চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) হিসাব নিয়ামক (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফরিদুল আলম চৌধুরীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের কর্মীদের হাতে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে চবি অফিসার সমিতি।
মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে ১০-১২ জন মিলে মো. ফরিদুল আলমকে মারধর করেন।
জানা যায়, যোহর নামাযের পর হিসাব নিয়ামকের কার্যালয়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা ঢুকে তাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। একপর্যায়ে তারা মো. ফরিদুল আলমকে টেনেহিঁচড়ে রুমের বাইরে নিয়ে এলে কয়েকজন সহকর্মী তাকে তাদের হাত থেকে ছাড়িয়ে নেন।
এসময় মারধরকারীরা তাকে জামাত-শিবিরের এজেন্ট, রাজাকার ও দালাল আখ্যায়িত করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেয়। লোকজন জড়ো হতে থাকলে মারধরকারীরা পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল মনছুরকে প্রধান করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে গোপনীয় শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার ফজলুল করিমকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া ও অফিসার সমিতির সভাপতি রশিদুল হায়দার চৌধুরী জাবেদ।
বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার সমিতির সভাপতি মো. রশিদুল হায়দার চৌধুরী জাবেদ বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই ছাত্রলীগের কর্মীরা প্রধান হিসাব নিয়ামক কর্মকর্তাকে মারধর করেছে। তিনি কোনো অপরাধ করে থাকলে এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিতে পারে। কিন্তু একজন সম্মানিত ব্যক্তির ওপর এভাবে হামলা করা উচিত হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার সমিতির সাধারণ সম্পাদক হামিদ হাসান নোমানী বলেন, প্রধান হিসাব নিয়ামককে মারধরের প্রতিবাদে ১৩ জানুয়ারি মানববন্ধন ও ১৪ জানুয়ারি অবস্থান ধর্মঘট পালন করবো আমরা।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, একটি ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। কারা এই ঘটনার সঙ্গে জাড়িত এবং কী উদ্দেশ্যে এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা খতিয়ে দেখছি। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও কথা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, ঘটনার বিষয়ে শুনেই আমরা তার কার্যালয়ে ছুটে যাই। তিনি একজন বয়স্ক মানুষ। মারধরে গুরুতর আহত না হলেও তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। উপাচার্য এ ঘটনায় অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছেন। তিনি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান বলেন, হিসাব নিয়ামক দফতরের কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৪ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।