বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের কথা বলে গত ২৫ আগস্ট কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৫তম সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষা কার্যক্রমের সময়সূচি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টার পরিবর্তে এক ঘণ্টা এগিয়ে ৮টা থেকে ৪টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। এ সিদ্ধান্তে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমের সময় আগের মতোই আট ঘণ্টা রাখা হলেও প্রশাসনিক কার্যক্রমের সময় এক ঘণ্টা কমিয়ে ৯টা থেকে ৪টা পর্যন্ত সাত ঘণ্টা নির্ধারণ করা হয়। এদিকে বৃহস্পতিবার সশরীরে ক্লাস নেওয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষাসূচির এ সিদ্ধান্ত ৭৩তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশের ভিত্তিতে সিন্ডিকেটে নেওয়া হলেও গত ১৬ নভেম্বর সাধারণ সভায় আগের শিক্ষাসূচিতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ শিক্ষাসূচি আগের মতোই সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে। তবে এবারও প্রশাসনিক কার্যক্রম সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সাত ঘণ্টা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। তবে এ সভায় কর্মকর্তাদের অফিস কার্যক্রম ৫টা পর্যন্ত চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও রেজল্যুশনে ৪টা পর্যন্ত লেখা হয়েছে বলে দাবি করেছেন সভায় উপস্থিত কয়েকজন শিক্ষক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বলেন, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের অফিস টাইমে এমন বৈষম্য দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে বলে মনে হয় না। এটা অসামঞ্জস্যতার সৃষ্টি করে।
আবার ৮৫তম সিন্ডিকেট সভায় অন্যান্য সিদ্ধান্তের পাশাপাশি বৃহস্পতিবার অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৬ নভেম্বরের সাধারণ সভায় অন্যান্য সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হলেও বৃহস্পতিবার অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত রেখেছে প্রশাসন।
মায়িশা সুবাহ প্রমি নামে লোকপ্রশাসন বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, করোনার পর আমাদের সেশনজট কমানোর জন্য চার মাসে সেমিস্টার শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। সে ক্ষেত্রে বৃহস্পতিবার ক্লাস বন্ধ রাখা বিধ্বংসী সিদ্ধান্ত এবং পূর্ববর্তী সিদ্ধান্তের বিপরীত।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী বলেন, মিটিংয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও অফিস সময় ৫টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু রেজল্যুশনে ৪টা পর্যন্ত লেখা হয়েছে। এটা উপাচার্য নতুন চিন্তাভাবনা করে করেছেন। এর আগের সিদ্ধান্তও কেউ সমর্থন করেনি। গত যে মিটিংয়ে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তাও কেউ সমর্থন করেনি। এরপরও রেজল্যুশন কেন এভাবে হয়, আবার মিটিং হলে জানা যাবে।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অফিস কার্যক্রম এটা সরকারি সিদ্ধান্ত। এখন এ সিদ্ধান্ত তো আমরা পরিবর্তন করতে পারি না। আমাদের ক্লাসের সময় তো সরকার নির্ধারণ করে দেয় না, এটা নির্ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়। ক্লাস যদি ৫টা পর্যন্ত কেউ নিতে চায়, সেটা নেওয়া যাবে। সিন্ডিকেটে পাস হওয়া সিদ্ধান্ত সাধারণ সভায় পরিবর্তন করা যায় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার যেহেতু পরিবর্তন করেছে তাই সাধারণ সভায় এভাবে নেওয়া হয়েছে। এটা প্রশাসন পরবর্তী সিন্ডিকেটে রিপোর্ট করবে। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত আপাতত বলবৎ থাকবে।