খুনির সাথে ৫ লাখ টাকায় আপোষ! - দৈনিকশিক্ষা

খুনির সাথে ৫ লাখ টাকায় আপোষ!

এম এ কবীর, ঝিনাইদহ |

মানুষ হত্যার কৌশল শেখানোর ছলে জমি নিয়ে বিরোধ থাকা ভ্যান চালক রেজাউলকে হত্যা করা হয়। মোবাইল ফোনে রেজাউলকে ডেকে এনে কিভাবে মানুষ হত্যা করতে হয় তা দেখাতে প্রথমেই তার হাত ও মুখ বেঁধে ফেলে রঞ্জিত নামে এক খুনি। হাত বাঁধার পর গামছা গলায় পেঁচিয়ে রেজাউলকে মাটিতে ফেলেও দেয় রঞ্জিত। বাঁচার জন্য রেজাউল হাত-পা ছুড়লে আরিফ ও মঞ্জুর রেজাউলের ২ পা চেপে ধরে। এ অবস্থায় আকতার ধারালো ছুরি দিয়ে রেজাউলের গলা কেটে হত্যা করে। 

মৃত্যু নিশ্চিত করে গামছা খুলে মাটিতে পুতে দেয় আরিফ। রেজাউলের মোবাইল নেয় আকতার। পাশের পুকুর থেকে রক্ত ধুয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে সবাই। হত্যার এই লৌমহর্ষক বর্ণনা উঠে আসে ঘাতক রাজু, আরিফ ও মঞ্জুর স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দিতে। এ ঘটনার পরদিক সকালে রেজাউলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যার ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদি হয়ে বশির উদ্দিন, একই গ্রামের রাজ্জাক হোসেনের ছেলে আবুল কাশেম ও আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে কবির হোসেনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতদের আসামি করে ঝিনাইদহ সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঝিনাইদহ সদর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এস আই) নিরব হোসেন বশিরসহ হত্যা মিশনে অংশ নেয় ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এদের মধ্যে বশির ছাড়া অন্যদের গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রঞ্জিত বাদে রাজু, আরিফ ও মঞ্জুর দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এরপরই মামলাটির মোড় নেয় ভিন্নদিকে।

মামলার বাদি নিহত রেজাউলের স্ত্রী আনজিরা খাতুন ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ জুন আপোষ মিমাংসা করে। যা দেখিয়ে হত্যার প্রধান পরিকল্পনাকারী বশির জামিন পায়। জামিনে মুক্ত হয়ে হত্যাকারী রঞ্জিতও ঢাকায় পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর মামলাটি ঝিমিয়ে পড়লে নিহতের ভাই আদিল উদ্দিন আদালতে চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি দেন। আদালতের নির্দেশে তদন্তভার যায় সিআইডি পুলিশের হাতে। সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ন কবীর ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ ডিসেম্বর ওই ৬জনকে অভিযুক্ত করে আবারও আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। 

নিহতের ভাই আদিল উদ্দিন বলেন, বাদি লিখিত এজাহারে নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। পরবর্তীতে স্বাক্ষ্য প্রদানের সময় আদালতে তাদের নাম এড়িয়ে যান। আমার ভাইয়ের স্ত্রী টাকা নিয়ে হত্যা মামলাটির অপমৃত্যু ঘটিয়েছে বলে নোটারী পাবলিকে দেয়া তার শপথ নামায় প্রমাণ হয়েছে। যেকারণে আমরা বিচার পাচ্ছি না। থানায় একাধিকবার জীবননাশের আশংকা করে জিডি ও মামলা দায়েরের পরও বসির ও তার সহযোগিদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি আমার ভাই ভ্যানচালক রেজাউল। 

তারা হত্যা মিশন বাস্তবায়ন করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি। এখন বাদিকে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে আলোচিত রেজাউল হত্যা মামলাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। মামলাটি বেচাকেনা করায় আদিল উদ্দীন আদালতের মাধ্যমে মামলার বাদির পরিবর্তন চান। এ ব্যাপারে মামলার বাদি আনজিরা খাতুনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। আমি কোন আপোষ করিনি তবে আসামিদের সাথে কথাবার্তা চলছে। বিচারাধীন এ মামলার পি পি অ্যাডভোকেট ইসমাইল হোসেন বলেন, এখনও ডাক্তার ম্যাজিস্ট্রেট ও কেসের আইও এই তিন জনের সাক্ষী বাকি আছে। স্বাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলে রায় হবে। দেরিতে হলেও আইনি জটিলতা কাটিয়ে এ মামলার রায়ে প্রমানিত হত্যা কারীর শাস্তি হবে বলে রাষ্ট্র পক্ষ মনে করেন।
 
উল্লেখ্য ঝিনাইদহ পৌরসভার মুরারীদহ গ্রামের মৃত গোলাম আকবরের ছেলে রেজাউল ও তার বড় ভাই আদিল উদ্দিনের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ ছিল একই এলাকার মৃত রহিম বক্সের ছেলে বসির উদ্দিনের। এ ঘটনার জের ধরে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ১০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০ টার দিকে মোবাইলে রেজাউলকে ডেকে নিয়ে ক্যাডেট কলেজের পেছনে একটি বাগানে হত্যা করা হয়।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0046460628509521