করোনার টিকা আগে পেতে চায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা - দৈনিকশিক্ষা

করোনার টিকা আগে পেতে চায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

এক বছরের অনিশ্চয়তার পর করোনার টিকায় আশার আলো দেখছে বিশ্ববাসী। এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশে সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনার টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। খুব দ্রুত বাংলাদেশও এই টিকা পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করছে। এই অবস্থায় কার আগে কে টিকা পাবে তা নিয়ে শুরু হয়ে গেছে হুলুস্থুল। দীর্ঘ ১০ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় চরম ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা খাত। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুরুতেই যাদের টিকা দেওয়া হবে সে তালিকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের রাখা উচিত। তাহলে তারা শিক্ষা কার্যক্রম পুরোদমে এবং দ্রুত শুরু করতে পারবে। শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন শরীফুল আলম সুমন।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, দেশে গত ১৭ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ বছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি), জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) এবং স্কুলগুলোর বার্ষিক পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শ্রেণিতে উন্নীত করলেও অসম্পূর্ণ শিক্ষা নিয়েই তারা বেড়ে উঠছে। এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আরো দীর্ঘায়িত হলে ক্ষতির মাত্রা আরো বাড়বে।

আগামী বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি এবং ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ১০ মাস পড়ালেখা না হওয়ায় তা হচ্ছে না। নভেম্বরের শেষে শুধু এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য স্কুল-কলেজ খোলার চিন্তা করা হলেও করোনার দ্বিতীয় পর্যায়ের কথা চিন্তা করে তা হয়নি। তবে তাদের জন্য আগামী বছরের শুরুতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে না পারলে লণ্ডভণ্ড শিক্ষাসূচি মেরামতের উপায় খুঁজে পাওয়া কষ্টকর হয়ে যাবে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশনজট বাড়ছে। ফলে এসব শিক্ষার্থীর জন্য শুরুতেই করোনার টিকা দেওয়া যেতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ বলেন, ‘একটা সময় তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতেই হবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভয় তাড়িয়ে আশার সঞ্চার করতে হবে। শিক্ষার্থীরা যদি নিজেদের নিরাপদ মনে করে তবেই তারা স্কুলে আসবে। আবার তাদের জীবনের ঝুঁকিও নেওয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রে করোনার টিকার ক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার তালিকায়ই রাখা উচিত। তবে এটাও ঠিক, আগের মতো স্কুলের কথা চিন্তা করলে হবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য স্থানীয়, আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে বিশেষ পরিকল্পনা নিতে হবে।’

সম্প্রতি প্রকাশিত ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কভিড-১৯-এর কারণে বিভিন্ন দেশে স্কুল বন্ধ থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত শিশুর সংখ্যা ৩৮ শতাংশ বেড়েছে। তাই স্কুল খুলে দেওয়ার তাগিদ দিয়েছে ইউনিসেফ। একই সঙ্গে শিশুদের যথাসম্ভব নিরাপদে রাখার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, স্কুল বন্ধ থাকায় বিশ্বব্যাপী অতিরিক্ত ৯ কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষগ্রহণে অগ্রগতি এবং সার্বিক কল্যাণের ওপর উল্লেখযোগ্য মাত্রায় চাপ সৃষ্টি হয়েছে। তথ্যানুসারে, গত ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী প্রতি পাঁচজন স্কুলগামী শিশুর মধ্যে প্রায় একজনের বা মোট ৩২ কোটি শিশুর ক্লাস বন্ধ রয়েছে।

ইউনিসেফ জানায়, স্কুলগুলো এই মহামারি ছড়ানোর ক্ষেত্রে কী ভূমিকা রাখতে পারে তা বিবেচনায় না নিয়েই দেশে দেশে স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে অব্যাহতভাবে শিশুদের শিক্ষাগ্রহণ, মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা ও সুরক্ষার ওপর ভয়াবহ রকমের প্রভাব পড়ছে। স্কুলগুলো থেকে ব্যাপক মাত্রায় সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কার তথ্য তেমন নেই এবং এ অবস্থায় ইউনিসেফ স্কুলগুলো পুনরায় খুলে দেওয়াকে অগ্রাধিকার দিতে এবং শিশুদের যথাসম্ভব নিরাপদে রাখার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রহমত উল্লাহ বলেন, ‘করোনায় শিক্ষার যে ক্ষতি এরই মধ্যে হয়ে গেছে, তা পূরণ করা সম্ভব নয়। দীর্ঘদিন শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে আছে। তাদের সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। শহরের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে কিছুটা পড়ালেখা করলেও গ্রামের শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার বাইরে চলে গেছে। যদি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেওয়া যায়, তাহলে তাদের শ্রেণিকক্ষে সহজেই আনা সম্ভব। এ অবস্থায় করোনার টিকা প্রাপ্তিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।’

অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু বলেন, ‘দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য সব কিছুই চলছে। যেহেতু শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ঘরে বসে আছে, তাই করোনার বিরুদ্ধে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও সেভাবে তৈরি হয়নি। এ জন্য আমি মনে করি, করোনার টিকা প্রাপ্তিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কথা শুরুতেই ভাবা উচিত।’

ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036289691925049