চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে এসে অপহরণের শিকার হন আবদুল করিম নামে চট্টগ্রাম কলেজের এক শিক্ষার্থী। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় ছাত্রলীগ কর্মী পরিচয় দেওয়া শহীদুল ইসলাম শহীদ ও তার দুই সহযোগী। খবর পেয়ে পুলিশের সহযোগিতায় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার এবং তিনজনকে আটক করেন।
শহীদুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক সংগঠন 'বিজয়'-এর কর্মী। আটকের পর তিনি নিজেকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি পরিচয় দেন। আটক অন্য দু'জন বহিরাগত। তাদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শহীদুল ইসলাম শহীদ শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে পছন্দ করতেন। ব্যক্তিগত সম্পর্কও তৈরি হয়েছিল। এক পর্যায়ে মনোমালিন্যে সে সম্পর্ক ভেঙে যায়। পরে মেয়েটি চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুল করিমের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। আব্দুল করিম মেয়েটির সঙ্গে দেখা করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে শহীদ ও তার দুই সহযোগী তাকে অপহরণ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলের পাশে লাল পাহাড়ের একটি বাসায় আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতনও করা হয়। তার কাছ থেকে মানিব্যাগ ও টাকা কেড়ে নেয় অপহরণকারীরা।
জানতে চাইলে ছাত্রলীগের 'বিজয়' পক্ষের এক নেতা প্রথমে শহীদুল নামে তাদের কোনো কর্মী নেই বলে দাবি করেন। পরে তিনি বলেন, 'বিষয়টি সমাধানের দিকে চলে গেছে। অপহৃত ওই ব্যক্তি থানায় কোনো মামলা করছে না। প্রক্টর স্যাররা বিষয়টির সমাধান করছেন।'
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, 'সে (শহীদুল) বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পোস্টের কেউ না। তাই সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। আইনবিরোধী কোনো কাজ করে থাকলে প্রশাসনের উচিত যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া।'
প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁঁইয়া বলেন, অপহরণকারী তিনজনকে জিরো পয়েন্ট পুলিশ ফাঁড়িতে আটক রাখা হয়েছে। তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য ডাকা হয়েছে। তারা কখনও এ ধরনের কাজ করবে না- লিখিত দিলে বিবেচনা করা হবে। না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।