কমিটির মেয়াদ শেষ : ৩০ হাজার শিক্ষকের অবসর-কল্যাণ ভাতা অনিশ্চিত - দৈনিকশিক্ষা

কমিটির মেয়াদ শেষ : ৩০ হাজার শিক্ষকের অবসর-কল্যাণ ভাতা অনিশ্চিত

রুম্মান তূর্য |

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড এবং কল্যাণ ট্রাস্টের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ৯ এপ্রিল এ দুই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। ফলে অবসর ও কল্যাণ সুবিধার টাকার অপেক্ষায় থাকা ৩০ হাজারের বেশি প্রবীণ শিক্ষক-কর্মচারী পড়েছেন চরম বিপাকে। কল্যাণট্রাস্টের ফান্ডে প্রায় ২০০ কোটি টাকা থাকলেও  লোকবলের অভাবে আবেদনকারীদের টাকা দিতে পারেনি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবসর ভাতার জন্য হাজার কোটি টাকা অনুদানের সম্মতি দিলেও কমিটি না থাকায় এসব শিক্ষকের পাওনা অর্থ প্রাপ্তির সময় সম্পর্কে কোনো ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না।

দৈনিক আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে জানা গেছে, এ দুই প্রতিষ্ঠানের অর্থাভাব ও দীর্ঘসূত্রিতার কারণে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ ভাতা ঠিকমতো পাওয়া হয় না। অবসরের পর কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর বোর্ডের টাকা পেতে সময় লেগে যায় তিন থেকে চার বছর। এ সময়ে অনেকের মৃত্যু হয়, কেউবা চিকিৎসার অর্থ যোগাড় করতে না পেরে মারাত্মক স্বাস্থ্য সংকটে পতিত হন।

প্রসঙ্গত, অবসরে যাওয়া শিক্ষকদের সুবিধা দিতে ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড গঠন করা হয়। আর ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে কল্যাণট্রাস্ট। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর; মাদরাসা এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ সুবিধা দেয়ার কাজ এই দুই প্রতিষ্ঠানের আওতাভুক্ত। 

গত ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১০ এপ্রিল তিন বছরের জন্য বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা বোর্ডের পরিচালনা কমিটি পুনর্গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তখন কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব করা হয় কারিগরি শিক্ষক নেতা মো. শাহজাহান আলম সাজুকে। অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্য সচিব করা হয় শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদীকে। শাহজাহান আলম সাজু চতুর্থবারের মত ও শরীফ আহমদ সাদী দ্বিতীয়বারের মত এ দুই পরিচালনা কমিটির সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। নতুন কমিটি করার কথা থাকলেও কমিটির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য দুই প্রতিষ্ঠানের সর্বশেষ বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিজেরাই। যদিও তা এখনও চূড়ান্তভাবে সরকারের অনুমোদন পায়নি।  

জানা গেছে, পদাধিকারবলে  এই দুই কমিটির প্রধান থাকেন শিক্ষাসচিব ও দ্বিতীয় প্রধান থাকেন বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্য থেকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। কমিটির অন্য সদস্যরাও বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও মাদাসার শিক্ষক ও কর্মচারী।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকরা বলছেন, এমনিতেই প্রতিষ্ঠান দুটিতে অর্থ সংকটের কারণে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয় অবসর ও কল্যাণ ভাতা পেতে। তারওপর দায়িত্বশীল প্রধান কর্মকর্তার পদ শূন্য থাকলে আরও বেশি ভোগান্তি হবে। আমরা শুনেছি, প্রধানমন্ত্রীর অফিস এক হাজার কোটি টাকা অনুদান দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু কমিটি গঠন না হওয়ায় সেই টাকা কবে হাতে আসবে জানি না। আমরা চাই আমাদের টাকা দ্রুত দেয়া হোক। 

সূত্র বলছে, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর পর্যন্ত ত্রিশ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর অবসর সুবিধার টাকার আবেদন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে। এসব শিক্ষকের টাকা দিতে প্রায় ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা প্রয়োজন। আর কল্যাণট্রাস্টের আবেদন জমা রয়েছে ১৯ হাজারের মতো। 

 অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ভাতার টাকা দিতে শিক্ষামন্ত্রী চলতি বছরের শুরুতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে ১ হাজার কোটি টাকা অনুদান ও জাতীয় বাজেটে ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দসহ মোট ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা চেয়েছিলেন। অপরদিকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সদ্য বিদায়ী সদস্য সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক হাজার কোটি টাকা অনুদান চেয়ে আবেদন করেছিলেন। সে আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গত ২৮ মার্চ পরীক্ষা নিরীক্ষা করে এ টাকা ছাড়ের ব্যবস্থা নিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে চিঠি দেয়। কিন্তু অবসর সুবিধা বোর্ডের কমিটির মেয়াদ না থাকায় অনুদান পেলেও শিক্ষকরা কবে টাকা পাবেন তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। 

অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, প্রায় ৩০ হাজার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কর্মচারীর আবেদন নিষ্পত্তি বাকি। টাকা না থাকায় তাদের আবেদন নিষ্পত্তি করা যাচ্ছিলো না। এখন টাকার ব্যবস্থা হচ্ছে। কিন্তু বোর্ডের মেয়াদ নেই। আশা করি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়ে বোর্ড গঠন করবে। 

পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030319690704346