খালেদার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি নিয়ে আইনজীবীদের দুই মত - দৈনিকশিক্ষা

খালেদার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি নিয়ে আইনজীবীদের দুই মত

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার আবেদন নাকচ হওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে পরস্পরবিরোধী অভিমত ও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সরকার সমর্থক ও বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা।

সরকার সমর্থকরা বলছেন, আইনের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সে হিসেবে এই সিদ্ধান্ত সঠিক হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের মতে, আইন দিয়ে সব সময় সব কিছু বিবেচনা করা যায় না। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার বয়স ও অসুস্থতা বিবেচনায় নিয়ে সরকার ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এখানে মানবিক বিষয়টি উপেক্ষিত হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় খালেদা জিয়ার সাজা ও দণ্ডাদেশ স্থগিত করে যে শর্তে তাকে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, তা শিথিল করে এখন তাকে বিদেশে যেতে দেওয়ার 'সুযোগ নেই'।

আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’

সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, একজন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি বিদেশে যাবেন কী করে? তিনি (খালেদা জিয়া) তো দেশেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে তার সাজা স্থগিত করে বাসায় থাকার এবং চিকিৎসার সুবিধা দেওয়া হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির বিদেশে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই বা আইনের বিধানও নেই। তিনি বলেন, সরকার বিনা কারণে কাউকে বিদেশ যেতে দিতে পারে না। অতীতেও এমন নজির নেই। সরকার সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, সরকার খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি না দিয়ে 'অমানবিক কাজ' করেছে। বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে সরকারের দায় নেওয়া উচিত হয়নি। আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে এটি করা হয়েছে। সরকার ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী শর্তসাপেক্ষে বা শর্ত ছাড়া দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে সাজা মওকুফ, স্থগিত বা কমাতে পারে। এটা সরকারের এখতিয়ার। এই আইন করা হয়েছে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জন্য।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন

তিনি বলেন, কোনো অঘটন ঘটে গেলে এর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে। খালেদা জিয়ার সাজা হয়েছে নিম্ন আদালতে। আপিলের সিদ্ধান্ত এখনও আসেনি। এ অবস্থায় খালেদা জিয়ার বয়স ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে তাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহ্‌দীন মালিক বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ (১) ধারায় বলা আছে যে, সরকার কোনো শর্ত ছাড়া অথবা শর্তসাপেক্ষে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির সাজা স্থগিত করতে পারে। এখানে সরকার খালেদা জিয়া ঘরে থেকে চিকিৎসা করাবেন এবং ছয় মাসের জন্য সাজা স্থগিত থাকবে- এই দুই শর্ত দিয়েছিল। দ্বিতীয় শর্ত অর্থাৎ ছয় মাসের শর্তটি সরকার ইতোমধ্যে দুইবার পরিবর্তন করেছে। আবারও সময় বাড়িয়েছে। অর্থাৎ সরকার শর্ত পরিবর্তন করতে পারে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে সর্বশেষ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার যে কোনো জায়গায় বা হাসপাতালে চিকিৎসার শর্ত দিতে পারত। অথবা পরিবারের আবেদন প্রত্যাখ্যান বা নামঞ্জুর করতে পারত। কিন্তু শর্ত বদলানো বা পরিবর্তন করা যাবে না, এটা মোটেও সঠিক আইনি ব্যাখ্যা না। কারণ সরকারের শর্ত পরিবর্তনের ক্ষমতা আছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, দুদকের মামলায় সরকারের হস্তক্ষেপ করার আইনগত কোনো এখতিয়ার নেই। দেরিতে হলেও সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আইন খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়েছে। সেই সাজা মওকুফের এখতিয়ার একমাত্র রাষ্ট্রপতির। খালেদা জিয়ার এখন একমাত্র পথ খোলা আছে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করা। এখানে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে না।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন বলেন, 'সরকার সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। এটা প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ।' তিনি বলেন, 'সরকার নির্বাহী আদেশে যে কোনো সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির সাজা মওকুফ বা স্থগিত করতে পারে। এখানে আইনগত কোনো বাধা নেই। খালেদা জিয়া তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। তার শারীরিক অবস্থা খুই খারাপ। বিষয়টি রাজনীতিতে নিয়ে আসা সঠিক হয়নি। এটা অমানবিক কাজ হয়েছে।'

পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0066709518432617