কলেজের মাঠে বর-কনের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে কৃত্রিম আগ্রার তাজমহল। সামনে প্রায় ৫ হাজার অতিথির জন্য সাজানো চেয়ার-টেবিল।
ডেকোরেশন শ্রমিক, বাবুর্চি ও অতিথিদের অভ্যর্থনায় নিয়োজিত ব্যক্তিসহ মোট তিন শতাধিক লোক। দেখে মনে হয় যেন বিয়ের কমিউনিটি সেন্টার। এভাবে সাজানো হয় নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলা শহরের সৈয়দপুর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ প্রাঙ্গণ। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ঢাকার ‘শাহজাহান ইভেন্ট’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে সাজসজ্জার কাজ করেছে।গড়ে তোলা হয়েছিল কৃত্রিম তাজমহলসহ আলোকসজ্জার নয়নাভিরাম কারুকাজ। এ রাজকীয় আয়োজনে গত শুক্রবার রাতে বিশিষ্ট শিল্পপতি আলতাফ হোসেনের ছেলে আতিফ আলতাফের বৌভাতের অনুষ্ঠান করা হয়। শহরের বিশিষ্টজনরা বলছেন, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে করোনাকালীন এ সময়ে কীভাবে জনসমাগম করা হলো? এতে একদিকে যেমন করোনা মহামারিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচেতনতা উপেক্ষিত হচ্ছে, তেমনি প্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র, ফুল বাগানসহ অন্যান্য অবকাঠামোর ক্ষতিসাধন হয়েছে নিশ্চিত। এছাড়া ‘অতিথি নিয়ন্ত্রণ আইন’ লঙ্ঘিত হয়েছে বলে দাবি করছেন তারা।
ঐ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান বলেন, করোনায় শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ তাই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে লিখিতভাবে কোনো কিছু জানানো হয়নি। কিন্তু প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।
তবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজক বিশিষ্ট শিল্পপতি আলতাফ হোসেন বলেন, অতিথির সংখ্যা অনুযায়ী কমিউনিটি সেন্টারে সংকুলান হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদের অবগত করে এ আয়োজন করা হয়েছে। তাছাড়া সৈয়দপুর পৌরসভার সাবেক মেয়রের কাছে অনুমতি নেওয়া রয়েছে।
সৈয়দপুর পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র জিয়াউল হক জিয়া বলেন, কলেজ প্রধানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মাঠে ভরাট করা মাটি সমান করার জন্য রোলার প্রদান করা হয়েছে। তবে বিয়ের অনুষ্ঠানের কাজে তা ব্যবহার করার জন্য দেওয়া হয়নি।
সৈয়দপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেহেনা ইয়াসমিন বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানের আয়োজন নিয়মের মধ্যে কখনই পড়ে না। তাছাড়া অফিসে এ ধরনের কোনো লিখিত আবেদন করা হয়নি।
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাসিম আহমেদ বলেন, এভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা আইন বহির্ভূত। তবে বিষয়টি আমার এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এটি খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।