করোনাকালে কিন্ডারগার্টেন ও ননএমপিও শিক্ষকদের করুণ দশা! - দৈনিকশিক্ষা

করোনাকালে কিন্ডারগার্টেন ও ননএমপিও শিক্ষকদের করুণ দশা!

মাছুম বিল্লাহ |

বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্যপরিষদের সভাপতি ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেছেন, “করোনার ক্রান্তিলগ্নে আমরা প্রায় ষাট হাজার প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট বিশ লাখ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিবার মানবেতন জীবনযাপন করছি। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আমরা কোনো টিউশন ফি আদায় করতে পারিনি। তাই শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি।” 

কিন্ডারগার্টেন জাতীয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই ভাড়া বাড়িতে পরিচালিত হয় (৯৯ শতাংশ) কিংবা একটু স্বচ্ছল অথচ বেকার কোনো ছেলে বা মেয়ে নিজের বাসার একটি রুমে হয়তো এ জাতীয় প্রতিষ্ঠান চালু করেন। করোনাকালীন বন্ধেও প্রতিষ্ঠানগুলোর বাড়িভাড়া ঠিকই দিতে হয় যদিও শিক্ষার্থী বেতন নেই এই দুইমাস যাবত। অন্যান্য বিলও  প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাণিজ্যিক হারে পরিশোধ করতে হয় যা এখনও অব্যাহত আছে। কিন্ডারগার্টেন ও প্রাইভেট বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক প্রতিষ্ঠান থেকে নামমাত্র বেতন পান, তারা নির্ভর করেন মূলত প্রাইভেট টিউশনির ওপর।

করোনাকালে দীর্ঘ ও অনিশ্চিত এই বন্ধে তাদের টিউশনি যেমন বন্ধ রয়েছে তেমনি অনিশ্চিত  হয়েছে তাদের উপার্জন। তারা না পাচ্ছেন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন, না পাচ্ছেন প্রাইভেট পড়ানো বাসা থেকে কোনো বেতন। কাজেই জীবন চালানো, সংসার চালানো তাদের জন্য হয়েছে দুরূহ। গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ শুরু হয়েছে এবং কয়েক দফায় বাড়িয়ে তা রোজা, ঈদসহ ৬জুন পর্যন্ত নেয়া হয়েছে। ঈদের পরও প্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনা নেই। করোনাকালীন বন্ধে বেসরকারি অথচ এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকরা বেতন পাচ্ছেন। কিন্তু নিজস্ব আয়ে চলা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন কিন্ডারগার্টেন, স্বীকৃত অথচ নন-এমপিওভুক্ত, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নয়, একেবারেই ব্যক্তিগত এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক কর্মচারীদের দিন কীভাবে কাটছে?

ঈদের পর এসব প্রতিষ্ঠানগুলো না খোলোর ইঙ্গিত আমরা ভালোভাবেই পেয়েছি। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব বলেছেন, “৩০ মের পর যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে যাওয়ার কথা কেউ প্রচার করে, তাহলে পুরোটাই গুজব। কারণ এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে হয়নি। আগামী ৩০ মে পর্যন্ত সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর কাছাকাছি সময়ে গিয়ে পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিব।”

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহপরিচালক বলেছেন, “সাধারণ ছুটির সঙ্গে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে রোজা ও ঈদের ছুটিও চলছে। এরপর গ্রীষ্মকালীন ছুটিসহ আগামী ৬ জুন পর্যন্ত স্কুল বন্ধ থাকবে। এর আগেই পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হবে। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কোনোভাবেই স্কুল খোলার সম্ভাবনা নেই।”

আর প্রধানমন্ত্রী তো আগেই  বলেছেন, “যখন করোনার প্রকোপ থাকবে না, তখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে। আমরা এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলব না। অন্তত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্কুল-কলেজ সবই বন্ধ থাকবে, যদি করোনা ভাইরাস অব্যাহত থাকে।’’

পরিস্থিতির বিবেচনায় সিদ্ধান্ত এমনই হতে বাধ্য। কিন্তু লাখ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী যারা শিক্ষা প্রদান করছেন আমাদের সন্তানদের অথচ তারা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে কোনো বেতন ভাতা পান না তাদের কি হবে? এ ব্যাপারে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, “বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুরোটাই টিউশন ফি-নির্ভর। আমি অভিভাবকদের অনুরোধ করব, এখন তাদের খরচও একটু কম। তাই তারা যেন টিউশন ফির ব্যাপারটা বিবেচনা করেন। তবে যারা সমস্যায় আছেন তাদের কথা ভিন্ন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকেও বলব, প্রয়োজনে কিছুটা ফি কম নেয়া বা কিস্তিতে ফি নেয়ার ব্যবস্থাও করা যেতে পারে। যার মধ্য দিয়ে অভিভাবকরাও কিছুটা স্বস্তি পেলেন, স্কুল শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে পারল, বড় আকারের কোনো সমস্যায় পড়ল না। কিন্তু এখন সরকারের পক্ষ থেকে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বলার সুযোগ নেই যে তোমরা ফি নিবে না।” মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য এর মাধ্যমে এক ধরনের সমাধান দিয়েই দিয়েছেন। অর্থাৎ অভিভাবক ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই দুই পক্ষকেই একটু ছাড় দিতে হবে তাহলে এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক ও কর্মচারীদের জীবন বেঁচে যাবে।

এগুলোর মধ্যে দু’ একটি প্রতিষ্ঠান হয়তো নিজেদের গচ্ছিত ফান্ড থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা পরিশোধ করছেন বা করতে পারছেনঅ কিন্তু বিশাল সংখ্যক বিদ্যালয়ের কি হাল হবে? ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে এক আদেশে টিউশন ফি আদায়ে চাপ প্রয়োগ না করার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিলে, স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলে বকেয়াসহ মাসিক বেতন আদায়ের অনরোধ জানানো হয় আদেশে। এ নিয়ে উভয় সংকটে পড়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। বেতন চাইলে সেটা অমানবিকতার পর্যায়ে পড়ে। আর বেশির ভাগ অভিভাবকও এই মুহূর্তে বেতন দিতে রাজি নন। তবে প্রতিষ্ঠানগুলো বেতন আদায় না করলে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনও দিতে পারছে না। আর এই মুহূর্তে শিক্ষকদের বেতন-বোনাস বাকি পড়লে সেটি আর এক ধরনের অমানিবকতা। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানই মানবিক আবেদনের মাধ্যমে এসএমএস পাঠিয়ে বেতন চাওয়া হচ্ছে, আবার কেউ কেউ কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না।

শিক্ষক-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ দেয়া হচেছ অনেক জায়গায়। তাই, এই প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে একটি সিদ্ধান্তে এখনই আসা উচিত। হতে পারে, অভিভাবকদের ৭০ শতাংশ বেতন দিতে হবে, বাকিটা মওকুফ করা হবে। এই ৩০ শতাংশ বেতন বিদ্যালয় থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বহন করতে হবে। যেসব প্রতিষ্ঠানের অর্থিক অবস্থা ভালো তারা শিক্ষকের এখনই দিয়ে দিবে, বাকিরা পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে বহন দিবে। তবে, কোনোভাবেই শিক্ষক কর্মচারীদের ঠকানো যাবে না। কিন্তু এই সিদ্ধান্তটিকে নিবে? স্কুল কমিটি, শিক্ষা বিভাগের স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা, অভিভাবক প্রতিনিধি সমন্বয়ে এ ধরনের একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হতে পারে যেখানে মন্ত্রণালয় সায় দিবে।

কিন্তু এখানে রয়েছে বিরাট এক সমস্যা। প্রতিটি উপজেলা, জেলা এবং বিভাগীয় শহরে, রাজধানীতে কোথায় কতটি কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয় রয়েছে তার হিসাব কি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, জেলা শিক্ষার আফিসারদের কাছে আছে? নেই। রাষ্ট্রীয় তরফেও এর সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। শিক্ষক নেতাদের কেউ কেউ বলেন ৪০ হাজার আর এর সাথে জড়িত শিক্ষক-কর্মকর্তা দুই লাখ। আবার অন্য এক সংগঠনের শিক্ষক নেতারা বলছেন, এই সংখ্যা ৬০ হাজার আর এর সাথে জড়িত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, উপকারভোগী মিলে ২০ লাখ। এসব প্রতিষ্ঠানে কতজন শিক্ষক আছেন, তারা কি ধরনের বেতন পান এ ধরনের তথ্য উপজেলা কিংবা জেলা শিক্ষা অফিসারদের কাছে নিশ্চয়ই নেই। তাদের কি কোনোদিন সময় হয়েছে এসব বিদ্যালয় পেশাগতভাবে দেখার? কারণ তাদের অন্য কাজ আছে, তারা ব্যস্ত শিক্ষকদের বদলি নিয়ে। বদলি একটি বাণিজ্য, এসব বিদ্যালয়ের হাল-চাল দেখা কিংবা একাডেমিক বিষয় দেখায় সেরকম বাণিজ্য নেই। প্রশ্ন আসে  সরকার যদি সহায়তা করতেও চায় তাহলে কার মাধ্যমে করবে। সাধারণ মানুষের ত্রাণের ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি কত অনিয়ম কারণ সঠিক পরিসংখ্যান নেই। আর কোন পরিসংখ্যানটি সরকার গ্রহণ করবে ৪০ হাজার না ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেন?

শিক্ষক নেতারা বলেছেন যে, শিক্ষার্থীদের মাসিক টিউশন ফি’র ৪০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ৪০ শতাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন, বাকি ২০ শতাংশ গ্যাস বিল, বাণিজ্যিক হারে বিদ্যুৎ ও পানির বিলসহ অন্যান্য খরচ নির্বাহ না হওযায় অনেক প্রতিষ্ঠানে ভর্তুকি দিতে হয়। এমতাবস্থায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি আদায় না হওযায় মার্চ মাস থেকে এই পর্যন্ত স্কুলগুলো সকল প্রকার বিলসহ বাড়ি ভাড়া, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের বেতন পরিশোধ করতে পারেনি। বাড়ির মালিক ভাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা ও গরীব কর্মচারীরা অর্থকষ্টে মানবেতন জীবনযাপন করছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা দিশেহারা। শিক্ষা ক্ষেত্রের বিশাল এই সেক্টরকে টিকিয়ে রাখতে এবং অসহায় শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা ও গরীব কর্মচারীদের জন্য জীবন বাঁচানো এবং এ প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট যে কোনো ধরনের আর্থিক সহায়তা প্রার্থনা করেন।

শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকমে দেখলাম, একটি সংগঠন আপদকালীন ৫০ কোটি, অন্য একটি সংগঠন সরকারের কাছে ৫০০ কোটি টাকা অনুদান চেয়েছেন। নেতারা বলছেন, “এ স্কুলগুলো যদি না থাকতো তাহলে সরকারকে আর ২৫ থেকে ৩০ হাজার বিদ্যালয় স্থাপন করে প্রতিমাসে শিক্ষক বেতন বাবদ কোটি কোটি টাকা ব্যয় করতে হতো। সেদিক থেকে বলা চলে আমরা সরকারের বিরাট রাজস্ব ব্যয় কমিয়ে দিয়েছি। পরোক্ষভাবে আমরা দেশের বেকার সমস্যা সমাধানেও কাজ করছি।” শিক্ষক নেতাদের এই কথাগুলো কিন্তু ফেলে দেয়ার মতো নয়, যুক্তিসঙ্গত কথা।

প্রাথমিক শিক্ষা একটি সমাজ ও জাতি গঠনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে একটি রাষ্ট্রকে পরিচালনা করতে হয়। এটি কোনোভাবেই যার তার হাতে ছেড়ে দিলে হয় না। কিন্ডারগার্টেনগুলো আমাদের দেশের প্রাথমিক শিক্ষার দুরাবস্থার মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে। প্রাথমিক শিক্ষায় অর্ধেক প্রতিষ্ঠান (৬৫,৫০০টি) রাষ্ট্রীয় তরফ থেকে পরিচালনা করা হয় যেটি একটি ভালো দিক, কিন্তু সেখানে শিক্ষকদের চাকরিটি সরকারি। এছাড়া অন্যান্য ব্যতিক্রম ব্যতীত আমরা সবাই জানি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো কীভাবে চলছে, কি শিখছে সেখানকার ক্ষুদে শিক্ষার্থী তথা ভবিষ্যত নাগরিকেরা।

প্রতিটি কাজের ক্ষেত্রের জন্য ফিডব্যাক প্রয়োজন। ঐ কাজ ও ক্ষেত্রের যথাযথ উন্নয়নের জন্য যেটি আমাদের কালচারে নেই। আমরা ফিডব্যাককে মনে করি সমালোচনা। তাই উন্নয়নের সুযোগ আর থাকে না। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কি হচ্ছে তা যদি সঠিকভাবে মন্ত্রণালয় কিংবা সরকারকে জানতে হয় তাহলে প্রাসঙ্গিক লোকদের কাছ থেকে ফিডব্যাক নেয়া প্রয়োজন । সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুর্বলতার সুযোগ দেশে গড়ে উঠেছে কিন্ডারগার্টেন টাইপের বিদ্যালয়। এগুলো ব্যক্তি পর্যায়ে পরিচালিত হয়ে থাকে। একটি দেশের ভবিষ্যৎ নাগরিকদের যার তার হাতে ছেড়ে দেয়া কোনোভাবেই ঠিক নয়। কিন্ডারগার্টেনে যারা পড়ান তাদের প্রাতিষ্ঠনিক কোনো প্রশিক্ষণ নেই। অথচ শিশুদেরকে ডিল করার জন্য, তাদেরকে পড়ানোর জন্য শিশুশিক্ষা ও শিশুবিজ্ঞানের ওপর যথেষ্ট ধারণা থাকতে হয়, জানতে হয়, প্র্যাকটিস করতে হয় যা আমাদের কিন্ডারগার্টেনগুলোতে নেই। ব্যতিক্রম দু’ চারটি রয়েছে। রাষ্ট্র এই দায়িত্ব কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।

অর্থনৈতিক সমস্যা থাকলেও অন্যভাবে ম্যানেজ করা যায়। কিন্তু শিশুদের শিক্ষা কারোর বাড়ির বারান্দায়, কারোর ভাড়া করা একটি রুমে বা দুটো রুমে, ব্যক্তিগত ইচ্ছার ওপর চলতে দেয়া যায় না। সেখানে একটি শক্তিশালী কমিশন গঠন করতে হবে, যারা শিশুশিক্ষার সার্বিক নির্দেশনা প্রদান করবে এবং সেভাবইে গোটা দেশে একইভাবে শিশুদের আনন্দদায়ক শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত হবে, সেখানকার শিক্ষকদের যথাযথ পেশাগত উন্নয়ন সংঘটিত হবে।

কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক, পরিচালক কিংবা মালিকদের আমরা দোষারোপ করতে পারি না। প্রাথমিক শিক্ষার দুর্বলতার কারণেই এগুলো গড়ে উঠেছে। এখন তাদের পাশে দাঁড়ানোর দায়িত্বও অভিভাবক, সমাজ ও রাষ্ট্রের। এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফ কিংবা শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা দেয়ার বিষয়ে কোনো সহায়তা করা হবে কি না সে ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশনা আসেনি। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যারা যেভাবে পারছে টিউশন ফির টাকা আদায়ের চেষ্টা করে যাচ্ছে। এটি তো করতেই হবে, তাদের তো বাঁচতে হবে। দেশে এমপিওভুক্ত নয় কিন্তু সরকারের স্বীকৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে পাঁচ হাজার ২৪২টি। এগুলোতে শিক্ষক কর্মচারী ৭৫ থেকে ৮০ হাজার। এছাড়া সরকারি স্বীকৃতির বাইরে আরও ২ হাজারের বেশি এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বৈশ্বিক দুর্যোগের এই প্রেক্ষাপটে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের পাশে দাঁড়ানো সরকার, জনপ্রতিনিধি এবং সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের এগিয়ে আসা উচিত।  

লেখক : মাছুম বিল্লাহ, ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচিতে কর্মরত।

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0070018768310547