গুচ্ছ পদ্ধতি বাড়াচ্ছে যন্ত্রণা - দৈনিকশিক্ষা

গুচ্ছ পদ্ধতি বাড়াচ্ছে যন্ত্রণা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

কুষ্টিয়ার হাজী আবদুল আলিম কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পাস করেছেন হাসানাত জামির। এসএসসিতে তাঁর জিপিএ ছিল ৪.৬৭। করোনার কারণে অটোপাস হওয়ায় এইচএসসিতেও একই জিপিএ থাকছে তাঁর। এই জিপিএ নিয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেন না বিজ্ঞানের এই শিক্ষার্থী।

হাসানাত মনে করেন, আলাদা ভর্তি পরীক্ষা হলে কোথাও না কোথাও বিজ্ঞান অনুষদে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারতেন তিনি। এখন গুচ্ছ পদ্ধতি সুবিধার চেয়ে বঞ্চনাই বাড়াল তাঁর। দেশে প্রথমবারের মতো গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবার। এ জন্য যে ফলাফল চাওয়া হয়েছে, তাতে মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের প্রাথমিক আবেদনকারী সব শিক্ষার্থী চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। 

অন্যদিকে বিজ্ঞান বিভাগের ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪১ জনের মধ্যে চূড়ান্ত আবেদন করতে পারবেন ১ লাখ ৩১ হাজার ৯০৫ জন শিক্ষার্থী। বাকি ৬২ হাজার ৯৩৬ জন শিক্ষার্থী বাদ পড়ছেন। অথচ গুচ্ছ ব্যতীত আলাদা ভর্তি পরীক্ষা হলে বাদ পড়া এসব শিক্ষার্থীর প্রত্যেকেই এই ফলাফল দিয়ে কোথাও না কোথাও পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেতেন। 

নটর ডেম কলেজ থেকে পাস করা ময়মনসিংহের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলামের প্রশ্ন, চলতি বছরে এইচএসসি পাস করেছেন ১৫ লাখ শিক্ষার্থী। ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০ হাজার করে শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিলেও ১০ লাখ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারবেন। তাহলে বিজ্ঞান থেকে এত কম শিক্ষার্থী কেন পরীক্ষা দেবেন? তাঁর ভাষায়, ভোগান্তি দূর করার নাম করে যে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে, তা এখন আমাদের মানসিক যন্ত্রণার প্রধান কারণ হয়ে উঠছে। 

আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’

যাঁরা চূড়ান্ত ভর্তি পরীক্ষার জন্য মনোনীত হয়েছেন, তাঁরাও আবেদন ফি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আগে চূড়ান্ত আবেদন ফি ৬০০ টাকা নির্ধারিত থাকলেও এখন তা বাড়িয়ে ১ হাজার ২০০ টাকা করা হয়েছে। মানবিক থেকে মনোনীত রায়হান চৌধুরী বলেন, সংকটের এ সময়ে আর্থিক টানাপোড়েন ও অনিশ্চয়তায় অনেকেই পড়াশোনার হাল ছেড়ে দিচ্ছেন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকাংশ ভর্তি-ইচ্ছুক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। একটা পরীক্ষাই 

যেহেতু হবে, সেখানে এত টাকা লাগবে কেন? অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় সবচেয়ে বেশি, দ্বিগুণ আবেদন ফি নির্ধারণ করা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। 

তবে চলতি বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞান বিভাগে যেখানে ১ লাখ ২৩ হাজার ছাত্রের পরীক্ষা নিচ্ছে, সেখানে ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় মিলে ১ লাখ ৯৪ হাজার ছাত্রের পরীক্ষা নিতে কেন পারছে না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। কয়েক দিন ধরে বিজ্ঞানের সব শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়ার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নানা কর্মসূচিও পালন করে আসছেন বাদ পড়া এসব ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী। 

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিজ্ঞানের মনোনীতদের মধ্যে যারা চূড়ান্ত পরীক্ষার আবেদন করবে না, সেখানে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপে বাদ পড়াদের সুযোগ দেওয়া হবে। 

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন

আর পরীক্ষা ফি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম সাড়ে চার লাখের পরীক্ষা নিব। এখন আমাদের পরীক্ষার্থী দেড় থেকে দুই লাখের বেশি হবে না। যত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম হবে, তত খরচ বেড়ে যাবে। এ ফি ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাগ করলে প্রতিটায় ৬০ টাকা করে পড়বে। আমাদের পরীক্ষার কেন্দ্রগুলো সারা দেশে। সেখানে শিক্ষকেরা যাবেন, প্রশ্ন পাঠাবেন, কর্মচারীদের এখানে যুক্ত করতে হবে ইত্যাদি কারণে অনেক খরচ হবে। এ টাকা দিয়েও পারব কি না সন্দেহ আছে।’

প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038199424743652