নোয়াখালী সরকারি কলেজে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে (১৯) মুখে টেপ লাগিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। অপরিচিত দুই তরুণ তাকে ছাদে তুলে নিয়ে নির্যাতন করেছেন বলে ওই ছাত্রী জানিয়েছেন।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা ভবনে এ ঘটনা ঘটে। কলেজ বন্ধ থাকলেও অঙ্গীকারনামা জমা দিতে গিয়ে তিনি হামলার শিকার হন। এ সময় কলেজে তেমন শিক্ষার্থী ছিলেন না।
জানা গেছে, কলেজে কর্মরত এক শ্রমিক ওই ছাত্রীকে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় ছাদে পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর কলেজ কর্তৃপক্ষের সহায়তায় ওই ছাত্রীকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। খবর পেয়ে সুধারাম থানার পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে কলেজ ক্যাম্পাসে যায়। তবে পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক কিংবা শনাক্ত করতে পারেনি।
কলেজ কর্তৃপক্ষ কিংবা নির্যাতনের শিকার ছাত্রীও ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই যুবকের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেননি।
কলেজের অধ্যক্ষ সালমা আক্তার নির্যাতনের শিকার ছাত্রীর বরাত দিয়ে বলেন, দুই যুবক ছাত্রীর মুখ চেপে ধরে তাকে জোর করে ভবনের ছাদে নিয়ে যান। সেখানে তার হাত-পা বেঁধে মুখে টেপ লাগিয়ে তাঁকে কিলঘুষি ও লাথি দিতে থাকেন। তারা বলতে থাকেন, তোর কে আছে, তাকে আসতে বল। কিলঘুষিতে ছাত্রীর নাক ফেটে রক্ত বের হতে থাকে, যার একপর্যায়ে দুর্বৃত্তরা ছাত্রীকে ছাদে ফেলে পালিয়ে যান।
অধ্যক্ষ সালমা আক্তার আরও বলেন, এরই মধ্যে ভবনের ছাদে যান কলেজে রঙের কাজে নিয়োজিত এক শ্রমিক। তিনি ছাত্রীকে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে শিক্ষকদের ঘটনাটি জানান। তখনই শিক্ষকেরা গিয়ে ছাত্রীকে উদ্ধার করে কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। এরপর তারা পুলিশকে বিষয়টি জানান।
অধ্যক্ষ বলেন, একটি ফেসবুক আইডি থেকে ওই ছাত্রীকে নিয়মিত উত্ত্যক্ত করতেন এক তরুণ। এরপর ওই ছাত্রী আইডিটি ব্লক করে দেন। মারধরের ঘটনার সঙ্গে এর যোগ থাকতে পারে বলে ছাত্রীটি সন্দেহ করছিলেন।
সুধারাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আকলিমা আক্তার বলেন, তিনি ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। ছাত্রীটিকে প্রথমে পেছন থেকে মুখ চেপে ধরা হয়। এরপর মুখে টেপ লাগিয়ে ছাদে নিয়ে হাত-পা বেঁধে মারধর করা হয়। ছাত্রী তাকে অন্য কোনো নির্যাতনের কথা জানাননি। তবে মারধরের কারণে তিনি বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার ছাত্রী তার সঙ্গে কথা বলা বোরকা পরা তরুণী কিংবা হামলাকারী কাউকেই শনাক্ত করতে পারেননি। কলেজের মূল ভবনের বাইরে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো নষ্ট।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.সাহেদ উদ্দিন বলেন, নোয়াখালী সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে মুখে টেপ লাগিয়ে হাত-পা বেঁধে মারধরের একটি ঘটনা শোনার পর তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তবে কারা ওই ঘটনায় জড়িত, তা শনাক্ত করা যায়নি। ছাত্রীও তাদের চেনেন না। ছাত্রীকে তারা চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।