চার বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব, বাকিগুলোতে গুচ্ছেই ভর্তি - দৈনিকশিক্ষা

একক পরীক্ষা নিয়ে এখনো শঙ্কাচার বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব, বাকিগুলোতে গুচ্ছেই ভর্তি

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

চলতি বছর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১০ লাখ ৬৭ হাজার শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে কীভাবে বা কোন পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন হবে সে বিষয়ে এখনো তারা ধোঁয়াশায়। কারণ এতোদিন ধরে একক পরীক্ষার মাধ্যমে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যে আলোচনা চলছিলো তার কোনো সুরাহা হয়নি। 

ফল প্রকাশের পরদিন গতকাল সোমবার বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বিশ্ববিদ্যালয় অধিশাখা এবং ইউজিসির ঊর্ধ্বতন কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি শিক্ষাবর্ষে একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারাও। 

গত কয়েকমাসের ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে আলোচনা করে একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলো দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তদারক সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি (এনটিএ) গঠন করে এ পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্তে এসেছিলো। তবে অথরিটি গঠনের আগে চলতি শিক্ষাবর্ষে একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে একটি অধ্যাদেশ জারির সুপারিশ করেছিলো ইউজিসি। 

কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন অধ্যাদেশ জারি বা তা জারি করার প্রস্তাব পাঠানোর সময় না। নির্বাচনের পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদের এনটিএ গঠনের আইন হলে একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা যাবে। মন্ত্রণালয়ের মতে, চলতি শিক্ষাবর্ষের মতো গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা চলবে এবারও। 

ইউজিসিও বলছে, রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ এবং এনটিএ গঠন হওয়ার আগে একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে গতবারের মতোই গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে। তবে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের মতো করে ভর্তি পরীক্ষা নেবে। 

এর আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সভাপতিত্বে ইউজিসিতে আয়োজিত এক সভায় দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে একক পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ জন্য ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি বা এনটিএ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। ইউজিসি এ কর্তৃপক্ষ গঠনের উদ্যোগ নেবে বলেও জানানো হয়েছিলো তখন। তারই ধারাবাহিকতায় গত জুলাই মাসে একক ভর্তি পরীক্ষা নিতে ইউজিসি চেয়ারম্যানকে আহ্বায়ক করে ১৫ সদস্যের উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হয়। গত অক্টোবরে ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে একক পরীক্ষা আয়োজন বিষয়ে দ্রুত একটি অধ্যাদেশ জারির সুপারিশ করে ওই কমিটি। অধ্যাদেশের একটি খসড়া রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব আকারে পাঠানো হয়।  

কমিটি বলছে, দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে একক আওতাভুক্ত করে ভর্তি পরীক্ষা গ্ৰহণের জন্য একটি অধ্যাদেশ জারি করা প্রয়োজন। ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি (এনটিএ) গঠনের আগ পর্যন্ত এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় আইনে যাই থাকুক না কেনো এ অধ্যাদেশ প্রাধান্য পাবে।

ওই অধ্যাদেশ জারির প্রস্তাবের ভাগ্যে কি জুটলো তা জানতে চাইলে গতকাল সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবু ইউসুফ মিয়া দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, এখন কি অধ্যাদেশ জারির সময়। দেশে তো জরুরি অবস্থা চলছে না যে অধ্যাদেশ জারি করতে হবে।

চলতি শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা তবে কী পদ্ধতিতে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এনটিএ গঠনের জন্য আইন প্রণয়ন করতে হবে। নির্বাচনের পর সংসদ গঠিত হলে এ অথরিটি গঠনের আইন হতে পারে। আর তার আগ পর্যন্ত আগের নিয়মেই ভর্তি চলবে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থাকা সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর গতকাল সোমবার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, রাষ্ট্রের পরিস্থিতি বিবেচনায় রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করতেই পারেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরামর্শেই আমরা একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সে অনুযায়ী অধ্যাদেশ জারির সুপারিশ করেছিলাম। দ্রুততম সময়ে কাজ শেষ করে খসড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিলো। তবে তারা যদি এখন এমনটা বলেন….।

এনটিএ গঠন বা অধ্যাদেশ জারি না হলে চলতি শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কী উপায়ে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যদি তা না-ই হয় তবে আগের মতো গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। 

ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছভুক্ত হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা যদি গুচ্ছে আসতো তাহলে আর এনটিএ গঠন বা একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে ভাবতেই হতো না।

গত ২২ মে দৈনিক আমাদের বার্তার সঙ্গে আলাপকালে একক ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, সব পক্ষ আন্তরিক হলে একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন সম্ভব। সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে ভর্তি পরীক্ষা হলে স্বল্প সময়ের মধ্যে পাঠদান শুরু করা যাবে। একক ভর্তি পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করা গেলে সবার কাছে এটি গ্রহণযোগ্যতা পাবে। একক ভর্তি পরীক্ষার সফলতা উচ্চশিক্ষায় বিশাল একটি অর্জন হবে। 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষা ডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ - dainik shiksha অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র - dainik shiksha ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে - dainik shiksha ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! - dainik shiksha ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল - dainik shiksha জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037012100219727