কারিকুলাম প্রণয়নের চেয়ে বাস্তবায়নই বেশি গুরুত্বপূর্ণ - দৈনিকশিক্ষা

কারিকুলাম প্রণয়নের চেয়ে বাস্তবায়নই বেশি গুরুত্বপূর্ণ

মাছুম বিল্লাহ |

শিক্ষাক্রম পরিমার্জন ও বাস্তবায়ন সাধারণত ১০-১২ বছরের ব্যবধানে করা হয়। বাংলাদেশে কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশন (১৯৭২-৭৪) রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রথমবার শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি প্রণয়নের (১৯৭৬-৮০) পর তা দুবার (১৯৯১-৯৫ ও ২০১২) পরিমার্জন করা হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় আবর্তনের শিক্ষাক্রম পরিমার্জন ও বাস্তবায়নের মধ্যে ১৫-১৬ বছরের  ব্যবধান ছিল। কিন্তু তৃতীয় আবর্তনের (২০১১-১৩) মাত্র আট বছর পর চতুর্থবারের মতো শিক্ষাক্রম পরিমর্জনের কাজ শুরু হয়েছে। 

এর দুটি প্রধান উদ্দেশ্য: ১. জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (২০১৬-২০৩০) বিধৃত শিক্ষার লক্ষ্যগুলো (এসডিজি-৪) অর্জনের চেষ্টা এবং ২. বিশ্বব্যাপী স্কুলশিক্ষাকে যোগ্যতাভিত্তিক করার উদ্যোগে যুক্ত হওয়া। নতুন কারিকুলাম প্রণয়নে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে কাজ শুরু করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। তখন দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের নিয়ে দুটি কমিটি গঠন করা হয়। এরপর আবার দশজন শিক্ষাবিদ নিয়ে ‘কারিকুলাম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিভিশন কোর কমিটি’ গঠন করা হয়। গত বছর শেষ দিকে তারা ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা  প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি ’ নামে ১১৪ পৃষ্ঠার রূপরেখা জমা দেয়। এই রূপরেখার ওপর বিশিষ্টজন, শিক্ষাবিদদের মতামত নেয় এনসিটিবি। এরপর তা ন্যাশনাল কারিকুলাম কো-অর্ডিনেশন কমিটির কাছে পাঠানো হয়। ধাপে ধাপে এসব যুক্তিসঙ্গত পদ্ধতি অবলম্বন করায় এনসিটিবি ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।

আগামী ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন শুরু হবে। এ বছর থেকে প্রাথমিক পর্যায়ের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা  ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ৬ষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত হবে। নতুন কারিকুলামে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ১০০ ভাগ মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন মূল্যায়ন। সে হিসাবে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে পরীক্ষা হবে না। এটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। শিক্ষার্থীদের জন্য আনন্দঘন শিক্ষা নিশ্চিত করতে এ শিক্ষাক্রম তৈরি করা হয়েছে। এ শিক্ষাক্রম পাইলটিং হবে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে। প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে। ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি  এবং অষ্টম ও নবম শ্রেণি এ শিক্ষাক্রমের আওতায় আসবে। এ শিক্ষাক্রমের আওতায় ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে সব মাধ্যমিকে  শিক্ষার্থীদেরে নিয়ে আসা হবে এবং  ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দে একাদশ ও ২০২৭ খ্রিষ্টাব্দে দ্বাদশ শ্রেণি যুক্ত হবে। এটিও যুক্তিসংগত।  এর আগে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের জন্য পৃথক সময়ে কারিকুলাম পরিবর্তন হওয়ার কারণে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের কারিকুলামে সমন্বয় থাকত না। এবারই একসঙ্গে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের কারিকুলাম পরিমার্জন করা হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমবে। প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরবচ্ছিন্ন শিখন নিশ্চিত করা হচ্ছে। নতুন এ শিক্ষাক্রম পরীক্ষামূলকভাবে ১০০টি প্রাথমিক ও ১০০টি মাধ্যমিক স্কুলে আগামী বছর থেকে শুরু হবে। কোনো কিছু শুরুর আগে পাইলটিং করা প্রয়োজন, কাজেই এটি ভাল সিদ্ধান্ত।

শুধু সনদের জন্য নয়, পারদর্শিতা অর্জনের জন্য শিক্ষার্থীরা শিক্ষা গ্রহণ করবে।  পরীক্ষার বিষয় ও পাঠ্যপুস্তকের চাপ কমানোর চেষ্টা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যাতে নিজেদের মতো কিছুটা সময় কাটাতে পারে তা নিশ্চিত করতেই নতুন কারিকুলাম। এ জন্য প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাব্যবস্থার ধারাবাহিকতা রক্ষা করে নতুন কারিকুলাম প্রণয়ন করা হয়েছে। নতুন কারিকুলামে এসএসসি পরীক্ষা হবে শুধুমাত্র দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচি অনুসারে। আর উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বিভাগ বিভাজন করা হবে। আগের মতো মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বিভাজন থাকছে না। মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষার্থীকেই নির্ধারিত দশটি বিষয় পড়তে হবে। বিষয়গুলো  হচ্ছে- বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, সামাজিক বিজ্ঞান , জীবন ও জীবিকা, ধর্ম ও স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি। বর্তমানে এসব শ্রেণিতে ১২ থেকে ১৪টি বই পড়ানো হয়। ষষ্ঠ শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের কারিকুলামে একটি কারিগরি বিষয় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। এ ছাড়াও শিক্ষার্থীদের নানা দক্ষতা অর্জনের সুযোগ থাকছে। নতুন কারিকুলামে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার ইতিহাস অন্তুর্ভুক্ত থাকবে। এ ছাড়া নুতন সিলেবাসে করোনা অন্তুর্ভুক্ত হচ্ছে। মুখস্থনির্ভর শিক্ষা পদ্ধতি থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে অভিজ্ঞতানির্ভর শিক্ষার দিকে নিয়ে আসায় জোর দেওয়া হচ্ছে।

প্রাথমিক শেষে ও অষ্টম শ্রেণি শেষে শিক্ষার্থীদের সনদ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকতে পারে শুধুমাত্র তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য, তবে পাবলিক পরীক্ষা থাকবে না। শিক্ষামন্ত্রী এ বিষয়ে জানান, পাবলিক পরীক্ষা নিয়েই যে সনদ দিতে হবে এটা কোনো কথা না। বিদেশে প্রাথমিক পর্যায় শেষ করার পরেও বাচ্চাদের গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠান হয়। সনদ নিয়ে শিক্ষার্থী উদ্বুদ্ধ বোধ করতে পারে, সে জন্যই সনদ। সনদের জন্য শিক্ষা নয়, শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতেই শিক্ষা। তারা যে পারদর্শিতা অর্জন করেছে তার স্বীকৃতিই সনদ। পাবলিক পরীক্ষা হবে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে। সমাপনী পরীক্ষা হবে প্রতি ক্লাসেই অর্থাৎ বছর শেষে একটি মূল্যায়ন হবে।  দশম শ্রেণির আগে কোনো পাবলিক পরীক্ষা হবে না এবং দশম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা হবে শুধুমাত্র দশম শ্রেণির সিলেবাসে। চমৎকার সিদ্ধান্ত। শিক্ষাক্রমের খসড়া রূপরেখাকে খুবই ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হলে শিক্ষা হবে আনন্দময়, শিক্ষার্থীদের মধ্যে থাকবে না পরীক্ষাভীতি। যেখানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে ধাপে ধাপে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পৌঁছানোর একটি রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে কোচিং ও গাইড বাণিজ্য বন্ধ হবে, মুখস্থনির্ভর শিক্ষার পরিবর্তে প্রায়োগিক শিক্ষা গুরুত্ব পাবে। শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষার্থী হয়ে গড়ে উঠবে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরি। এজন্য সবকিছুর আগে মানসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। বাড়াতে হবে শিক্ষকদের বেতন। পাশাপাশি শিক্ষা ব্যবস্থার প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, ক্ষমতায়ন ও অর্থায়নে মনোযোগী হতে হবে। শিক্ষকের ক্ষমতায়নে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।’

বর্তমানে পঞ্চম শ্রেণিতে ছয়টি বই পড়লেও ষষ্ঠ শ্রেণিতে তার বিষয়সংখ্যা দাঁড়ায় বারটিতে। তারপর নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও কলা বিভাগের কোনটি সে নেবে এ নিয়ে চিন্তায় পড়ে। ফলে নম্বর পেলেও বিষয়গুলো আত্মস্থ করতে পারে না। একটি বিভাগে সীমাবদ্ধ থাকার কারণে সামগ্রিক বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারে না। চতুর্থ থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়তে হবে আটটি বই।  ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সবাইকে পড়তে হবে দশটি বিষয়। শিক্ষার্থীদের বিষয় পছন্দ করতে হবে একাদশ শ্রেণিতে গিয়ে। একাদশ শ্রেণি শেষে একটি পরীক্ষা হবে এবং দ্বাদশ শ্রেণি শেষে নেওয়া হবে পাবলিক পরীক্ষা। এই দুই পরীক্ষার ফলাফলের সমন্বয়ে তৈরি হবে এইচএসসির ফল। প্রাক-প্রাথমিক পর্যায় থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শতভাগ শিখনকালীন মূল্যায়ন। চতুর্থ থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত , বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে ৬০ শতাংশ শিখনকালীন মূল্যায়ন ও ৪০  শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন। এ ছাড়া জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা, ধর্ম শিক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ে শতভাগ শিখনকালীন মূল্যায়ন থাকবে। নবম ও দশম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে ৫০ শতাংশ শিখনকালীন মূল্যায়ন ও ৫০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন থাকবে। এ ছাড়া জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা, ধর্ম শিক্ষা এবং শিল্প-সংস্কৃতি বিষয়ে শতভাগ শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে আবশ্যিক বিষয়ে ৩০ শতাংশ শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং ৭০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন করা হবে। নৈর্বচনিক ও বিশেষায়িত বিষয়ে কাঠামো ও ধারণায়ন অনুযায়ী সামষ্টিক মূল্যায়নের পাশাপাশি প্রকল্পভিত্তিক, ব্যবহারিক ও অন্যান্য উপায়ে শিখনকালীন মূল্যায়নের সুযোগ থাকবে। প্রায়োগিক বিষয়ে শতভাগ শিখনকালীন মূল্যায়ন ব্যবস্থা থাকবে। তবে শিখনকালীন মূল্যায়নের ক্ষেত্রে এক শিক্ষক থেকে আরেক শিক্ষক, এক বিদ্যালয় থেকে আরেক বিদ্যালয়, গ্রাম ও শহরের বিদ্যালয় ইত্যাদির মাঝে বিরাট ব্যবধান থাকার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। এটি কিভাবে মিনিমাইজ করা হবে তার একটি দিক নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন ছিল প্রস্তাবনায়। না হলে বিজ্ঞানের প্রাকটিক্যাল পরীক্ষার মতো হবে। শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের কাছে আটকা থাকবে এবং প্রাকটিক্যালের নম্বর প্রায় শতভাগ পেয়ে যাবে। তাতে মূল্যায়ন সঠিকভাবে হবে না।

শিক্ষার্থীদের শিখনফল অর্জনে দশটি বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে। সেগুলো হলো ভাষা ও যোগাযোগ, গণিত ও যুক্তি, জীবন ও জীবিকা, সমাজ ও বিশ্বনাগরিকত্ব, পরিবেশ ও জলবায়ু, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা, মূল্যবোধ ও নৈতিকতা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি। এক বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে সরকারি এবং দুই দিন করে সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে ১৩৭ দিন বাদ দিলে ১৮৫ কর্মদিবস পাওয়া যাবে। এই সময়ের মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক স্কুলে প্রতিদিন আড়াই ঘণ্টা, প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণিতে সাড়ে তিন ঘণ্টা, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে চার ঘণ্টা, ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে পাঁচ ঘণ্টা, নবম ও দশম শ্রেণিতে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা শিখনঘণ্টা নির্ধারণ করা হয়েছে। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষায়ও নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। মূল বিষয়গুলো সবারই এক থাকবে, শিখনকালীন মূল্যায়ন ও সামষ্টিক মূল্যায়নও এক থাকবে। একই প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, তবে মাদরাসা ও কারিগরির ক্ষেত্রে নতুন কিছু বিষয় যুক্ত হতে পারে। ১২০টি দেশের শিক্ষাক্রম পর্যালোচনা করে দেশে নতুন এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

বর্তমানে প্রচলিত সৃজনশীল পদ্ধতি থাকছে না, এর পরিবর্তে অভিজ্ঞতা  বা দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা যুক্ত করা হবে। সর্বোচ্চ জিপিএ পয়েন্ট ৫-এর পরিবর্তে চার হচ্ছে। গত দশ-এগার বছরে সৃজনশীল পদ্ধতি বাস্তবায়নের নামে কোটি কোটি টাকা খরচ করে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও আজ পর্যন্ত ওই পদ্ধতি আয়ত্ত্বে আনতে পারেননি অনেক শিক্ষক। এর ফলে সৃজনশীল পদ্ধতি নোট-গাইড নির্ভর হয়ে পড়েছিল। তাই বলা হচ্ছে, শিক্ষকদের সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া না হলে এই নতুন পদ্ধতিও কতটা কাজে লাগবে সেটিও প্রশ্ন। পাঠদান শ্রেণিকক্ষেই শেষ করতে হবে। হোমওয়ার্ক কম দিতে হবে যাতে শিক্ষার্থীরা নিজেরা সময় কাটাতে পারে, খেলাধুলা করতে পারে। তৃতীয় লিঙ্গের শিশু ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের স্কুলে ভর্তি করতে হবে। তারা যেখানে ভর্তি হতে চায় সেখানেই ভর্তি করতে হবে বলে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রীকে। তবে সব বিষয় যাতে বাস্তবায়ন হয় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ খাবারের রেসিপি কাগজে লেখা যায় অত্যন্ত আকষর্ণীয়ভাবে, কিন্তু খাবার তৈরি করে সেটিকে উপাদেয় করা কঠিন কাজ। সেই কঠিন কাজটির কোনো উল্লেখ এখানে নেই। শিক্ষার হাজারো সীমাবদ্ধতা ও বৈষম্যের মাঝে বাস্তবায়নের প্রেসক্রিপশন না থাকলে নতুন কারিকুলাম কতটা বাস্তবায়িত হবে, সেই সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।

লেখক : মাছুম বিল্লাহ, ব্রাক শিক্ষা কর্মসূচিতে কর্মরত। প্রেসিডেন্ট, ইংলিশ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইট্যাব)

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0078349113464355