কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করবে বাংলাদেশ-ভারত - দৈনিকশিক্ষা

কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করবে বাংলাদেশ-ভারত

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ভারত ও বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছরের কথা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বর্তমান অধিবেশনে তুলে ধরবে। এরই মধ্যে বর্তমান অধিবেশনে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের সুবর্ণ জয়ন্তী কথা তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে একই অধিবেশনে প্রতিবেশি দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ভাষণ দেবেন। তার ভাষণের উঠে আসতে পারে দুই দেশের সুসম্পর্কের কথা। খবর ইন্ডিয়া নিউজ স্ট্রিমডটকম।

ঠিক ৫০ বছর আগে, উভয় দেশের কূটনীতিকরা সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে একসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিবাহিনী এবং ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা সুপরিচিত। তবে কূটনৈতিক উদ্যোগের দিকে সবার মনোযোগ আকর্ষণ করাও গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের পক্ষ থেকে সেসময় কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হয়েছিল যাতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিষয়টি একটি বৈশ্বিক প্লাটফর্মে উত্থাপন করা যায়।

ভারত এবং বাংলাদেশ ২০২২ সালে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবে। এ উপলক্ষ্যে ভারত ২০২২ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানাতে পারে। বাংলাদেশের জন্মের ৫০ বছর উদযাপন করতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চলতি বছরের মার্চ মাসে বাংলাদেশ সফর করেন।   

মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতিসংঘে ভারতের তৎকালীন স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন সমর সেন। ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের সমর্থনে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন তিনি। যেখানে ২৪টি দেশ অংশ নিয়েছিল। এটি একটি আনন্দদায়ক বিষয় যে, ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীই এই সপ্তাহে ইউএনজিএ -র একই প্ল্যাটফর্ম থেকে কয়েক ঘন্টার মধ্যে বক্তব্য রাখছেন। ১৯৭১ সালের সেই ২৪ দেশের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ সৃষ্টির জন্য তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিলেন। এরপর বিশাল শরণার্থী স্রোত ভারতে আশ্রয় নিলে সেই সংকটেও ওই ২৪ দেশ সমর্থন ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিণ। ১ কোটিরও বেশি মানুষ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসেছিল ভারতে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংসতা ও গণহত্যার হাত থেকে প্রাণ বাঁচাতেই প্রতিবেশি দেশে তারা আশ্রয় নিয়েছিল।

এর আগে, ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে যেমন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল, শীতল যুদ্ধের সেই তুঙ্গ সময়ে, বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে এবং জাতিসংঘের মতো বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মে পাকিস্তানের নৃশংসতার বিষয়টি উত্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে একটি কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শুরু করে ভারত।

পঞ্চাশ বছর আগে, ১৯৭১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে, তৎকালীন পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী সর্দার স্মরণ সিং এর নেতৃত্বে ভারতীয় প্রতিনিধি দলটি তখনকার পূর্ব পাকিস্তানে যে অত্যাচার চলছে তা বিশ্বকে অবহিত করেছিল। সাধারণ পরিষদের বৈঠকে কথা বলতে গিয়ে স্মরণ সিং তখনকার সন্ত্রাসের রাজত্বের কথা বলেছিলেন। তিনি পাকিস্তানের হেফাজতে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের প্রতি আহ্বানও জানান সে বৈঠকে।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক রেড ক্রসকে ওই এলাকা পরিদর্শন করার অনুমতি দেওয়া হয়নি এবং বিশ্বের সেই অংশে যা ঘটছে তা গোপন করার সমস্ত প্রচেষ্টা করা হয়েছিল। হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট ব্যাপক হয়ে উঠেছে।’

নিউইয়র্কের স্থায়ী মিশনে পলিটিক্যাল কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী একজন ভারতীয় বিদেশী কর্মকর্তা এএনডি হাসকার- এর মতে, ভারত শুধু জাতিসংঘে বাংলাদেশের সঙ্কটের বিষয়টি উত্থাপন করেই ক্ষান্ত হয়নি। বরং নিউইয়র্কে বাংলাদেশী প্রতিনিধিদের আশ্রয়ও দিয়েছে। যাতে তারা নিজেদের অবস্থান ও সংকট অনানুষ্ঠানিক কূটনৈতিক বৈঠকের মাধ্যমে সবার কাছে তুলে ধরতে পারে। এই প্রতিনিধিদের কেউ কেউ স্বাধীন বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন।

ইতোমধ্যে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশের সমর্থন আদায়ের জন্য বিশ্বের বেশ কয়েকটি রাজধানী ভ্রমণ করেছেন। ভারতের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ইতিবাচক ফল দিয়েছে। কারণ সেসময় যুক্তরাজ্য, পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়া এবং পোল্যান্ড বাংলাদেশের প্রতি সহানুভূতি ও সমর্থন প্রকাশ করেছিল। ভারত সফল হয়েছিল যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স উভয়কেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই ইস্যুতে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করার ক্ষেত্রে। ১৯৭১ সালে শেষের দিকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তানপন্থীদের তৎপরতা রুখে দিতেও সফল হয়েছিল।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের সময়, চীন পাকিস্তানকে সমর্থন করেছিল এবং বাংলাদেশের নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চালানো নির্যাতন ও গণহত্যার নীরব দর্শক ছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর চীন এমনকি জাতিসংঘে নবগঠিত দেশটির প্রবেশে ভেটোও দেয়।

চলতি সপ্তাহে, ভারত প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানের হেফাজত থেকে মুক্তির আহ্বান জানানোরও ৫০ বছর পর। জাতির পিতার মেয়ে শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে একটি বিশাল, স্বাধীন ও দ্রুত উঠতি এবং উচ্চ প্রবৃদ্ধির এক আশাবাদী অর্থনৈতিক দেশের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত ও গর্বিত নেতা হিসেবে বক্তব্য রেখেছেন। কয়েকঘন্টা পরই ভারতও জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য রেখেছেন।

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038149356842041