিয়া মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত থেকে ইনডেক্সধারী শিক্ষক হিসেবে তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করে সুপারিশ পেয়েছেন। কিন্তু সুগান্ধিয়া মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিয়মিত কমিটি নেই। ২০১৭ খিষ্টাব্দে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি হওয়া এক নির্দেশনা অনুসারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা প্রতিস্বাক্ষরে তারা ছাড়পত্র নিয়েছেন। কিন্তু নতুন প্রতিষ্ঠানে যোগদানের জন্য এমপিওর আবেদন করতে রিলিজের রেজুলেশন লাগবে। নিয়মিত কমিটি না থাকায় কে রেজুলেশনে স্বাক্ষর করবেন তা নিয়ে বিপাকে আছি।
নতুন সুপারিশ পাওয়া ইনডেক্সধারী শিক্ষক মো. নুরুজ্জামান ও মো. সোহেল রানা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, পটুয়াখালীর বোতলবুনিয়া স্কুল এন্ড কলেজের কর্মরত অবস্থায় নতুন আবেদন করে তারা নতুন সুপারিশ পেয়েছেন। কিন্তু বোতলবুনিয়া স্কুল এন্ড কলেজের কমিটি না থাকায় রিলিজ রেজুলেশনে কে স্বাক্ষর করবেন তা তারা বুঝতে পারছেন না। তারা আরও বলেন, আমরা নিয়মিত চাকরি থেকে আবেদন করেছি। এখন জটিলতা নিরসনের কোনো নির্দেশনা নেই। একটি স্বাক্ষরের জন্য নিজ বাড়ির কাছের প্রতিষ্ঠানে যোগদান করার সুযোগ পেলেও তা করতে পারছি না। কারণ এমপিভুক্ত হতে পারবো না।
এ জটিলতায় থাকা শিক্ষকরা বলছেন, এমপিও নীতিমালার বিধি বিধান অনুসারে তারা নিয়োগ সুপারিশ পেয়েছিলেন। কারণ বদলির ব্যবস্থা এমপিও শিক্ষকদের জন্য নেই। কিন্তু একটি নির্দেশনা না থাকায় শিক্ষকদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। শিক্ষকরা বলছেন, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার প্রতিস্বাক্ষরে তারা যেভাবে যোগদান করতে পারেছি, তারাই যদি রিলিজ রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেন তবে, জটিলতা হবে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কমিটি না থাকা প্রতিষ্ঠানে রিলিজ রেজুলেশনের প্রতিস্বাক্ষরের সুযোগ দেয়া যেতে পারে। এ বিষয়গুলো সমাধান করে দ্রুত পরিপত্র জারি করলে আমাদের জটিলতার সমাধান হবে।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, কমিটিবিহীন প্রতিষ্ঠান থেকে নতুন প্রতিষ্ঠানে যোগদান করার অপেক্ষায় থাকা শিক্ষকদের রিলিজ রেজুলেশনের প্রতিস্বাক্ষরের বিষয়টি নিয়ে সোমবার এমপিও কমিটির এক বিশেষ সভায় আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে এখতিয়ার মন্ত্রণালয়ের। তাই মন্ত্রণালয়ের কাছে এ বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে প্রস্তাব পাঠাবে শিক্ষা অধিদপ্তর। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলে সে অনুযায়ী নির্দেশনা দিয়ে আদেশ জারি করবে অধিদপ্তর।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষা ডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।