চাকুরি পরীক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হোক - দৈনিকশিক্ষা

চাকুরি পরীক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হোক

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বাংলাদেশে চাকুরি সোনার হরিণের চাইতেও অধিক কিছু বলিলে অত্যুক্তি হইবে না। পূর্বে জনগণ জনপ্রতিনিধিদের নিকট চাহিতেন টিউবওয়েল, ব্রিজ-কালভার্ট, রাস্তাঘাট নির্মাণ ইত্যাদি। এখন চাহিবার ও চাহিদার ধরন পালটাইয়া গিয়াছে। এমপি-মন্ত্রীদের নিকট সাধারণ মানুষ আজকাল নিজের বা নিজের ছেলেমেয়েদের জন্য চাহেন চাকুরি। কেননা লক্ষ লক্ষ তরুণ-তরুণী আজ বেকার। করোনাকালে এই বেকারত্বের মিছিল আরো বাড়িয়াছে। এই সময়ে কর্মসংস্থানের গতি শ্লথ থাকায় নূতন করিয়া বেকার হইয়াছেন ৫৩ লক্ষ মানুষ। রোববার (১০ অক্টোবর) ইত্তেফাক পত্রিকায় পত্রিকায় প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়।

সম্পাদকীয়তে আরও জানা যায়, এই পরিপ্রেক্ষিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করিবার নির্দেশ দিয়াছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই অনুযায়ী নিয়োগ পরীক্ষার ধুম পড়িয়া গিয়াছে। অর্থনীতিকে আবার চাঙ্গা ও গতিশীল করিতে নিশ্চয়ই ইহা একটি ভালো উদ্যোগ; কিন্তু একই দিনে যদি ১৪টি চাকুরির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, তাহা হইলে চাকুরিপ্রার্থীরা কোথায় যাইবেন? কোনটি ছাড়িয়া কোনটিতে অংশগ্রহণ করিবেন? কেননা, একই প্রার্থী একাধিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করিয়াছেন। তাহাদের পক্ষে একই দিনে অনেক ক্ষেত্রে একই সময়ে একাধিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা মোটেও সম্ভব নহে। ইহাতে তাহারা যে বিপাকে পড়িয়াছেন এবং তাহাদের অর্থ ও শ্রম নষ্ট হইতেছে, তাহাতে তাহারা বিরক্ত, হতাশ ও ক্ষুব্ধও বটে। ইহাতে তাহাদের অভিভাবকেরাও যে অসন্তুষ্ট তাহাতে কোনো সন্দেহ নাই।  

বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষা সাধারণত সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার ও শনিবার গ্রহণ করা হয়। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। কেননা, এই দুই দিন অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তেমন কোনো ক্লাস-পরীক্ষা থাকে না। যেহেতু করোনাকালে অনেক নিয়োগ পরীক্ষা ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল, তাই করোনার প্রকোপ কমিতেই এই ধরনের পরীক্ষা নেওয়ার চাপ বাড়িয়া গিয়াছে; কিন্তু একই দিনে একজন প্রার্থীকে যাহাতে একাধিক পরীক্ষায় অংশ নিতে না হয়, এই বিষয়টি বলিতে গেলে এতদিন উপেক্ষিত থাকিয়া গিয়াছে। যদিও কেন্দ্রীয়ভাবে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নাই যে ইহা দেখভাল করিবে, পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণে সতর্কতা অবলম্বন করিবে। গত শুক্রবার যে ১৪টি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করে, তাহার মধ্যে ছিল সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ (সিএএবি), বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, সাধারণ বিমা করপোরেশন, বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল), বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, বাংলাদেশ বিদ্যুত্ উন্নয়ন বোর্ড প্রভৃতি। শুধু তাহাই নহে, গত ১৭ সেপ্টেম্বর ২১টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করিয়াছিল। ইহাতে চাকুরিপ্রার্থীরা বড় ধরনের বিড়ম্বনা ও দুর্ভোগের শিকার হন। যদিও সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাসমূহের তারিখ নির্ধারণ একক কাহারো দ্বারা হয় না।

তবে চাকুরিপ্রার্থীদের এই ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই অনুধাবন করিতে পারিতেছেন। বিশেষ করিয়া চাকুরিপ্রার্থীরা এক একটি নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন করিতে ৩০০ হইতে ১০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ করিয়া থাকেন; কিন্তু সকল পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারিবার কারণে তাহাদের চাকুরি পাইবার সুযোগ কমিয়া আসে। ইহাতে তাহাদের অধিকার ক্ষুণ্ন হয়। কারণ সেই অর্থ তো আর ফেরত দেওয়া হইতেছে না। ইহাতে তাহাদের কী ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া হইতেছে তাহা সহজেই অনুমেয়। লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত ও তরুণ বেকারের সুযোগ-সুবিধার কথা আমাদের অবশ্যই ভাবিতে হইবে। আমরা আশা করিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট যাহারা আছেন, বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণ করিয়া কার্যকর পদক্ষেপ লইবেন। ইতিমধ্যে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান বলিয়াছেন যে, যতদিন এই ধরনের পরীক্ষার চাপ থাকিবে, ততদিন তাহারা শুক্রবার ও শনিবার কোনো পরীক্ষা নিবেন না। এই জন্য নন-ক্যাডার পরীক্ষাসমূহের তারিখ পরিবর্তন করা হইয়াছে। অন্যান্য নিয়োগ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলিও অবস্থা বুঝিয়া ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারেন। এই ব্যাপারে একটি কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ গঠন করা যায় কি না, তাহাও ভাবিয়া দেখিতে হইবে। আশা করা যায়, আমাদের এই পর্যালোচনা উলুবনে মুক্তা ছড়াইবার মতো বৃথা যাইবে না।

এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039730072021484