উচ্চমাধ্যমিকের ফল নির্ধারণ হয়েছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক ও জেএসসির গুণগত মানের ওপর ভিত্তি করেই। শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করে পরবর্তী ধাপে উচ্চশিক্ষায় ভর্তির জন্য আবেদন করবে। গতবারের তুলনায় এবার জিপিএ-৫ সংখ্যাও বেড়েছে। সামনে অপেক্ষা করছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রাসঙ্গিক কার্যক্রম। করোনার বহুল সংক্রমণে সবচেয়ে বিপন্ন অবস্থায় পড়েছে দেশের শিক্ষা কর্মসূচী। এখন উচ্চশিক্ষার পাদপীঠগুলোতে অনুপ্রবেশের মেধা ও মনন যাচাইয়ের পালা। ভর্তি পরীক্ষাই শুধু নয়, তার চেয়েও বেশি ভর্তিযুদ্ধ। সেক্ষেত্রে মানসম্মত পরীক্ষা কার্যক্রমও অত্যন্ত জরুরী। বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়।
সম্পাদকীয়তে আরও জানা যায়, গুচ্ছ পরীক্ষা নিয়ে মতদ্বৈততার কারণে বাংলাদেশের প্রধান কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মেধা ও মনন যাচাইয়ের তীর্থ কেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুয়েট গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন সংখ্যা মাত্র ৬০ হাজার। মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতে পারবে ৩ হাজার। বাকিদের অন্যান্য সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারী কলেজ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ থাকছে। সব মিলিয়ে আসন সংখ্যাটা ১৩ লাখের ওপরে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য করোনাকালেও শিক্ষার্থীদের দৌড়ঝাঁপ করতে হবে ব্যাপকভাবে। সময়, অর্থ, শ্রম অপচয় ছাড়াও করোনা সংক্রমণের আশঙ্কাকে কোন ভাবেই উড়িয়ে দেয়া যায় না। সঙ্গত কারণেই শিক্ষার্থীরাও ভর্তির প্রাসঙ্গিক কার্যক্রম নিয়ে যেমন চিন্তিত, একইভাবে পছন্দের বিষয় প্রাপ্তির ব্যাপারেও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় সময় পার করছে। কুয়েট, রুয়েট ও চুয়েট গুচ্ছ পরীক্ষার মাধ্যমে পরীক্ষার্থীর যোগ্যতা যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সবচেয়ে বিব্রতকর অবস্থায় আছে বিজ্ঞানের ছাত্রছাত্রীরা। যারা প্রকৌশল কিংবা মানসম্মত বিজ্ঞান বিষয় নিয়ে উচ্চ শিক্ষায় অনুপ্রবেশের আশায় অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকে বরাবরই।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও পড়বে বিপন্নতায়। কারণ এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৬২ হাজার। সামান্য পিছিয়ে পড়া পরীক্ষার্থীদের অবস্থাও হবে অনাকাক্সিক্ষত। চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে প্রতিবারের মতো গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে। ফলে চিকিৎসক হতে আগ্রহীরাও মানসম্মত জিপিএ নিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হতে পারে। সব মিলিয়ে উচ্চ শিক্ষার প্রবেশ দ্বার এবার অনেক হিসাব-নিকাশ পাল্টে দিতে পারে অতীতের তুলনায়। পরবর্তীতে বেসরকারী ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া সরকারী, বেসরকারী কলেজ ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য অবারিত হতে পারে। গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়ার বিষয়টির বিকল্প কিছু হতে পারে না। এতে ছাত্রছাত্রীদের ভোগান্তি ও বিড়ম্বনা কমবে, অভিভাবকরাও অকারণে হয়রানি থেকে রেহাই পাবেন। সময় ও অর্থ সাশ্রয়ের ব্যাপারটিও আমলে নেয়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সচেতন দায়বদ্ধতা।