কুমিল্লার মুরাদনগরে একটিনপ্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি ক্লাসরুমের ছাদের পলেস্তরা খসে পড়েছে। তবে এ ঘটনার সময় ক্লাস বিরতি চলতে থাকায় শিক্ষার্থীরা অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন। গত শনিবার উপজেলার পুস্করিনীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল রোববার বিষয়টি জানাজানি হয়।
ঘটনার সময় শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষের বাইরে থাকলেও পরে আতঙ্ক নিয়ে ক্লাস করছেন তারা।
জানা যায়, শ্রেণিকক্ষ সংকট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চালিয়ে আসছে পুস্করীনিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কতৃপক্ষ। প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছয়টি শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন হলেও জরাজীর্ণ ভবনের ৩টিসহ মোট ৪টি কক্ষে গাদাগাদি করে বসিয়ে চলে পাঠদান কার্যক্রম। বিদ্যালয়টিতে দ্রুত নতুন একটি ভবন তৈরির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ঝুকিমুক্ত পাঠদান করার জন্য কতৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান স্থানীয় অভিভাবকরা।
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সবুজ মিয়া দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, 'আমার ছেলেডা যেই ক্লাসে বইসা পড়ালেখা করে সেই ক্লাসের নাকি ছাদ ভাইঙ্গা পড়ছে। আল্লায় বাচাঁইছে আমার পোলাডারে। লেখাপড়া করতো গিয়া যদি স্কুলে ছাদ ভাইঙ্গা পোলাপান মারা যায় তাহলে কেমনে হবে। সরকারি একটা ইস্কুলের যদি এই অবস্থা হয়।'
আরেক অভিভাবক মির্জা হোসেন দৈনিক শিক্ষার বলেন, ছেলে মেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকি কখন কি হয়। আমরা এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কোহিনুর আক্তার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ বিদ্যালয়টিতে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ২১৮জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শ্রেণিকক্ষ সংকটে আমরা সঠিকভাবে পাঠদান করাতে পারছি না। আমাদের বর্তমানে চারটি ক্লাসরুমের মধ্যে ৩টি ক্লাসরুমই হলো ঝুকিপূর্ণ। জরাজীর্ণ ভবনটিতে প্রতিনিয়ত চরম উৎকন্ঠা নিয়ে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা ক্লাস করছেন। আমাদের বিদ্যালয়ের দুইপাশে বাউন্ডারী দেয়াল নেই এবং দুইপাশে দুটি পুকুর থাকায় মাঝে মাঝে ছাত্র-ছাত্রীরা খেলাধূলা করতে গিয়েও পুকুরে পড়ে যায়। বিদ্যালয়ে দপ্তরি না থাকায় আমরা অনেক কাজকর্ম করতে পারছি না।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. সেলিম সরকার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিদ্যালয়ের ভবনটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। অনেকবার উপজেলায় আবেদন করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কয়েকদিন আগে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষের ছাদ ও বিমের অনেককাংশ ভেঙে পড়ে। তখন ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাসে না থাকায় বড় ধরনের দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা হয়েছে। এখন অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি নতুন ভবন করা না হলে এ গ্রামের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা পুরোটাই ভেঙ্গে পড়বে।
বাঙ্গরা ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা অফিসার আনোয়ার হোসেন চৌধুরী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ভবনটির ছাদের বিম ভেঙে পড়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভবনটি পরীক্ষা করার জন্য ইঞ্জিনিয়ার অফিসকে চিঠি দিতে বলা হয়েছে।
মুরাদনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফওজিয়া আকতার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, পুস্করিনীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবনের জন্য অধিদপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি নতুন ভবনের অনুমোদন পাওয়া যাবে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষা ডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।