কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি (ইলিয়াস-মাজেদ) বিলুপ্তির পর অর্ধশতাধিক মোটর সাইকেল নিয়ে শোডাউন ও বাজি ফুটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের এক পক্ষের বিরুদ্ধে।
শনিবার দুপুর ৩ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে বহিরাগতদের প্রায় অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে শোডাউন দিতে দেখা গেছে। এর পাশাপাশি হলের সামনে বাজি ফুটানো হয়। এক সময় মোটরসাইকেল আরোহীদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে বঙ্গবন্ধু হলের তৃতীয় তলা পর্যন্ত উঠে যেতে দেখা যায়।
এ সময় মোটরসাইকেল শোডাউনের প্রেক্ষিতে সদ্য সাবেক কমিটির নেতা-কর্মীরা হল থেকে রামদা, লাঠি, রড নিয়ে বের হয়ে আসে। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীসহ প্রক্টরিয়াল বডির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত হলে মোটরসাইকেল আরোহীরা দ্রুত পালিয়ে যায়। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি মূল ফটকে পুলিশ মোতায়েন করে।
এতগুলো মোটরসাইকেল ক্যাম্পাস এরিয়ায় ঢুকলো কীভাবে, এমন প্রশ্নে মূল ফটকে দায়িত্বরত আনসার জালাল মিয়া দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা গেটেই ছিলাম। কিন্তু এত সংখ্যক মোটরসাইকেল একসঙ্গে এসে নিজেরাই গেট খুলে ঢুকে গিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক কমিটির নেতাকর্মীরা দাবি করেন, ক্যাম্পাসে হল দখল করতে এবং শিক্ষার্থীদের আতঙ্কিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থাকা ছাত্রলীগের একটি পক্ষ এমন কাজ করেছে। এ সময় কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমানকে শোডাউনে দেখা গেছে। সাবেক কমিটির নেতারা এ জন্য মিজানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
এ ব্যাপারে কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি তো ক্যাম্পাসের বিষয়ে কিছুই জানি না। আমি বাড়িতে।
কর্মচারী সমিতির সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমাদের সংগঠন হলো একটি পেশাজীবি সংগঠন। এখানে শুধু বঞ্চিত কর্মচারীদের নিয়ে কথা বলা হয়। রাজনৈতিক বিষয়টি ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ে কী হয়েছে তা আমি জানি না।
ক্যাম্পাসের বাইরে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আগামী কমিটিতে পদপ্রত্যাশী রেজা-ই-ইলাহী এ ব্যাপারে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আমাদের কেউ সেখানে যায়নি। তারাই হামলা করে আমাদের দায় দিচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, একটু আগে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে আমরা প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য ও অন্যান্য হলের প্রভোস্টদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছি। উপাচার্য মহোদয় ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ কী নেয়া যায় দেখছি।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।