ভরা পূর্ণিমা ঘিরে ইলিশে ইলিশে ভরপুর চাঁদপুর মাছঘাট। ইলিশের এই ভরা মৌসুমে আজ মঙ্গলবার চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাটে প্রচুর ইলিশের আনাগোনা। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চাঁদপুর মাছঘাটে নৌ ও সড়কপথে প্রায় ৫ হাজার মণ ইলিশ এই ঘাটে এসেছে। এতে অন্যান্য দিনের চেয়ে মণপ্রতি ইলিশ ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা কম দামে কেনাবেচা চলছে।
মৎস্য ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বড় বড় ট্রলারে করে ভোলার দৌলতখান, নোয়াখালীর হাতিয়া অঞ্চল থেকে এবং সড়কপথে ট্রাকে করে শত শত মণ ইলিশ এই মাছঘাটে এনে বিক্রি করছেন জেলেরা। এর ফলে এই মাছঘাটে মাছ রাখার জায়গা এমনকি হাঁটার জায়গাও মিলছে না। সারা দিন পুরো বাজার মাছ আর মানুষে সরগরম রয়েছে। একাধিক মৎস্য ব্যবসায়ী বলেন, এই মৌসুমে আজকেই সবচেয়ে বেশি ইলিশ এসেছে, যেটা সবাই ‘নামার ইলিশ’ (সাগর মোহনার ইলিশ) হিসেবে চেনেন। তবে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা ইলিশ তেমন একটা আসেনি।
আরও পড়ুন : দুর্গাপূজায় ভারতে যাচ্ছে ২ হাজার টনের বেশি ইলিশ
মৎস্য ব্যবসায়ী মো. আবদুল্লাহ বলেন, আজকে ভোলার দৌলতখান ও নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে প্রায় ৫ হাজার মণ ইলিশ এসেছে। তার মধ্যে এই ঘাটের সবচেয়ে বড় আড়তদার আবদুল মালেক খন্দকার একাই এনেছেন প্রায় ৬০০ মণ ইলিশ। এভাবে আরও বেশ কয়েকজন বড় ব্যবসায়ী ৩০০ থেকে ৪০০ মণ করে ইলিশ এনেছেন। এসব মাছ মাত্র ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা মণ (প্রতি কেজি ৪০০-৪২৫ টাকা) দরে জেলেদের কাছ থেকে কিনছেন আড়তদারেরা।
মৎস্য বণিক সমিতির সভাপতি আবদুল বারি মানিক জমাদার বলেন, এভাবে আরও কয়েক দিন ইলিশ এলে মাছ ব্যবসায়ীসহ ক্রেতা-বিক্রেতা ও জেলেদের হতাশা কেটে যাবে।
চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক আনিসুর রহমান বলেন, ইলিশ পরিভ্রমণশীল মাছ। বিশেষ করে অমাবস্যা ও পূর্ণিমা ঘিরে ইলিশ লোনাপানির সাগর মোহনা থেকে মিঠা পানির পদ্মা-মেঘনায় বিচরণ শুরু করে। তারা খাদ্য সংগ্রহের পাশাপাশি ডিম ছাড়ার জন্য নদী অঞ্চলে যাতায়াত করে। জেলেরা এ সময় কারেন্ট জাল ব্যবহার না করলে ইলিশ তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। এখন ইলিশ আসা শুরু করেছে। এটা আগামী অক্টোবর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে তাঁর আশা।