করোনা : সীমিত ব্যাংকিং কার্যক্রমে ভোগান্তিতে গ্রাহক - দৈনিকশিক্ষা

করোনা : সীমিত ব্যাংকিং কার্যক্রমে ভোগান্তিতে গ্রাহক

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্প খাতের কারখানা খুলে দিয়েছে সরকার। আরো শিল্প-কারখানা খোলার দাবিও জোরালো হচ্ছে। রাজধানীতে স্বল্প পরিসরে দোকানপাটও খুলছে। তবে ব্যাংকিং সেবা ও লেনদেন কার্যক্রম এখনো চলছে সীমিত পরিসরেই। আর এই সীমিত ব্যাংকিং কার্যক্রমে ভোগান্তিতে পড়ছে গ্রাহকরা। বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন জিয়াদুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলাম।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, দেশে করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে লেনদেনের সময় তিন ঘণ্টা কমিয়ে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কম সময়ের কারণে নগদ জমা ও উত্তোলনের মধ্যেই ব্যাংকের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রয়েছে। এতে বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য ঋণপত্র (এলসি) খোলাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় লেনদেন করতে পারছে না গ্রাহকরা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের অর্থনীতির কথা চিন্তা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকার শিল্প-কারখানা খুলছে, কিন্তু ব্যাংকিং সেবার সময়সীমা সীমিত রয়েছে। বৈদেশিক লেনদেনের স্বার্থে ব্যাংকিং সেবার আওতা ও সময়সীমা বাড়ানো প্রয়োজন। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা বলছে, ভোগান্তি কমাতে সপ্তাহের পাঁচ দিনই ব্যাংকের শাখা খোলা রাখা উচিত। সেই সঙ্গে লেনদেনের সময়সীমাও বাড়াতে

হবে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারঘোষিত সাধারণ ছুটি শুরুর সময় থেকে এখন পর্যন্ত সীমিত পরিসরে চলছে ব্যাংকের কার্যক্রম। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, বাণিজ্যিক এলাকা বাদে অন্যান্য এলাকায় ব্যাংকগুলো দূরত্ব বিবেচনায় শাখা খোলা রাখতে পারবে। ফলে কোন সপ্তাহে কোন এলাকায় কোন ব্যাংকের শাখা খোলা থাকছে, সেটি জানতে পারছে না গ্রাহকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী শাখা খোলা রাখার পরিমাণ কমিয়েছে ব্যাংকগুলো। দৈবচয়নের ভিত্তিতে কিছু শাখা খোলা রেখেছে আবার কিছু শাখা বন্ধ রাখা হয়েছে। ব্যাংকিং সেবা এখন টাকা জমা ও উত্তোলনে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। কোনো কোনো ব্যাংক অন্যান্য কার্যক্রমও সচল রেখেছে। তবে সেটা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। দূরত্ব বিবেচনায় কোনো এলাকায় সপ্তাহে দুই দিন, আবার কোনো এলাকায় তিন দিন করে খোলা থাকছে ব্যাংক। কোথাও কোথাও এলাকাভিত্তিক শাখা পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে আমানতকারী ও ঋণগ্রহীতা উভয়ই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, বর্তমানে বাণিজ্যিক এলাকায় ব্যাংক লেনদেনের সময়সূচি সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা। এ ছাড়া শিল্পাঞ্চলসহ অন্যান্য সব এলাকায় ব্যাংক লেনদেনের সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। ব্যাংক খোলা ও লেনদেনের এই ভিন্ন সময়সূচিতেও বিভ্রান্তিতে পড়ছে গ্রাহকরা।

তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘কারখানা খুললেও এখনো ব্যাংক সেবা সীমিত রয়েছে। কুরিয়ার ও চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমও সীমিত। এতে বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজে সমন্বয়হীনতা তৈরি হয়েছে। ফলে কারখানা খোলার সুফল পাচ্ছেন না এই খাতের উদ্যোক্তা ও মালিকরা।’ ব্যাংকের সেবা বাড়ানো ও দ্রুত করা উচিত উল্লেখ করে তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমও বাড়ানোর পরামর্শ দেন।

ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, আবাসিক বা অন্য এলাকার চেয়ে বাণিজ্যিক এলাকার ব্যাংকের শাখাগুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ বিবেচনায় গত রবিবার থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক এলাকায় ব্যাংক লেনদেনের সময়সূচি এক ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে এসব এলাকায় সব ব্যাংকের সব শাখা খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ঢাকার মতিঝিল ও দিলকুশা এবং চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ও আগ্রাবাদের সব ব্যাংকের শাখা খোলা রাখার নির্দেশনা দিয়ে গত ২৪ এপ্রিল সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী গত রোববার থেকে এসব এলাকায় সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত লেনদেন চালু রয়েছে। পাশাপাশি এসব শাখায় এখন ঋণ মঞ্জুরি ও ঋণ বিতরণ কার্যক্রম চালু রাখার কথাও বলা হয়েছে।

প্রধান এ দুটি বাণিজ্যিক এলাকা ছাড়া দেশের অন্য এলাকায় সীমিত আকারে ব্যাংকগুলো খোলা রাখার আগের নির্দেশনা কার্যকর রয়েছে। আগের নির্দেশনা অনুযায়ী শিল্পাঞ্চলসহ অন্যান্য সব এলাকায় ব্যাংকের শাখা সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত গ্রাহক লেনদেন করতে পারবে। পাশাপাশি করোনার কারণে সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন যেসব এলাকা লকডাউন করবে, ওই এলাকাগুলোর সব ব্যাংকের সব শাখা বন্ধ থাকবে। তবে বন্দরসংশ্লিষ্ট শাখাগুলোতে লেনদেন হচ্ছে ২৪ ঘণ্টা। 

সাধারণ ছুটির মধ্যেও যেসব ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন তাঁদের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে পদমর্যাদার ভিত্তিতে তাঁদের পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকার স্বাস্থ্য বীমা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দায়িত্ব পালনের কারণে করোনা আক্রান্ত হয়ে কোনো ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীর মৃত্যু হলে বিশেষ স্বাস্থ্য বীমার জন্য নির্ধারিত অংকের পাঁচ গুণ বিশেষ অনুদান হিসেবে তাঁর পরিবারকে দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, গ্রাহকদের স্বার্থেই সাধারণ ছুটির মধ্যে ব্যাংকের শাখা খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাই এ সময়ে ব্যাংকিং সেবা পেতে গ্রাহকরা যাতে কোনো রকম ভোগান্তিতে না পড়ে, সেটা ব্যাংকগুলোকেই নিশ্চিত করতে হবে।

রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শামস উল ইসলাম বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশ অনুযায়ী যত দূর সম্ভব সব এলাকায় প্রয়োজনীয়সংখ্যক শাখা খোলা রাখা হচ্ছে। লেনদেনের সময়সূচি কমানো হলেও আমরা চেষ্টা করছি গ্রাহকদের জরুরি সব ধরনের লেনদেন সম্পন্ন করতে।’

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0047600269317627