খাতা মূল্যায়নের সুযোগ হারাচ্ছে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউগুলো - দৈনিকশিক্ষা

খাতা মূল্যায়নের সুযোগ হারাচ্ছে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউগুলো

নিজস্ব প্রতিবেদক |

দেশের সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রথম থেকে শুরু করে সব সেমিস্টারের খাতা মূল্যায়ন করা হবে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমে। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই নিয়মের বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পূর্বে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সেমিস্টারের খাতা মূল্যায়নের সুযোগ ছিল স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। 

পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে খাতা মূল্যায়ন হওয়ায় অনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বেশি নম্বর দেয়ার অভিযোগ ছিল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ বন্ধ করতে সব সেমিস্টারের খাতা বোর্ডের মাধ্যমে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

তথ্যমতে, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের মেয়াদ ৪ বছর। চার বছরে শিক্ষার্থীদের মোট আটটি সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। প্রতি সেমিস্টারের মেয়াদ ৬ মাস করে। প্রতি সেমিস্টারে একটি মিডটার্ম পরীক্ষা এবং একটি ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর আবার নতুন সেমিস্টার শুরু হয়। অর্থাৎ প্রতি ৬ মাস পর পর সেমিস্টার পরিবর্তন হয়। ফলে শিক্ষার্থীদের প্রতি বছরে ২টি করে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়।

নতুন সিদ্ধান্তের পূর্বে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা বোর্ডের নির্দেশ অনুযায়ী নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে হত। ফলাফলও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রকাশ করত। এই খাতাগুলো প্রতিষ্ঠানেই সংরক্ষিত থাকত। চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম এবং অষ্টম সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত হত। পরবর্তীতে সবগুলো সেমিস্টারের রেজাল্টের গড় করে একটি গ্রেড পয়েন্ট দেওয়া হয়।

প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সেমিস্টারের খাতা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক মূল্যায়ন করায় শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাড়তি অর্থ আদায় করতেন বলে অভিযোগ ছিল। এছাড়া অনেক শিক্ষক ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়াতেন। যারা প্রাইভেট পড়তেন তারা তুলনামূলক ভালো নম্বর পেতেন বলেও অভিযোগ ছিল।

বিষয়গুলো আমলে নিয়ে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, কারিগরি অধিদপ্তর এবং বোর্ডের যৌথ সভায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সেমিস্টারের খাতা বোর্ডের মাধ্যমে মূল্যায়নের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরবর্তীতে সেই সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন নেয়া হয়। চলতি বছর থেকে সেটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। 

জানতে চাইলে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. ওমর ফারুক বলেন, আমরা অনেক আগ থেকেই বোর্ডের মাধ্যমে সব সেমিস্টারের খাতা মূল্যায়নের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। তবে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে পলিটেকনিকের সব সেমিস্টারের খাতা বোর্ডগুলো মূল্যায়ন করবে।

কারিগরি শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পরপরই সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে চিঠি পাঠিয়ে বোর্ডের মাধ্যমে খাতা মূল্যায়নের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানানো হয়েছে। চিঠি পাওয়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো চলতি বছরের প্রথম সেমিস্টারের খাতা বোর্ডে পাঠিয়েছেন। এই খাতা মূল্যায়নের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

ওই সূত্র আরও জানায়, বোর্ডের মাধ্যমে মূল্যায়ন হওয়ায় শিক্ষার্থীরা এখন থেকে বাড়তি মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করবে। প্রথম সেমিস্টার থেকেই তারা বোর্ড পরীক্ষার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করবে। এতে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার মান বাড়বে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সব সেমিস্টারের খাতাই বোর্ডের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে। ইতোমধ্যে মূল্যায়ন শুরুও হয়েছে। চলতি বছর প্রথম সেমিস্টারের খাতাগুলো বোর্ডে এসেছে। এই খাতা দেখার কাজ প্রায় শেষ। শিগগিরই কেন্দ্রীয়ভাবে ফল প্রকাশ করা হবে।

প্রসঙ্গত, ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং পর্যায়ের গ্রেডিং নির্ধারণ করা হয় জিপিএ-৪ স্কেলে। প্রতি সেমিস্টারের রেজাল্ট সিজিপিএ আকারে দেওয়া হয়। এই সিজিপিএর গড় থেকে ফাইনাল গ্রেডিং নির্ধারণ করা হয়। এক্ষেত্রে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সেমিস্টারে প্রাপ্ত সিজিপিএ থেকে ৫ শতাংশ, চতুর্থ সেমিস্টারে প্রাপ্ত সিজিপিএর ১০ শতাংশ, পঞ্চম সেমিস্টারের সিজিপিএর ১৫ শতাংশ, ষষ্ঠ সেমিস্টারের ২০ শতাংশ, সপ্তম সেমিস্টারের ২৫ শতাংশ এবং অষ্টম সেমিস্টারে প্রাপ্ত সিজিপিএর ১৫ শতাংশ নম্বর নেয়া হয়।

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0068957805633545