অপহরণ করে কলেজ ছাত্র মিঠু হোসেনকে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নরসিংদীর পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজিম (পিপিএম) এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃত হলো, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মিঠালু গ্রামের পিয়ার উদ্দিনের মেয়ে শাহনাজ আক্তার পপি (২৮), তার স্বামী আবদুল বাতেন (৩৫) এবং একই এলাকার তাপন খাঁন (৩২)। তাদেরকে শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের হুগলিয়াপাড়ার রুপচান মিয়ার বাড়ির খড়ের গাদার নিচ থেকে মিঠু হোসেনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। সে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রায়পুর এলাকার মৃত মোসলেম উদ্দিনের ছেলে। তিনি সিরাজগঞ্জের একটি ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজের বিএন প্রথম বর্ষের ছাত্র।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত শাহনাজ আক্তার পপির ফেসবুক কেন্দ্রিক একটি প্রতারক চক্র রয়েছে। দলনেতা পপি নিজের ছদ্মনাম ব্যবহার করে নিজের প্রকৃত পরিচয় গোপন করে বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েদের ছবি দিয়ে একাধিক ফেসবুক আইডি পরিচালনা করে। বিভিন্ন উঠতি বয়সী তরুণদের টার্গেট করে তাদের সঙ্গে প্রথমে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও পরবর্তীতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে একটি নির্দিষ্টস্থানে দেখা করতে উৎসাহিত করে। তার প্রেমের ফাঁদে পড়ে দেখা করতে আসলে তার সহযোগী হানিফসহ ৩/৪ জনের প্রতারক চক্রটি তাকে আটকে রেখে মারধর করে মুক্তিপণ দাবি করে।
পুলিশ আরও জানায়, মুক্তিপণের জন্য পাশবিক নির্যাতন করা হয় কলেজ ছাত্র মিটুকে। তাঁর পিঠে, গলায় ও চোখের নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজিম, পিপিএম বলেন, কলেজ ছাত্র মিঠুর সঙ্গে ফেসবুকে বন্ধুত্ব করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে গত বুধবার মনোহরদীতে দেখা করার জন্য ডেকে আনে প্রতারক শাহনাজ আক্তার পপি। পপি পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মিঠুকে তার সহযোগীদের নিকট তুলে দেয়। তারা পার্শ্ববর্তী শিবপুর উপজেলার আশুটিয়া পূর্বপাড়ার একটি নীরব এলাকায় আটকে রেখে মারধর করে মিঠুর অভিভাবকদের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা দিতে ব্যর্থ হলে মিঠু হোসেনকে হত্যা করে তার লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে মনোহরদীর একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের হুগলিয়াপাড়া গ্রামের এক ব্যক্তির খড়ের গাদার নীচে ফেলে রাখে।
তিনি জানান, এই ঘটনায় নিহতের বড় বোন মিনু আক্তার বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মনোহরদী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আটককৃত ৩ আসামিকে উক্ত মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।