করোনা সংকটে অনলাইনে ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে বিশ্বের বহু শিক্ষার্থীই। কিন্তু যাদের প্রযুক্তিগত কোনও সুবিধা নেই, তারা বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে।
ইন্দোনেশিয়ার মধ্য জাভা প্রদেশের পার্বত্য এলাকা মাগেলানে এ রকম সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন এক শিক্ষক। বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরম মমতায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন তিনি।
শিক্ষকতা যে মহান পেশা, সেটি আবারো প্রমাণ করলেন ইন্দোনেশিয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হেনরিকাস সুরোতো। মহামারি শুরুর পর থেকেই সারা বিশ্বে কার্যত থমকে আছে শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষার্থী অন্তঃপ্রাণ সুরোতো তাই গোটা ক্লাসরুম কাঁধে নিয়ে ছুটছেন তাদের ঘরে ঘরে।
ইন্দোনেশিয়ার বহু দুর্গম অঞ্চলে, ইন্টারনেট তো দূরের কথা, মোবাইল নেটওয়ার্কই নেই। তাই মধ্য জাভা প্রদেশের পার্বত্য এলাকা মাগেলানে যেসব শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাস করতে পারছে না, তাদের জন্য আছেন সুরোতো স্যার। বাড়ির উঠোনকেই ক্লাসরুম বানিয়ে নিচ্ছেন তিনি। আর শিক্ষার্থীরা বলছে, বিদ্যালয়ে যেতে না পারলেও, পড়াশোনায় কোন ব্যাঘাত ঘটছে না তাদের।
একজন অভিভাবক বলেন, "বাবা মায়ের চেয়ে শিশুরা তাদের শিক্ষককে বেশি মানে। অনেক সময় দেখা যায়, আমাদের কথা শুনছে না। কিন্তু শিক্ষককে দেখে ভয়ে ঠিকই পড়তে বসছে। মি. সুরোতো না থাকলে ওদের পড়শোনা কঠিন হয়ে যেত।"
বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিদিন ৬ ঘণ্টা করে পাঠদানে, এরপরও কোন কষ্ট নেই। হাসিমুখে এমনটাই বললেন, ৫৭ বছর বয়সী হেনরিকাস সুরোতো।
তিনি বলেন, "আমি একজন শিক্ষক আর এটা আমার দায়িত্ব। যে কোনো পরিস্থিতিতে আমার ছাত্র-ছাত্রীদের পড়শোনা নিশ্চিত করতে হবে সবার আগে। কিন্তু বৃষ্টির দিনে একটু সমস্যা হয় চলাফেরা করতে। তবে কোনো কষ্টই কষ্ট মনে হয় না, যখন ওদের পড়তে দেখি।"