পেশার উন্নয়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় আট দফা অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বাংলাদেশ গ্রন্থাগার সমিতির নির্বাচন ‘মিতুল-লিটন-মহিউদ্দিন’ পরিষদের সভাপতি পদে লড়ছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন প্রফেসর ড. মো: নাসিরউদ্দিন মিতুল। আগামী ৩০শে ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই প্যানেলে মহাসচিব প্রার্থী মো: অহিদুল ইসলাম লিটন। তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লাইব্রেরিয়ান। তিনজন সহ-সভাপতি প্রার্থীরা হলেন, কাজী আব্দুল মাজেদ, ড. এম মিজানুর রহমান ও জেবউন নেছা।
নির্বাচনকে সামনে রেখে শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র অনলাইন জাতীয় পত্রিকা দৈনিকশিক্ষার সঙ্গে পেশার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন ড. মো: নাসির উদ্দিন মিতুল। ভোটারদের উদ্দেশ্যে তিনি আটদফা অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
দফাগুলো: ১. ‘গ্রন্থাগার ও তথ্যসেবা’ বিষয়ক একটি পৃথক মন্ত্রণালয় বা অন্য কোন মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি বিভাগ/অধিদপ্তর গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ২. গ্রন্থাগারিকতা পেশার ক্ষেত্রে ক্যাডার সার্ভিস প্রবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ৩. সকল পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গ্রন্থাগার পেশাজীবীদের স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের সমপদমর্যাদা নিশ্চিত করণে যথাযথ ভূমিকা রাখা হবে। ৪. জাতীয়করণকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের গ্রন্থাগার পেশাজীবীদের সরকারি চাকুরীতে আত্তীকরণের ক্ষেত্রে তাঁদের সম পদ, পদমর্যাদা ও বেতন গ্রেড নিশ্চিতকরণ এবং এ ক্ষেত্রে ইতোপূর্বে সৃষ্ট বৈষম্য দূরীকরণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ৫. গ্রন্থাগার পেশাজীবীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ও কর্মশালার আয়োজন করা এবং দেশের গ্রন্থাগারসমূহে তথ্য প্রযুক্তির আলোকে আধুনিকায়ন ও উন্নয়নে সহায়তা প্রদান করা হবে। ৬. সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ন্যায় দাখিল ও আলিম মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং সরকারি ও বেসরকারিপ্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে গ্রন্থাগার পেশাজীবীর পদ সৃষ্টি ও সৃষ্ঠপদে জনবল নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ৭. গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান বিষয়ের ডিগ্রীধারীদের ‘আইসিটি বিষয়ক শিক্ষক নিবন্ধন’ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগদান, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান বিষয় খোলার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ৮. ঊধংঃবৎহ খরনৎধৎরধহ -কে আন্তর্জাতিক মানে উন্নিত করা এবং উপাত্ত নিয়মিতভাবে প্রকাশের ব্যবস্থা করা হবে।
নাসির উদ্দিন মিতুল জানান, পেশার উৎকর্ষ সাধন, আধুনিকায়ন, পেশাজীবীদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় তিনি বদ্ধপরিকর। এ পেশায় এদেশে সর্বপ্রথম তিনি জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের মত একটি বৃহত্তম বিশ^বিদ্যালয়ের ডিন হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, হেড অব লাইব্রেরি এবং হেড অব ডিপার্টমেন্ট।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স ও ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে মাস্টার ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসাবে চাকুরি জীবন শুরু করেন। দেশি বিদেশি বিভিন্ন খ্যাতনামা জার্নালে প্রফেসর নাসিরের ৪৫টিরও অধিক গবেষণা প্রবন্ধ রয়েছে।
পেশাগত উন্নয়নে তিনি কিছু কাজকরেছে বলে দৈনিশিক্ষাকে জানান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন বিভাগ (গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিভাগ) চালুকরণ; এমএএস ও এমফিল প্রেগ্রাম চালুকরণ;
অন ক্যাম্পাস ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম চালু; নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন সায়েন্স (আইআইএস) চালুকরণ। এছাড়াও ১৬ বছর পরে ডিপ্লোমা শিক্ষা কার্যক্রমের সিলেবাসের আধুনিকিকরণ ও সেমিস্টার পদ্ধতির প্রবর্তন।