মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার পাতারহাট বন্দরে সরকারি রসিক চন্দ্র (আর.সি) ডিগ্রি কলেজের পুকুরে অবৈধভাবে মাছ চাষের অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। কলেজের ছোট-বড় তিনটি পুকুর আট মাস আগে থেকে দখল করে মাছ চাষ করছেন তিনি। পুকুরে দেওয়া মাছের খাবারে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে কলেজ ক্যাম্পাসে। এ ছাড়া ছাত্র সংসদ কক্ষ দখল করে রাখা হয়েছে মাছের খাবার। এসব অভিযোগে উপাধ্যক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি জবাব দিচ্ছেন না।
সংশ্নিষ্টরা জানিয়েছেন, উপাধ্যক্ষ স্থানীয় এক শীর্ষ জনপ্রতিনিধির আস্থাভাজন। এ কারণে তিনি কাউকে তোয়াক্কা করেন না।
কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, উপাধ্যক্ষ মাছ চাষ বন্ধ না করলে মাছ বিক্রি করে কলেজ কোষাগারে টাকা জমা দেওয়া হবে।
সরকারি আর.সি কলেজের অধ্যক্ষ এ বি এম মাহবুবুল হক বলেন, কলেজ অধ্যক্ষের বাসভবন সংলগ্ন দেড় একর আয়তনের একটি এবং এক একর ও আধা একর আয়তনের আরও দুটি পুকুর দখল করে উপাধ্যক্ষ মাছ চাষ করছেন। পুকুর তিনটি নেট দিয়ে ঘিরে রাখায় এর পানি ব্যবহার করতে পারছেন না কেউ। মাছের খাবারে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ছাত্র সংসদ কক্ষে রাখা হয়েছে মাছের খাবার। অনুমতি ছাড়াই বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষের কারণ জানতে চেয়ে গত বছরের ১১ অক্টোবর উপাধ্যক্ষকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়। তিনি আজ পর্যন্ত নোটিশের জবাব দেননি।
অধ্যক্ষ বলেন, আর.সি কলেজ ২০১৮ সালে সরকারীকরণের গেজেটভুক্ত হয়েছে। এ জন্য কলেজের পুকুর কিংবা অন্য কোনো সম্পত্তি ইজারা দেওয়ার বিধান নেই।
কলেজের একজন প্রভাষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দুর্গন্ধের কারণে শিক্ষার্থীরা পুকুরের পানি ব্যবহার করতে পারছে না। এই পুকুরের পানি আগে স্থানীয় জনসাধারণও ব্যবহার করত।
এ প্রসঙ্গে সরকারি আর.সি কলেজের উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষের মৌখিক অনুমতি নিয়ে মাছ চাষ করছেন। কোনো শোকজ নোটিশ তিনি পাননি।
উপাধ্যক্ষ পাল্টা অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষ এ বি এম মাহবুবুল হক খুব শিগগির অবসরকালীন ছুটিতে যাবেন। পদাধিকার বলে তিনি (উপাধ্যক্ষ) ভারপ্রাপ্ত হবেন। এটা বাধাগ্রস্ত করার জন্যই অধ্যক্ষ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। উপাধ্যক্ষ বলেন, ছাত্র সংসদের কোনো কার্যক্রম নেই। তিনি সেই কক্ষে খাবার রেখেছেন। পুকুরে নেট দিয়েছেন মাছ রক্ষার জন্য।কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও ইউএনও মো. নুরুন্নবী বলেন, পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শনে কলেজে গেলে তিনি তীব্র দুর্গন্ধ পান। পরে পুকুরে মাছ চাষের বিষয়টি জানতে পারেন। ওই সময়ই উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলামকে পুকুরে মাছ চাষ বন্ধ করতে বলেন। কলেজের পুকুর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য। উপাধ্যক্ষ এভাবে মাছ চাষ করতে পারেন না। এর পরই তাকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়।